শনিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১৬, ১০:৪০:৩৫

পা হারানো যুবকের সামনে এগিয়ে চলার গল্প

পা হারানো যুবকের সামনে এগিয়ে চলার গল্প

নিউজ ডেস্ক : ফরিদ বিশ্বাস একজন টগবগে যুবক। তার বাহুতে শক্তি, মনে সাহস আর চোখে উচ্চাভিলাষী স্বপ্ন। পরিবারে সুখশান্তি আর ছেলেমেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করার স্বপ্নে বিভোর তিনি। সে স্বপ্ন পূরণে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার মথুরাপুর গ্রাম থেকে পাড়ি জমান ঢাকায়। পেশা হিসেবে বেছে নেন টেম্পো চালানো। ভালোই চলছিল তার দিন।

হঠাৎ একদিন তার সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেয় ট্রাক। ট্রাকের ধাক্কায় একটি পা হারান তিনি। চিকিৎসা করাতে গিয়ে আবার নিঃস্ব হয়ে যান। জাপটে ধরে হতাশা আর অভাব। কিন্তু তিনি দমে যাওয়ার পাত্র নন। নেমে পড়েন ব্যবসায়। ব্যবসা বলতে ভ্যানে করে বিভিন্ন স্থানে গিয়ে সিঙ্গারা, ফুসকা, পুরি ও বাদাম বিক্রি করা। এ থেকে যে আয় হয়, তা দিয়ে ভালোমতোই চলছে তার সংসার।

মথুরাপুর বাজারে চেয়ার-টেবিল পেতে একটি চুলা জ্বালিয়ে সিঙ্গাড়া, চপ আর পুরি বানিয়ে বিক্রি করছিলেন তিনি। তাকে সাহায্য করেন তার বাবা আর মেয়ে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ুয়া সোনিয়া। কাজের ফাঁকে তিনি জানান, ঢাকায় টেম্পো চালিয়ে প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা আয় হতো। এ টাকা দিয়ে ভালোই চলছিল সংসার। ছিল না অভাব।

‘১৯৯৬ সালে ট্রাকের ধাক্কায় আমার একটি পা হারিয়ে ফেলি। এরপর আমি বেকার। সংসারে নেমে আসে অভাবের কালো ছায়া। দুর্বিষহ হয়ে ওঠে জীবন। বাড়িতে বসে ভাবতে থাকি অভাব দূর করার কথা।কারও কাছে হাত পেতে কিছু নেয়া অপমানবোধ মনে হয়। অনেক ভাবনার পর একটি ভ্যানগাড়ি কিনে শুরু করি ফুসকা, চটপটি, সিঙ্গারা বিক্রির ব্যবসা। আমাকে সহযোগিতা করেন বাবা ও মেয়ে। প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় হয়। এ অর্থ দিয়েই এখন আমার দিন চলছে। বাবা-মা, স্ত্রী আর সন্তানদের নিয়ে এখন সুখেই আছি। সংসার চালানোর পর সন্তানদের লেখাপড়া শিখাচ্ছি। বড় মেয়ে তানিয়া অষ্টম শ্রেণী, ছোট মেয়ে পঞ্চম শ্রেণী ও একমাত্র ছেলে প্রথম শ্রেণীতে পড়ছে। ছেলেমেয়েরা উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হবে এটাই আমার স্বপ্ন।’
৩০ জানুয়ারি ২০১৬ এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসএম/ডিআরএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে