সোমবার, ০১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০২:৩৬:২১

জাপার বৈঠক: সরকার ছাড়ার বিষয়ে ঐকমত্য!

জাপার বৈঠক: সরকার ছাড়ার বিষয়ে ঐকমত্য!

নিউজ ডেস্ক : 'অস্পষ্টতা' দূর করার চেষ্টায় থাকা জাতীয় পার্টির এরশাদপন্থী অংশের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা বৈঠক করে মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে আসার বিষয়ে একমত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের।

তিনি বলেছেন, 'মিটিংয়ে যারা উপস্থিত ছিলেন, তারা সবাই মতামত দিয়েছেন, রাজনীতির স্বার্থে বেরিয়ে আসাটা অত্যন্ত জরুরি। মাননীয় চেয়ারম্যানের নির্দেশনা অনুযায়ী পরে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে।'

পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদসহ তার সমর্থক ২৪ জন প্রেসিডিয়াম সদস্য বনানীর কার্যালয়ে এই বৈঠকে উপস্থিত থাকলেও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদসহ বাকি ১৩ সদস্য সভায় যাননি।

রোববার বেলা ১১টা ৪০ থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা এই বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সামনে আসেন এরশাদের ভাই জিএম কাদের, যাকে কো-চেয়ারম্যান নিয়োগ করায় সম্প্রতি দলে নতুন করে বিদ্রোহের মুখে পড়েন সাবেক সামরিক শাসক এরশাদ।

এরশাদের স্ত্রী রওশন ছাড়াও পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গাসহ সম্প্রতি মহাসচিবের পদ থেকে ছিটকে পড়া জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ, তাজুল ইসলাম চৌধুরী ও কাজী ফিরোজ রশিদের মতো জ্যেষ্ঠ প্রেসিডিয়াম সদস্যরা বৈঠকে ছিলেন না।

বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, সভায় জাপার ৩৪ জন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যের মধ্যে ২৪ জন উপস্থিত ছিলেন। তারা নতুন কো-চেয়ারম্যান ও মহাসচিবকে অভিনন্দন
জানান। আগামী ১৬ এপ্রিল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় পার্টির জাতীয় সম্মেলন হবে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলাভিত্তিক মনিটরিং সেল গঠন করা হবে। এরপর জেলা ও উপজেলা সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে ঢাকায় সভা করা হবে।

রওশন এরশাদ ও দলের মন্ত্রীদের অনুপস্থিতির কারণ কী জানতে চাইলে জিএম কাদের বলেন, '৩৪ জন সদস্যের মধ্যে ২৪ জন এসেছেন। রওশন এরশাদের নিজস্ব কর্মসূচি থাকায় তিনি আসতে পারেননি। অনেকে বিভিন্ন কারণে আসতে পারেননি। এতে বিভেদ বোঝায় না। এরশাদ যেদিকে আছেন, দলও সেদিকে আছে। রওশনও এর বাইরে আছেন, তেমন কথা কখনো বলেননি।'

জাতীয় পার্টির একজন সাংসদ কিশোরগঞ্জে বলেছেন, সরকারে থেকে জাতীয় পার্টি সুসংগঠিত হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে জিএম কাদের বলেন, 'এটা তার ব্যক্তিগত মত। জাতীয় পার্টির মূল শক্তি হচ্ছে জনগণ।' এর আগে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলী শেষবার বৈঠকে বসে, যাতে রওশনও উপস্থিত ছিলেন।

ওই নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে নাটকীয়তার এক পর্যায়ে এরশাদ বিএনপির মতোই ভোট বর্জনের ঘোষণা দিলে দলের একাংশ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। তাদের মধ্যে জিএম কাদেরও ছিলেন। বর্জন করেও এরশাদ আইনের মারপ্যাঁচে ভোটে জিতে যান। জাতীয় পার্টি সংসদের বিরোধী দল হয়, এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদ হন বিরোধীদলীয় নেতা।

এরপর বিভিন্ন সময় জাতীয় পার্টির সদস্যদের মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে আসার বিষয়টি আলোচনায় এলেও জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের আপত্তির কারণে তা ধোপে টেকেনি_ এমন খবর এসেছে গণমাধ্যমে।

রওশনপন্থীদের বিরোধিতার মধ্যেই সম্প্রতি এরশাদ নিজের ভাই জিএম কাদেরকে পার্টির কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেন, মহাসচিব পদে ফিরিয়ে আনেন দীর্ঘদিনের আস্থাভাজন রুহুল আমিন হাওলাদারকে। এ নিয়ে দলে বিদ্রোহের মধ্যেও এরশাদ বলেন, তিনি তার সিদ্ধান্তে মৃত্যু পর্যন্ত অটল থাকবেন।

গত ২৬ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে সাবেক মন্ত্রী জিএম কাদের বলেন, 'জাতীয় পার্টির অবস্থান জনগণের কাছে অস্পষ্ট। কারণ জাতীয় পার্টি একদিকে বিরোধী দল, আবার অন্যদিকে সরকারের মন্ত্রিসভায় আছে।' অন্যদিকে দশম সংসদের দুই বছর পূর্তির আগের দিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে রওশন সাফ জানিয়ে দেন, তারা সরকারেই থাকছেন। যায়যায়দিন
০১ ফেব্রুয়ারী,২০১৬/এমটিনিউজ/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে