নিউজ ডেস্ক : এবার দেশ ত্যাগ করলেন জামায়াতের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মুহাম্মদ মুনির। তিনি বেশ কিছুদিন আগে দেশে ছেড়ে মার্কিন যু্ক্তরাষ্ট্রে চলে গেলেও তা জানা গেল অনেক পরে।
জানা যায়, গত ৮ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে মাওলানা নিজামীর আপিল শুনানির দুদিন পর ১০ ডিসেম্বর দেশ ছাড়েন শিশির মুনির। বর্তমানে তিনি নিউইয়র্কে তার আমেরিকান-বাংলাদেশি বাবা-মায়ের সঙ্গে বসবাস করছেন।
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত নেতাদের পক্ষের আইনজীবী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন ছাত্র শিবিরের এই সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল।
এর আগে এই আইনজীবী দলের প্রধান ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকও দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান।
২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের পর দেশ ছাড়ার পর থেকে ব্যারিস্টার রাজ্জাক নির্বাসিত জীবন পার করছেন। তিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
এই ঘটনার প্রায় তিন বছর পর গত ২২ অক্টোবর সিরাজগঞ্জের যমুনার সেতুর পশ্চিম পাড়ের কড্ডার মোড়ে যাত্রীবাহী বাস থেকে নামিয়ে জামায়াতের আইনজীবী দলের সদস্য আসাদ উদ্দিনকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়।
আসাদের স্বজনরা জানিয়েছিলেন, তিনি গত ২২ অক্টেবর বেলা আড়াইটার দিকে ঢাকা থেকে ন্যাশনাল ট্রাভেলসের একটি বাসে গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার নাইমুড়িতে যাচ্ছিলেন। পথে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম সড়কের সয়দাবাদ এলাকায় ট্রাফিক সিগনালে গাড়ি থামিয়ে সাদা পোশাকে ডিবি পরিচয়ে ৫-৭ জন তাকে নামিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।
একই দিন শিশির মুনিরকে ধরার জন্য তার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসায় দুই দফা অভিযানের পর তার গাড়ি চালক আবদুল আজিজকে ডিবি পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। এই ঘটনার পরপরই শিশির মুনির আত্মগোপনে চলে যান।
আত্মগোপনে যাওয়ার আগে গত ১৪ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে জামায়াত সেক্রেটারি আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের পক্ষে সুপ্রীম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিভিউ চেয়ে আবেদন করেছিলেন শিশির মুনির।
এদিকে অ্যাডভোকেট আসাদকে গ্রেফতারের বিষয়টি প্রথমে অস্বীকার করলেও দুদিন পরে ডিবি পুলিশ দাবি করে তারা আসাদকে ২৪ অক্টোবর রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন আসাদগেটের সেভেন সেভেন রেস্টুরেন্ট থেকে গ্রেফতার করেছে। সেখানে আসাদ ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া বানচাল করার জন্য শলাপরামর্শ’ করছিলেন বলে দাবি ডিবির।
পরদিন ২৫ অক্টোবর আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আদালতে আসাদ ও শিশিরের নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করে জামায়াতের আইনজীবী দল।
আবেদনে দুই আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মুনির ও অ্যাডভোকেট আসাদ উদ্দিন আদালতে উপস্থিত থেকে যাতে মাওলানা নিজামী ও মুজাহিদের মামলা পরিচালনায় যথাযথ সহায়তা প্রদান করতে পারেন এবং সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে যেন তাদেরকে কোনো হয়রানি না করা হয়- সে ব্যাপারে আদালতের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
এদিকে শিশির দেশ ছেড়ে গেলেও বর্তমানে তিনি ফেসবুকে সক্রিয় আছেন। তিনি সহসা দেশে ফিরছেন না বরং যুক্তরাষ্ট্রে আইন বিষয়ক উচ্চতর পড়াশোনা করবেন- বলছেন তার ঘনিষ্ঠজনরা।
১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসএম/ডিআরএ