ঢাকা : জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সভায় এরশাদপন্থীদের নেয়া মন্ত্রিসভা ছাড়ার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে রওশনপন্থীরা বলেছেন, এই সভা অবৈধ। সরকার ছাড়ার প্রশ্নই ওঠে না।
রওশনপন্থীদের অনুপস্থিতিতে রোববার দুপুরে এরশাদের বনানী কার্যালয়ে প্রেসিডিয়ামের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদপন্থীরা মন্ত্রিসভা ছাড়ার বিষয়ে মত দেয়। এ ছাড়াও বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় আগামী ১৬ এপ্রিল হবে জাপার কাউন্সিল।
ওই বৈঠকের প্রেক্ষিতে সন্ধ্যায় রওশনপন্থীরা প্রেসিডিয়াম সভার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে বলেন, এই সভা অবৈধ। সরকার ছাড়ার প্রশ্নই ওঠে না।
রোববার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদে নিজ কার্যালয়ে রওশন এরশাদ সাংবাদিকদের বলেন, সভার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। প্রেসিডিয়ামের সভায় কী সিদ্ধান্ত হয়েছে- তা দলীয়ভাবে জানার পর প্রতিক্রিয়া জানাবো।
রোববার দুপুরে এরশাদের বনানী কার্যালয়ে প্রেসিডিয়ামের সভা অনুষ্ঠিত হয়। ৩৭ প্রেসিডিয়াম সদস্যের ২৪ জন সভায় যোগ দেন। রওশন এরশাদ এবং জাপার মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-এমপিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন না।জাপার ৪০ এমপির ১৩ জন প্রেসিডিয়ামের সদস্য। তাদের মাত্র দুই জন সভায় উপস্থিত ছিলেন।
রওশনপন্থীদের অনুপস্থিতি সম্পর্কে এরশাদ নিযুক্ত দলের কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, বিরোধীদলীয় নেতার পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি থাকায় সভায় যোগ দিতে পারেননি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, প্রেসিডিয়াম সদস্যরা সরকার ছাড়তে একমত হয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সভায় যারা উপস্থিত ছিলেন, তারা সবাই মতামত দিয়েছেন রাজনীতির স্বার্থে মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে আসাটা অত্যন্ত জরুরি। চেয়ারম্যানের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তীতে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে।’
মাত্র চার ঘণ্টা পর জিএম কাদেরের উল্টা বক্তব্য দেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও পানি সম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
তিনি সংসদের লবিতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রেসিডিয়াম সভার নামে যে বৈঠক হয়েছে তা অবৈধ। বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে তার আইনি ভিত্তি নেই। এগুলো কার্যকর হবে না। মন্ত্রিসভা ছাড়ার প্রশ্নই ওঠে না।’
তার বক্তব্যের জবাবে জাপা মহাসচিব এবিএম রহুল আমীন হাওলাদার বলেন, ‘ব্যক্তিগত মতামতে দল চলে না। আইনজীবী হিসেবে আনিসুল ইসলামে জানা উচিত দল চলে গঠনতন্ত্রে। প্রেসিডিয়াম দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম। সভার প্রত্যেক সদস্যের কাছে দলের চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত সমাদৃত হয়েছে।’
গত ১৭ জানুয়ারি জিএম কাদেরকে দলের কো-চেয়ারম্যান নিয়োগ করে রওশপন্থীদের বিরোধিতার মুখে পড়েন এরশাদ। তারা রওশনকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন।
এতে ক্ষিপ্ত এরশাদ জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুকে মহাসচিবের পদ থেকে সরিয়ে রহুল আমিন হাওলাদারকে এই পদে ফিরিয়ে আনেন।
রওশনপন্থীদের দাবি, জিএম কাদের ও হাওলাদারের নিয়োগ বাতিল করতে হবে। গত ২৩ জানুয়ারি রওশন এক বিবৃতিতেও একই দাবি করেন। পরের দিন রওশনকে চিঠিতে এরশাদ জানান, সিদ্ধান্ত বদল হবে না।
এদিকে, রোববার প্রায় ২৬ মাস পর জাপার প্রেসিডিয়ামের এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসএম/ডিআরএ