মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর, ২০২৩, ১১:২৫:৫৭

একজন বিয়ে করবে, একজন টেক্সি ও আরেকজন জমি কিনবে!

একজন বিয়ে করবে, একজন টেক্সি ও আরেকজন জমি কিনবে!

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : এক বছর আগে ধরা পড়েছিল তারা তিনজন। ছিনতাইয়ের সেই মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে এসে ছিনতাইয়ের বদ মতলব মাথায় চাপে। ছিনতাইকৃত অর্থে বিয়ের খরচ যোগাতে চেয়েছিল একজন। দ্বিতীয়জন চেয়েছিল একটি গ্রাম সিএনজি টেক্সি কিনবে। তৃতীয়জনের ইচ্ছে, গ্রামে এক টুকরা জমি কেনার। তবে তিনজনেই একটি বিষয়ে একমত, ছিনতাইকৃত টাকার একটি অংশ খরচ করবে মামলা চালাতে। সেই অনুযায়ী আদালতে বসেই আরেকটি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে তারা। পরিকল্পনা অনুযায়ী পরদিন ওত পাতে নগরীর পাহাড়তলী এলাকায়। পেনশনের টাকা তুলে নামার সময় ছোঁ মেরে এক ব্যক্তির প্রায় ১৫ লাখ টাকা নিয়ে যায়।

গত শনিবার এ ঘটনায় জড়িত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের ১১ লাখ ৩০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সিএমপির গোয়েন্দা শাখার উপকমিশনার (পশ্চিম ও বন্দর) মো. আলী হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার তিনজন হলো নুরুল হক সজিব (৩৩), মো. মহিউদ্দিন (৪২) ও মো. রায়হান (২৮)। নগরীর বিভিন্ন থানায় অস্ত্র ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে সজিবের বিরুদ্ধে আটটি, রায়হানের বিরুদ্ধে চারটি ও মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে ভোলায় ছয়টি মামলা আছে।

জানা যায়, ১৮ সেপ্টেম্বর রুহুল আমিন নামে অবসরে যাওয়া রেলওয়ের এক কর্মকর্তা স্ত্রীকে নিয়ে পেনশনের টাকা তুলতে নগরীর পাহাড়তলীতে ইসলামী ব্যাংকের একটি শাখায় যান। পেনশনের ১৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা তুলে তিনি বাজারের থলে নেন। থলে ভর্তি টাকা নিয়ে তিনি যখন ব্যাংক থেকে বের হন, তখন একটি সিএনজি টেক্সিযোগে তিনজন ছোঁ মেরে সেটি ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় তিনি পাহাড়তলী থানায় মামলা করেন।

ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা প্রায় ৪০টি সিসিটিভি ফুটেজ এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ছিনতাইয়ে জড়িত তিনজনকে শনাক্ত করা হয়। এরপর মহিউদ্দিনের অবস্থান শনাক্ত করে প্রথমে তাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার তথ্যে সজিব ও রায়হানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ছিনতাই করা ১১ লাখ ৩০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে সজিবের কাছ থেকে ৯ লাখ, মহিউদ্দিনের কাছ থেকে ২ লাখ ও রায়হানের কাছ থেকে থেকে ৩০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

রায়হানের বিয়ে আগামী ৫ অক্টোবর। ভাগে পাওয়া ছিনতাইয়ের টাকা দিয়ে সে বিয়ের কেনাকেটা করেছে বলে জানিয়েছে। মহিউদ্দিন একটি গ্রাম সিএনজি কিনবে বলে কিছু টাকা অগ্রিম দিয়েছে। আর সজিব তার গ্রামের বাড়িতে জমি কেনার বায়নানামা করেছে।

গ্রেপ্তার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা কর্মকর্তা আলী হোসেন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাই চক্রের সদস্য বলে জানিয়েছে। তাদের নেতা সজিব। ছিনতাইয়ের জন্য সিএনজি টেক্সি যোগাড় করেছে সজিব। এক বছর আগেও ছিনতাইয়ের অপরাধে তাদের গ্রেপ্তার করেছিল সিএমপির ডিবি। সেই মামলায় ১৭ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজিরা দিতে এসে আবারও তারা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে।

ডিবির পুলিশ পরিদর্শক মো. হারুন অর রশিদ জানান, ছিনতাইয়ের ঘটনায় পাহাড়তলী থানায় একটি মামলা হয়। এরপর প্রযুক্তির ব্যবহার করে আসামিদের গ্রেপ্তার ও লুণ্ঠিত ১১ লাখ ৩০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। বাকি টাকাগুলো উদ্ধার করতে ডিবির অভিযান অব্যাহত আছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে