এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আবারও ইলিশে সরগরম হয়ে উঠেছে চাঁদপুরে মেঘনা নদীর তীরে মৎস্য আড়ৎগুলো। জেলেদের আহরিত ইলিশ ও বিভিন্ন মাছ বোঝাই করে নৌকা ও ট্রলার নিয়ে আসছে ইলিশের বাণিজ্যিক বন্দর খ্যাত চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাটে।
শনিবার ভোর থেকে হাঁকডাকে আবারও মুখর হয়ে উঠেছে নদীর পাড়ের মৎস্য আড়ৎ ও চাঁদপুর ইলিশ অবতরণ কেন্দ্র। আড়ৎদাররা জেলে ও বেপারিদের নিয়ে আসা ইলিশগুলো স্তুপ করে সাজাচ্ছেন। পাইকার ডাক উঠানোর পরে খুচরা ও পাইকারি ক্রেতারা এসব ইলিশ ক্রয় করছেন। এতে ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে। একইসঙ্গে কিছুটা কমেছে দামও।
ব্যবসায়ীরা জানান, নিষেধাজ্ঞার পর ইলিশ আহরণ শুরু হওয়ায় ২য় দিনে চাঁদপুর শহরের বড়স্টেশন মাছঘাটে প্রায় এক হাজার মণ মাছ এসেছে এ ঘাটে। তবে এসব মাছ আগের স্টক করা।
অভিযানের আগে যে দাম তার থেকে পাইকারি বাজারে ইলিশের দাম আকারভেদে প্রতি মণে ৮ হাজার টাকা কমেছে। অর্থাৎ কেজি প্রতি ২শ টাকা করে দাম কমেছে।
বর্তমানে এখানে পাইকারি মূল্যে ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি মণ ১৫-১৬ হাজার টাকা। যার প্রতি কেজি ৪০০ টাকা। ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি মণ ২২-২৩ হাজার টাকা।
যার প্রতি কেজি সাড়ে ৫৫০-৬০০ টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি মণ ৩৫-৩৬ হাজার টাকা। যার প্রতি কেজি ৯০০ টাকা। ৯০০ থেকে এক কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি মণ ৫২ হাজার টাকা। যার প্রতি কেজি ১৩০০ টাকা।
সুলতান মাহমুদুল হাসান নামে এক ক্রেতা জানান, মাছের দাম স্বাভাবিক। তবে যে রকম দাম কমার কথা ছিল। সেরকম মাছের দাম কমেনি।
শামীম নামে আরেক ক্রেতা জানান, অভিযানের আগের চেয়ে মাছের দাম এখন কিছুটা কম। আমি কয়েক কেজি মাছ কিনেছি। তবে মাছের সাইজ অনেকটা ছোট। এগুলো চাঁদপুরের পদ্মা মেঘনা নদীর মাছের মতো দেখা যাচ্ছে না। শরীফ নামে এক ক্রেতা জানান, আগের তুলনায় মাছের দাম অনেকটা কম আছে।
ইলিশ ব্যবসায়ী জসিম ও হিরা জানান, এখন মাছের রেট অনেক কমে গেছে। গেল মৌসুমে বড় সাইজের এক কেজি ওজনের মাছের দাম ছিল ১৬০০ টাকা। এক কেজি ওজনের মাছের ১৩০০ টাকা। প্রতি কেজিতে ২ থেকে আড়াই শত টাকা কমেছে। মাছ কম থাকলে দাম বেড়ে যায়।
খালেক নামে এক ইলিশ আড়ৎদার জানান, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর মাছের দাম এখনও কমেনি। এখানকার মাছ খুবই কম আসে। প্রতি মণ ৬৫-৬৬ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
তার মানে প্রতি কেজি ১৫০০-১৬০০ টাকা। ৮০০-৯০০ গ্রামের প্রতি কেজি ইলিশ ১৪০০ টাকা। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা পর ঘাটে আসা ইলিশগুলো হচ্ছে আগের স্টক করা মাছ। এ মাছের সঙ্গে চাঁদপুরের নদীর মাছের তুলনা করা যাবে না।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত সরকার বলেন, বিগত ২২ দিন মা ইলিশের অভিযান ছিল। গতকাল থেকে আমরা মাছ বিক্রি শুরু করেছি।
এখন ইলিশের মৌসুম। গতবারের তুলনায় এবার ইলিশ খুবই কম। আজকের বাজারে প্রায় এক হাজার কেজি ইলিশ চাঁদপুর এসেছে। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর আগের তুলনায় প্রতি মণে দাম ৮ হাজার টাকা কমেছে।
অর্থাৎ কেজি প্রতি ২০০ টাকা করে দাম কমেছে। তবে আগামীকাল থেকে মাছ আরও কম আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দামও বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই মানুষ আর মাছ খাইতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, ইলিশ আল্লাহর দানের মাছ। আমার ধারণা হচ্ছে এ মাছের জন্য প্রচুর বৃষ্টি, জড়, তুফান প্রয়োজন হয়। এবার প্রথম মৌসুমে বৃষ্টি হয় নাই। যার এবার ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। গত বছর এ সময়ে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার মণ ইলিশ আসতো এ ঘাটে। এখন মাছ আগের তুলানায় অনেক কম আসে।