এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বাংলাদেশ থেকে বিদেশগামী যাত্রীদের জন্য বিমান টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি রোধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে সরকার। এ বিষয়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। সভায় বিমান টিকিটের মূল্যবৃদ্ধির পেছনে দায়ী চক্র ও তাদের অপকৌশল চিহ্নিত করে তা বন্ধে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় বিমান টিকিটের দাম বাড়ার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় নামবিহীন গ্রুপ সিট বুকিং ও টিকিট মজুতদার সিন্ডিকেটের কার্যক্রম।
ট্রাভেল এজেন্সিগুলো পাসপোর্ট, ভিসা বা যাত্রীর তথ্য ছাড়াই অগ্রিম আসন বুকিং করে রাখছে, ফলে কৃত্রিম সংকট তৈরি হচ্ছে এবং দাম বাড়ছে।
এছাড়া, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন রুটে (রিয়াদ, দাম্মাম, জেদ্দা, ওমান, দোহা, কুয়ালালামপুর) বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর টিকিট মজুতদারির অভিযোগও উঠেছে। এর ফলে ওমরাহ যাত্রী ও বিদেশগামী শ্রমিকদের জন্য নির্ধারিত টিকিট চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
সরকার টিকিটের মূল্যবৃদ্ধি রোধ ও বাজার নিয়ন্ত্রণে নিম্নলিখিত কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে :
নাম-পাসপোর্ট ছাড়া টিকিট বুকিং নিষিদ্ধ: এখন থেকে যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট নম্বর ও পাসপোর্ট কপি ছাড়া কোনো বিমান টিকিট বুকিং করা যাবে না।
বুকিংয়ের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে টিকিট ইস্যু বাধ্যতামূলক : বুকিং করার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে টিকিট ইস্যু করা না হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।
গ্রুপ বুকিংয়ের শর্ত কঠোর করা হয়েছে: ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বুক হওয়া সকল গ্রুপ টিকিট আগামী ৭ দিনের মধ্যে যাত্রীর নাম ও পাসপোর্ট নম্বরসহ ইস্যু নিশ্চিত করতে হবে, অন্যথায় এয়ারলাইন্স নিজ উদ্যোগে তা বাতিল করবে।
তদন্ত কমিটি গঠন: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
টাস্কফোর্স গঠন: টিকিটের মূল্যবৃদ্ধি তদারকির জন্য ১৩ সদস্যের একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।
এই নতুন নিয়মাবলী বাস্তবায়ন হলে যেই প্রত্যাশিত ফলাফল পাওয়া যাবে তা নিম্নে উল্লেখ্য করা হলোঃ-
কৃত্রিম সংকট দূর হবে এবং টিকিটের দাম কমবে।
ওমরাহ যাত্রী ও প্রবাসী শ্রমিকদের ভোগান্তি কমবে।
টিকিটের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাজার তদারকি আরও জোরদার করা হবে।
সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপ বিদেশগামী যাত্রীদের জন্য স্বস্তি বয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আরও তথ্য ও অগ্রগতি জানতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ রাখার অনুরোধ করা হয়েছে।