বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০১:২৫:১৯

হুহু করে কমছে পেঁয়াজের দাম, এখন যত কেজি

হুহু করে কমছে পেঁয়াজের দাম, এখন যত কেজি

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : পেঁয়াজ নিয়ে তেলেসমাতি কাণ্ডে এবার বেকায়দায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। গত কয়েকদিনে যে হারে দাম বেড়েছে, ঠিক সেই হারে হুহু করে কমছে পেঁয়াজের দাম। তবে দাম কমলেও ক্রেতা মিলছে না বাজারে। ফলে ক্রেতাশূন্য বাজারে লোকসানের মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।

রাজধানীতে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় একদিনে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম কমেছে ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত। যে ব্যবসায়ীরা বেশি দামে পেঁয়াজ কিনে ফেলেছেন, তারা এখন আর বেশি দামে বিক্রি করতে পারছেন না। তাই ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।

সোমবার যে মানের দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায়, সেই পেঁয়াজের দাম আজ ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকায় নেমে এসেছে। তারপরও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না।

ব্যবসায়ীরা জানান, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পেঁয়াজের কেজি ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকায় নামবে। সোমবার যে মানের এক মণ পেঁয়াজ মোকামে বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৭০০ টাকায়, আজ তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ টাকায়।

কারওয়ান বাজারের খুচরা বিক্রেতা মালেক ফরাজি বলেন, ‘বাজারে পেঁয়াজের ক্রেতা কম। ফলে দাম ব্যাপকভাবে পড়ে যাচ্ছে। এতে লোকসান গুণতে হচ্ছে।’

পেঁয়াজ বিক্রেতারা জানান, আবহাওয়া ও পরিবহন স্বাভাবিক থাকলে বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ আরও বাড়বে। এতে পেঁয়াজের দাম আরও কমবে। বাড়ার কোনো সুযোগ নেই। এখন আমদানি না থাকলেও কোনো সমস্যা নেই। কারণ দেশি পেঁয়াজের মৌসুম এখন। ফলে দাম কমবেই।

এদিকে বাজারে আসতে শুরু করা মুড়িকাটা ও আগাম মওসুমের আবাদ থেকে এবার প্রায় ৮ লাখ টন পেঁয়াজ পাওয়ার আশা কৃষি মন্ত্রণালয়ের। দেশে প্রতি মাসে প্রায় দুই লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা থাকলেও আগামী তিন মাসে মুড়িকাটা ও আগাম মওসুমের আবাদ থেকে প্রায় আট লাখ টন পেঁয়াজ পাওয়ার আশা করছে এ মন্ত্রণালয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেশে প্রতিবছর ২৫ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। দেশি উৎপাদনের পাশাপাশি প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৬ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের বার্তায় বলা হয়, প্রতি বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ হয় প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন হয় প্রায় ৮ লাখ টন। এবছর গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হবে প্রায় ৫০ হাজার টন। এই মুড়িকাটা ও গ্রীষ্মকালীন নতুন পেঁয়াজ ক্ষেত থেকে তোলা ও বাজারে আসা শুরু হয়েছে, যা আগামী তিন মাস চলমান থাকবে।

আগাম মওসুমের পেঁয়াজ শেষ হওয়ার আগেই মূল মওসুমের পেঁয়াজ এসে যাবে উল্লেখ করে কৃষি মন্ত্রণালয় জানায়, এ বছর ২৬ লাখ থেকে ২৮ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হতে পারে।

উল্লেখ্য, ভারতের রপ্তানি বন্ধের ঘোষণায় একদিনের ব্যবধানে অস্বাভাবিক দাম বাড়ে পেঁয়াজের। ক্রেতা, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে প্রশাসনের মধ্যেও বিষয়টি নিয়ে তৈরি হয়েছে অস্বস্তি। শুক্রবার থেকে হু হু করে বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। শনিবার একলাফে তা দ্বিগুণ হয়ে দুইশ টাকা ছাড়িয়ে যায়।

ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ থাকায় দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্য সহনীয় রাখতে ‘বিভিন্ন বিকল্প দেশ থেকে আমদানি করে সাপ্লাই চেইন স্বাভাবিক করার’ পরামর্শ দেন ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম।

নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করে স্বাভাবিক মূল্যে বিক্রিতে রবিবার ব্যবসায়ীদের এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে