এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বিগত ৭ দিনে দেশের বাজারে পাঁচবার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। ঘন ঘন দাম পরিবর্তনে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে দ্বিধাদ্বন্দ্ব।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সবশেষ একদিনের ব্যবধানে ভরিতে ২ হাজার ১০০ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৪ হাজার ১৯০ টাকা নির্ধারণ করেছে বাজুস। যা এদিন বিকেল ৪ টা ৫০ মিনিট থেকে কার্যকর হয়েছে।
বাজুসের তথ্য বলছে, চলতি বছরের প্রথম চার মাসেই দেশের বাজারে ১২ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়। যেখানে ৭ বার দাম বাড়ানো হয়, আর কমানো হয় ৫ বার। এর মধ্যে এপ্রিলেই দাম সমন্বয় হয়েছে ৭ বার। আর গত ৭ দিনে সমন্বয় হয়েছে ৫ বার।
২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে বা ২-১ দিনের ব্যবধানে দাম কমানোয় ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, স্বর্ণ কিনতে এসে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়তে হচ্ছে। কারণ কেনার পর দাম কমে গেলে আফসোস হবে। আবার দাম বেড়ে গেলে লোকসান গুনতে হবে।
এক ক্রেতা সাইফুল বলেন, এরকম হুটহাট দাম সমন্বয়ে স্বর্ণ কিনতে এসে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। বাজুসের উচিত ১ বা ৩ মাসের জন্য একটি দাম বেঁধে দেয়া। তাহলে নির্দিষ্ট একটি দামের মধ্যে সবাই স্বর্ণ কিনতে পারবে।
আর ব্যবসায়ীরা জানান, স্বর্ণের দামের এই হুটহাট পরিবর্তনে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে তাদেরও। রাজধানীর তাঁতিবাজারে স্বর্ণ ব্যবসায়ী সুরঞ্জন বলেন, স্বর্ণের এই হুটহাট দাম পরিবর্তনে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রায়ই কথাকাটাকাটি হচ্ছে। কারণ তারা দেখে আসছেন এক দাম, কিন্তু বাজারে এসে দেখছেন আরেক দাম।
তবে বাজুস বলছে, বিশ্ববাজারে ঘণ্টায় ঘণ্টায় স্বর্ণের দাম ওঠানামা করায় দেশের বাজারে ২৪ ঘণ্টার কম সময়ে বা ২-১ দিনের ব্যবধানে দাম সমন্বয় করা হচ্ছে।
বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিংয়ের চেয়ারম্যান ও বাজুস সহসভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে অস্থিরতা বিরাজ করছে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় দাম ওঠানামা করছে। এজন্য ২৪ ঘণ্টার কম সময় বা ২-১ দিনের ব্যবধানে সমন্বয় করা হচ্ছে।
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের বাজারে বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিরতা চলতে থাকলেে এবং ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক সুদের হার কমিয়ে দিলে স্বর্ণসহ তেল-গ্যাসের দাম বাড়তে থাকবে। তখন দেশের বাজারেও দাম সমন্বয়ের প্রয়োজন হবে।
অর্থনীতিবিদ মাহফুজ কবির বলেন, বিশ্ববাজারে দ্রুত ওঠানামা করছে স্বর্ণের দাম। মূলত ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার ও ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার প্রভাবে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম ওঠানামা করছে। তাই দেশের বাজারেও দাম সমন্বয় করতে বাধ্য হচ্ছে বাজুস।
স্বর্ণ পাচার হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে মাহফুজ কবির আরও বলেন, দাম সমন্বয় না করলে কমদামি স্বর্ণগুলো পাশের যেসব দেশে স্বর্ণের দাম চড়া, সেখানে পাচার হয়ে যেতে পারে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের প্রথম চারমাসে স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আর গত ১৬ মাসে বেড়েছে ৩৫ দশমিক ০৮ শতাংশ বা ৩১ হাজার ১৫ টাকা।