মঙ্গলবার, ০২ জুলাই, ২০২৪, ০৪:৩৮:৩১

এবার ঋণ মিলবে অফিস-কাগজপত্র ছাড়াই, যারা পাবেন

এবার ঋণ মিলবে অফিস-কাগজপত্র ছাড়াই, যারা পাবেন

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : শহর ও প্রান্তিক পর্যায়ের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বা স্বল্প ঋণ প্রত্যাশী এমন গ্রাহক নেহাত কম নয়। তবে তারা নিয়মের বেড়াজাল পেরিয়ে নিতে পারছে না ব্যাংক ঋণ। নিজেদের কোনো দোকান বা অফিস এবং ট্রেড লাইসেন্সসহ অন্যান্য কাগজপত্র না থাকায় ব্যাংক তাদেরকে ঋণ দিতে অসম্মতি জানায়। তবে এবার সেসব প্রান্তিক ব্যবসায়ীর জন্য সুখবর নিয়ে এসেছে সরকারের ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থা।

এ ব্যবস্থায় ঋণ পেতে হলে লাগবে না কোনো কাগজপত্র, থাকতে হবে না কোনো অফিস। যেকোনো স্থান থেকে ডিভাইস ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে করা যাবে লেনদেন। আর এটিই হলো ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থা।

দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে রাজধানীর দিলকুশায় রাস্তার পাশে কাপড়ের ব্যবসা করেন নাসিরসহ অনেকে। মৌসুমে বেচাকেনা বেড়ে গেলে টান পড়ে পুঁজিতে। ব্যক্তির কাছে ধার চাইলে ফিরতে হয়ে খালি হাতে। আর ব্যাংকের ঋণ তো অধরা। শর্তের বেড়াজালে ঋণের আশা, নিরাশায় পরিণত হয়।

নাসিরসহ অন্য ব্যবসায়ীরা জানান, ব্যাংকে গেলে তাদের ঋণ দেয়া হয় না। ব্যাংক কাগজপত্র চায়, সেটি তাদের নেই। কারণ তারা ফুটপাতে ব্যবসা করে। আর ব্যাংক ঋণ দিলেও সেটির জন্য খরচ এবং সময়ের দরকার। তাই যে যেভাবে পারে কিস্তি বা সুদে ঋণ নেয়। এখন যদি অন্য কোনোভাবে ঋণ নেয়ার সুবিধা থাকে তাহলে তারা সেভাবে ‍ঋণ নেবেন বলেও জানান।

চলতি জাতীয় বাজেট প্রস্তাবনায় প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল ব্যাংকিং চালুর ঘোষণা দেয় সরকার। নতুন এ পদ্ধতিতে থাকবে না কোনো অফিস, শাখা ও আলাদা অবকাঠামো। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মতোই ডিজিটাল ব্যাংকের প্রতিনিধি এলাকাভিত্তিক লেনদেনে নিযুক্ত থাকবেন। জাতীয় পরিচয়পত্রসহ নিজস্ব তথ্য আপলোড করেই অ্যাকাউন্ট খোলা ও ঋণের আবেদন করতে পারবেন গ্রাহকরা। এরই মধ্যে ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে ১০টি ব্যাংকসহ ৫২টি প্রতিষ্ঠান। উদ্যোক্তারা বলছেন, ক্ষুদ্র ঋণ প্রত্যাশীদের সহজে ব্যাংকিং সেবা দেয়াই হবে এ ব্যবস্থার লক্ষ্য।

নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, যারা ক্ষুদ্র ঋণ প্রত্যাশী আছেন, ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থা মূলত তাদের জন্য। তাদেরকে সিঙ্গেল ডিজিটে লোন দিতে পারবে ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থা। অনেক ক্ষেত্রে উদ্যোক্তা চাইলে ফ্রি লোনও দিতে পারবে। এ ব্যবস্থার সুবিধা হলো: যার আজকে ১০ হাজার টাকা দরকার সে ব্যাংকে গিয়ে কিন্তু টাকাটা নিতে পারছে না। সেই চাইলে ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবায় একটা ক্লিক করেই টাকাটা সংগ্রহ করতে পারবে।

নতুন এ ব্যাংকিংয়ে আমানত গ্রহণ, ঋণ দেয়া সবই হবে প্রযুক্তির মাধ্যমে। সেক্ষেত্রে গ্রাহক স্বার্থ সংরক্ষণে লাইসেন্স দেয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।

তবে আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দিয়ে অর্থনীতিবিদ তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, মানুষের যে আমানত আছে, সে আমানতের একটি গ্যারান্টি কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংককে দিতে হবে। সেটি যদি তারা না দিতে পারে এবং একটি ব্যাংক যদি ব্যর্থ হয়, তখন কিন্তু লক্ষাধিক মানুষের আমানতের প্রশ্ন আসবে।

তবে নিরাপত্তার বিষয়টি আশ্বস্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এ পদ্ধতিতে প্রতিযোগিতা বাড়বে আর্থিক কার্যক্রমে। যাচাই-বাছাইয়ের পরই অনুমোদন দেয়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেসবাউল হক বলেন, ‘আমাদের যে নির্ধারিত সুদের হার আছে, সেটার আওতায়ই তাদের আসতে হবে। আবার আমানত সংগ্রহের ক্ষেত্রেও বাজারে যে সুদের হার চলমান থাকবে সেটাই মানতে হবে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোও কিন্ত ব্যাংক। তারা আমানত নিতে পারবে আবার ঋণও দিতে পারবে। যেহেতু আমাদের মূল গ্রাহক হলো প্রান্তিক গোষ্ঠী তাই আমরা বড় কোনো ঋণের অনুমতি দেব না।

ডিজিটাল ব্যাংক চালুর জন্য ন্যূনতম মূলধন লাগবে ১২৫ কোটি টাকা। আর প্রত্যেক উদ্যোক্তাকে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা করে মূলধন দিতে হবে বলেও জানানো হয়।া
কএবার ঋণ মিলবে অফিস-কাগজপত্র ছাড়াই, যারা পাবেন

 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে