সোমবার, ০৮ জুলাই, ২০২৪, ১১:২৫:৩৩

সাত দিনের ব্যবধানে বস্তাপ্রতি যত বাড়লো চালের দাম

সাত দিনের ব্যবধানে বস্তাপ্রতি যত বাড়লো চালের দাম

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ভরা মৌসুমেও স্বস্তি নেই চালের বাজারে। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও সাত দিনের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম বস্তাপ্রতি বেড়েছে অন্তত ১০০-৩০০ টাকা। বৈধ-অবৈধ গুদামে মজুত বাড়িয়ে বাজারে কমানো হয়েছে সরবরাহ। এর প্রভাবে এরইমধ্যে বাজার চড়া হতে শুরু করেছে বলে দাবি বিক্রেতাদের।

সাধারণত নতুন ধান ওঠার আগ মুহূর্তে চালের দর কিছুটা বাড়তি থাকে। কিন্তু মাস খানেক হলো বোরো ধান উঠেছে। বাম্পার ফলন হলেও, ফের নানা ফন্দিতে চালের বাজার অস্থির করে তুলতে তৎপর সংঘবদ্ধ চক্র। 

এরইমধ্যে নানা খোঁড়া যুক্তির কারণে পাইকারি বাজারে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি দুই থেকে ছয় টাকা। এমন পরিস্থিতিতে অসহায় যেন ভোক্তারা। ক্রেতাদের দাবি, এ যেন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা। যা দেখার কেউ নেই।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর কাঁচা বাজারে চাল কিনতে আসা ফরহাদ নামের একজন সময় সংবাদকে বলেন, ‘বাজার থেকে এখন চাল-ডাল কিংবা ডিমের মতো সাধারণ কিছু খেয়ে থাকাও কষ্টসাধ্য হয়ে উঠছে। 

নিত্যপণ্যের যে দাম তাতে সাধারণ ক্রেতাদের নাভিশ্বাস অবস্থা। সবসময়ই একটা সিন্ডিকেটের কাছে ধরা পড়ে আছে ক্রেতারা। যখন খুশি ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। কড়া মনিটরিং না হলে, এ অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব না।’

আরেকজন ক্রেতা আব্দুস সালাম বলেন, ‘চালের বাজার বাড়তে বাড়তে এমন অবস্থায় গেছে, সাধারণ ও মধ্যবিত্ত ক্রেতারা দিনকে দিন নজর নিচের দিকে নামাতে বাধ্য হচ্ছেন। আগে ভালো মান আর পণ্যের গুণ দেখে বাজার করা হতো। এখন আর সেই অবস্থা নেই। কম দামে যেটা পাওয়া যায়, তাই খেয়ে-পড়ে কোনোরকমে বেঁচে থাকাটাই দায়।’

রাজধানীর এ বাজারে এক সপ্তাহ আগেও এককেজি মোটা পাইজাম চালের কেজি বিক্রি হয়েছে ৪৮ টাকায়। আর বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫৩-৫৪ টাকায়। মিনিকেট ৭২ টাকা কেজি আর ৮-১০ টাকা কেজিতে বেড়ে ৯০ টাকায় ঠেকেছে বাসমতি চাল।

এ বাজারের একজন বিক্রেতা সময় সংবাদকে বলেন, ‘সব ধরনের চালের দামই বেড়েছে। এ বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হলে একেবারে মিল পর্যায় থেকে শুরু করতে হবে। খুচরা বাজারে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।’

বৈধ-অবৈধ গুদামে মজুত বাড়িয়ে বাজারে কমিয়েছে সরবরাহ। যার প্রভাব বাজারে, বলছেন আড়তদাররা। তাদের দাবি, সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা চালের বস্তায় মিলাররা দাম বাড়িয়েছে ৫০ টাকা আর চিকন চালে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা। ধানের দাম বৃদ্ধি, পরিবহন ভাড়া বাড়ানোসহ করপোরেট কোম্পানির দৌরাত্ম্যের অজুহাত দিচ্ছেন তারা।

এ ব্যাপারে সূচনা রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী মো. সাইফুজ্জামান সলু বলেন, ‘মিলারদের বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে চাল। তাই স্বাভাবিকভাবে উৎপাদন খরচ বেড়ে চালের বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। 

আর এখন সব বস্তায় মূল্য উল্লেখ করা থাকে। তাই কারচুপির কোনো জায়গা নেই। সরকার প্রয়োজনে মিলারদের মিলেই যাচাই-বাছাই করে দেখুক, এখানে খরচ কেমন হয়, আর কী পরিমাণ লাভ হচ্ছে। দাম কেন বাড়ছে, তা জানতে মিলগুলোতে ঘুরলেই বুঝতে পারবে।’
 
তবে এমন ভরা মৌসুমে চালের উচ্চমূল্য মেনে নিতে পারছেন না ভোক্তারা। তাদের দাবি, তদারকি করা হোক মিল পর্যায়ে- তা না হলে, সামনের বর্ষা মৌসুমে দাম আরও বৃদ্ধির শঙ্কায় আছেন তারা।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে