এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ‘দুই বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করেছি। ইতোমধ্যে ধান পাকতেও শুরু করেছে। আর কয়দিন পরেই ধানগুলো কেটে ঘরে তোলার চিন্তা ভাবনা ছিল। কিন্তু টানা বৃষ্টির কারণে আমার ধান ক্ষেত প্রায় তলিয়ে গেছে।
এভাবে যদি বৃষ্টি নামতে থাকে আর যদি ক্ষেতে পানি জমে থাকে, তাহলে বড় ধরণের ক্ষতি হবে আমার।’ এসব কথা বলছিলেন সালথার রঘুয়ারকান্দী গ্রামের কৃষক শাহজাহান মোল্যা।
এমন অবস্থা শুধু শাহজাহান মোল্যারই না, উপজেলার নিম্নাঞ্চলের কৃষকদেরও একই দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে। সরেজমিনে দেখা যায়, টানা বর্ষণের ফলে কৃষকদের শত শত হেক্টর জমির ধান ও সবজিসহ বিভিন্ন ফসল তলিয়ে যেতে শুরু করেছে।
টানা ভারী বর্ষণের ফলে ফরিদপুরের সালথা ও নগরকান্দায় নদ-নদী ও খাল-বিলে হু হু করে বাড়ছে পানি। ফলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে ওই অঞ্চলে। এতে ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন কৃষকরা।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সালথা ও নগরকান্দায় এবার অন্তত ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে এসব জমির বেশিভাগ ধানের শীষ বের হতে শুরু করেছে। কিছু আগাম জাতের ধান পেকেও গেছে। কয়েকদিন আগেও বাতাসে দোল খাচ্ছিল এসব কাচা-পাকা ধানের শীষ। তবে হঠাৎ ভারি বৃষ্টির কারণে কৃষকদের কঠোর পরিশ্রম আর নবান্নের স্বপ্নে লালিত সেই ধান এখন ঝুঁকিতে রয়েছে।
কৃষকরা বলছেন, এভাবে ভারী বৃষ্টিপাত হতে থাকলে ৭০ ভাগ জমির ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে বড় ধরণের ক্ষতির মুখে পড়বেন তারা।
এনামুল হক নামে এক কৃষক বলেন, ‘এবার যেভাবে ধানের ফলন দেখা যাচ্ছিল, তাতে আমাদের মন আনন্দে ভরে গিয়েছিল। প্রতিবিঘায় ৪০ থেকে ৫০ মণ ধান পাবার আশা করছিলাম। তবে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে ধান ঘরে তুলতে পারবো কি না, তা নিয়ে অনেকটা চিন্তায় আছি। এমন অবস্থায় মহান আল্লাহ্ যদি আমাদের ফসল রক্ষা না করেন, তাহলে ঘরে বসে যাবো। সারাবছর এক রকম না খেয়ে থাকতে হবে ‘
সবুজ মন্সী নামের এক সবজি চাষি বলেন, ‘আমি কিছু জমিতে মরিচ, বেগুন ও লাউ চাষ করেছিলাম। তবে টানা বৃষ্টির কারণে আমার সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে। আর কিছুদিন যদি খেতে পানি জমে থাকে তাহলে সব সবজি গাছ পচে নষ্ট হয়ে যাবে।’
নগরকান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তিলোক কুমার ঘোস কালের কণ্ঠকে বলেন, ভারি বৃষ্টিতে নিচু জমির ধান নিয়ে কিছুটা চিন্তিত কৃষকরা। তবে বৃষ্টি চলমান না থাকলে ভয় নেই। আর যদি বৃষ্টি চলমান থেকে, তাহলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন কৃষকরা।’