এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ডাকাতির জন্য তারা বেছে নেয় ঝড়বৃষ্টির রাত। টার্গেট করা হয় জলাবদ্ধতা আছে এমন এলাকা। মুখে থাকে মাস্ক, গায়ে থাকে বোরকা। অত্যন্ত চতুর দলটি ডাকাতির আগে টার্গেট বাড়ির সমস্ত সিসি ক্যামেরা অকেজো করে দেয়। মাস দুয়েক আগে এক বৃষ্টির রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি বাসায় ডাকাতির ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতারের পর চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ।
সিসি টিভির ফুটেজে দেখা যায়, গত ২৭ মে রাত ২টা ৩৫ মিনিটে যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়া এলাকায় রাতভর বৃষ্টির কারণে পানিতে ডুবে গেছে মূল সড়কসহ অলিগলি। তখনও বৃষ্টি ঝরছিল। বৈরী এ আবহাওয়ার মধ্যেই একটি সাদা প্রাইভেটকার থামে বাড়িটির সামনে। গাড়ি থেকে নামে তিনজন। সবার মুখে মাস্ক। ওই একই সড়কে আরেকটি পিকআপ থেকে নামে আরও ছয়জন। সবার মাথায় ছাতা। তারাও একে একে ঢুকে পড়ে ওই বাড়িটিতেই।
ত্রিশ থেকে চল্লিশ মিনিট পর তাদের সবাইকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। ততক্ষণে বাড়িটি থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও বিদেশি মুদ্রাসহ মূল্যবান সামগ্রী লুটে নেয়ার কাজ শেষ।
ঘটনার দুমাসেরও বেশি সময় পর সম্প্রতি ডাকাত দলটির চার সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ বলছে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিশেষ করে মুষলধারে বৃষ্টির রাত তারা বেছে নেয় ডাকাতির জন্য। জলাবদ্ধতা আছে এমন এলাকার কোনো বাড়ি টার্গেট করা হয়।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন: আলাউদ্দিন, মাসুদ চৌকিদার, আসাদ মিয়া এবং বশির উদ্দিন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ওয়ারি বিভাগ) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ইকবাল হোসাইন সময় সংবাদকে বলেন, ‘প্রাইভেটকারে একটি চিহ্ন ছিল। সেই চিহ্ন ধরে আমরা দুই মাস ধরে খোঁজাখুঁজি করি। যাত্রাবাড়ী থানার একটি চৌকস টিম পাঁচ শতাধিক গাড়ি চেক করে ওই প্রাইভেটকারটির সন্ধান পায় কাকরাইল এলাকায়। মাসুদ চৌকিদার নামে ছেলেটি ডাকাতদের সর্দার। সে বিভিন্ন জেলায় ডাকাতিতে অংশগ্রহণ করে।’
তিনি জানান, বৈরী পরিবেশে যে রাতে পুলিশের গতিবিধি কম হতে পারে, সেই রাতকে বেছে নেন ডাকাতরা। বৃষ্টির মধ্যেই তারা আলোচনায় বসেন। কোন বাড়ি ফাঁকা, কোন বাড়িতে সম্পদ থাকতে পারে, কোন বাড়িতে বাড়িওয়ালা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আছে, অথবা ঢাকার বাইরে অবস্থান করছেন -- এসব তথ্য দেয়ার দায়িত্ব থাকে একটা গ্রুপের।
ডাকাত দলটি এর আগেও রাজধানীতে ঝড়বৃষ্টির রাতে ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।