শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৪, ০২:৩৩:২৩

পানি নামতে না নামতেই নদীতে বিলীন হওয়া শুরু হয়েছে ঘরবাড়ি

পানি নামতে না নামতেই নদীতে বিলীন হওয়া শুরু হয়েছে ঘরবাড়ি

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পানির স্রোতে গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার কলাকান্দি, ভিটিকান্দি ও নারান্দিয়া ইউনিয়নের ২৫ থেকে ৩০টি গ্রাম তলিয়ে গেছে। আকস্মিক এ বন্যার পানি ইতিমধ্যে কমতে শুরু করেছে। তবে পানি নামতে না নামতেই ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হওয়া শুরু হয়েছে। 

আজ শুক্রবার (৩০ আগস্ট) সরজমিনে উপজেলার বন্যাদুর্গত কয়েকটি গ্রামে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়।

তীরবর্তী মানুষের ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে যাচ্ছে গোমতী নদীতে। ঘরবাড়ির চাল-বেড়া খুলে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন দুই পাড়ের মানুষ। 

তিতাসে উপজেলার আসমানিয়া বাজার ও নারান্দিয়া গ্রামের নদীর দুই পাশের শতাধিক ঘরবাড়ি গোমতী নদীর প্রবল স্রোতে বিলীন হয়ে গেছে। নারান্দিয়া পূর্ব পাড়ের বাসিন্দা মহিউদ্দিন সরকার বলেন, বন্যার পানিতে ঘরের সব কিছু শেষ হয়েছে।

মনে করছিলাম, বন্যার পানি চলে গেলে ঘরবাড়ি মেরামত করে ছেলে-মেয়ে ও বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে কোনো মতে চলা যাবে। তবে আল্লাহ আমাদের ভিটা মাটিও রাখল না।

বন্যার পানি কমে যাওয়ায় বাড়িঘর দেখতে আসেন নারান্দিয়া পশ্চিম পাড়ের আবদী মিয়া। কিন্তু সেখানে আসতেই তার দুটি বসতঘর মুহূর্তের মধ্যে গোমতী নদীতে বিলীন হয়ে যায়।

তা দেখে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন তিনি। আর বলতে থাকেন, ‘বাবারে, আমরা এখন কী করে বাঁচব? বন্যায় নিছে ঘরের সব কিছু, আর গোমতী নদীতে বিলীন হয়ে গেল শেষ সম্বল বাড়িঘর।’

এলাকার সমাজসেবক মো. মাইন উদ্দিন খুশু বলেন, ‘গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে হঠাৎ বন্যায় ঘরের ভেতর বুক সমান পানি ছিল। মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে আশ্রয় নেয়। তখন বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করে।

বন্যার আঘাত সহ্য করতে না করতেই এখন আমাদের গ্রামের দুই পাশে দেড় শতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে না দাঁড়ালে তাদের উপায় কী হবে? আমরা সরকারকে তাদের পাশে দাঁড়ানোর দাবি জানাচ্ছি।’

নারান্দিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান খোকা বলেন, ‘বন্যায় আশ্রয়কেন্দ্রে ইউনিয়ন পরিষদ ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাহায্য করছে। বন্যার পর নদীভাঙন রোধ ও ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’

তিতাস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুরাইয়া মমিন বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করা হয়েছে। গোমতী নদীতে যাদের ঘরবাড়ি বিলীন হয়েছে তাদের তালিকা তৈরি করতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছে। তাদের তালিকা পেলে সরকারি অনুদান দেওয়া হবে।’

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে