শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৪, ০২:৫৫:২৯

বাজার তদারকির ফলে এক লাফে যত কমলো ডিমের দাম

বাজার তদারকির ফলে এক লাফে যত কমলো ডিমের দাম

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বাজার তদারকি ও সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় রাজধানীতে মুরগির ডিমের দাম এক লাফে ডজনে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। সবজির দামেও কিছুটা স্বস্তি মিলছে। বাজারভেদে ৪০ থেকে ৭০ টাকা কেজির মধ্যে বিক্রি হচ্ছে বেশির ভাগ সবজি। চালের দাম গত সপ্তাহে বাড়ার পর এখন ওই একই দামে বিক্রি হচ্ছে; নতুন করে চলতি সপ্তাহে দাম বাড়েনি।

বিক্রেতারা বলছেন, গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে দাম বাড়েনি; বরং কিছু পণ্যে দাম কমেছে। যে পণ্যগুলোর দাম বেড়েছিল সেসব পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে, নতুন করে কোনো দাম বাড়েনি। রাজধানীর কারওয়ান বাজার, বনানী কাঁচাবাজার, গুলশানের কালাচাঁদপুর বউবাজারে সরেজমিনে গিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে। গুলশানের কালাচাঁদপুর বউবাজারে গিয়ে দেখা যায় সব ধরনের সবজিতে ভরপুর।

অন্যান্য এলাকার চেয়ে এই বাজারে সবজি কিছুটা বেশি দামে বিক্রি হয়। সেখানে আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে এই দামেই বিক্রি হয়েছে। শসা ৫০ টাকা কেজি, কচুমুখি ৬০ টাকা কেজি, টমেটো ১৪০ টাকা কেজি, পেঁপে ৪০ টাকা কেজি, বেগুন আকার ও মানভেদে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ঢেঁড়স ৫০ টাকা কেজি, লাউ প্রতিটি ৫০ টাকা, কুমড়া প্রতিটি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ, প্রতি কেজি ২০০ টাকা। আর করলা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি দরে। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে আর আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা কেজি দরে। এই দুই পণ্য গত সপ্তাহেও একই দামে বিক্রি হয়েছে।

ফার্মের লাল ও সাদা ডিম বিক্রি হয়েছে ১৫৫ টাকা ডজন। ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা এবং লাল কক জাতের মুরগি ২৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এই বাজারে সবজি বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, সবজির দাম গত সপ্তাহে এ রকমই ছিল। দাম কমেওনি বাড়েওনি। তবে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম।

শহরের অন্যতম পাইকারি ও খুচরা বিক্রয়কেন্দ্র কারওয়ান বাজার। এই বাজারে চালের দাম গত সপ্তাহে বেড়েছিল। বাড়ার পর এখন স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এই বাজারে মিনিকেট চাল ৬৫ থেকে ৭২ টাকা এবং আটাশ চাল ৫৭ থেকে ৫৯ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা কেজি। এ ছাড়া জিরাশাইল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, নাজিরশাইল ৭১ থেকে ৭৩ টাকা, কাটারি নাজির ৭৭ থেকে ৭৯ টাকা, কাটারি আতপ চাল ৬৬ থেকে ৬৮ টাকা কেজি এবং চিনিগুঁড়া মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৭৭ থেকে ১১৫ টাকা কেজি দরে।

কারওয়ান বাজারের চাল ব্যবসায়ী মেসার্স মান্নান রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী আব্দুল মান্নান বলেন, আটাশ চালের দাম কেজিতে এক টাকা বেড়েছে। বন্যার কারণে চাহিদা বাড়ায় এটা হয়েছে। চালের সরবরাহ ঠিক আছে। মিলাররা একটু সুযোগ নিয়েছে। তারা দাম বাড়ায়।

এদিকে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভারত থেকে পানি আসার ফলে সৃষ্ট বন্যার কারণে প্রভাব পড়েছে মাছের বাজারে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দক্ষিণাঞ্চলে অনেক মাছের ঘের পানিতে ভেসে গেছে। ফলে সেই চাপ পড়েছে বাজারে। কারওয়ান বাজারে কিছুটা কম দামে পাওয়া গেলেও এই বাজারেও মাছের চড়া দাম দেখা গেছে। পাঙ্গাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি দরে। একই সঙ্গে বড় আকারের মৃগেল বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি দরে। তুলনামূলক কম দামের তেলাপিয়াও বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজি দরে। রুই ২৮০ টাকা, পাবদা ৩০০ টাকা, চাপিলা ৬০০ টাকা, সরপুঁটি ৩০০ টাকা, রূপচাঁদা ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি আকারের ইলিশ এক হাজার ৫০০ টাকা কেজি, এক কেজি ২০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৬০০ টাকা কেজি দরে।

দাম বেশি হওয়ায় কিছুটা অস্বস্তি প্রকাশ করেছে ক্রেতারা। কারওয়ান বাজারে মাছ কিনতে আসা অবসরপ্রপ্ত কর্মকর্তা আহসানুর রহমান বলেন, ‘দুই-আড়াই কেজির একটি মাছ কিনতে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। এটা অনেক বেশি। বিশ্বের মধ্যে আমাদের দেশে মাছ উৎপাদন অনেক বেশি। প্রথম সারির দিকে, তাহলে বলেন, আমাদের এত বেশি দামে কেন কিনতে হবে?’

এই বাজারে মাছ বিক্রেতা মো. শিপন বলেন, এখন অনেক বড় আকারের মাছ বেশি বাজারে আসছে। এগুলোর স্বাদ বেশি হওয়ায় চাহিদা বেশি থাকে। ফলে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। আর এখন সবে মাত্র নদীতে পানি ঢুকেছে। নদীর মাছ পেতে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তখন দামে স্বস্তি আসতে পারে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ১৫০ টাকা কেজি দরে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে