এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সদ্য বিদায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, দলের সঙ্গে নয়, ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ব্যক্তির মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নির্বাচন কমিশনে সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার সময় এসব কথা বলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন।
২০২২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সিইসি হিসেবে নিয়োগ পান সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল। এছাড়া ইসির সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা, সাবেক সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর ও সাবেক সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান।
নিয়োগের একদিন পর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর কাছে শপথ নেন তারা। ওই কমিশনের অধীনেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনটি বিএনপি ও তাদের সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো বর্জন করে। ভোট শেষে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ।
বিগত সংসদ নির্বাচনের পর থেকে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো সরকারের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল। এর মধ্যে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন।
সরকারের পতনের পর প্রশাসনে থাকা আওয়ামী লীগের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এ সময় বর্তমান নির্বাচন কমিশন বিলোপ করে নতুন কমিশন গঠনেরও দাবি ওঠে। এ নিয়ে কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন কর্মসূচিও পালিত হয়েছে। এমন অবস্থার মধ্যে পদত্যাগ করার ইঙ্গিত দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
গতকাল বিকেলে নির্বাচন ভবন থেকে বের হওয়ার সময় পদত্যাগের বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘এ বিষয়ে এখন কিছুই বলব না। বৃহস্পতিবার ১২টায় আপনাদের দাওয়াত দেওয়া হয়েছে, যা বলার সেখানে বলব।’ সিইসির এমন বক্তব্যর পরই তাদের পদত্যাগের গুঞ্জন শুরু হয়। হাবিবুল আউয়ালের এমন মন্তব্যর পরদিনই পদত্যাগের ঘোষণা দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
পদত্যাগের ঘোষণার সময় সদ্য বিদায়ী সিইসি বলেন, ২০২৪ সালের নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে। ওই নির্বাচন দলের সঙ্গে নয়, ব্যক্তির মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে।
নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হলে নির্বাচন ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো প্রয়োজন মন্তব্য করে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। আর নির্বাচন ব্যবস্থা ঢেলে না সাজালে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।
এ সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে কয়েক ধাপে জাতীয় নির্বাচন করার প্রস্তাব দেন সদ্য বিদায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার।