এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : নড়াইলের লোহাগড়ায় গত ২০২৩ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের ডিসপ্লেতে দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রতীকী সাজ নিয়েছিল লক্ষিপাশা দি লিটল সেইন্ট ইন্টারন্যাশনাল বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আন নূর জাহান তাহা। সেসময় ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তসলিম উদ্দিনকে শোকজ করা হয়। এমনকি চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় শিক্ষার্থী আন নূর জাহান তাহার বাবাকে।
কেমন আছে এখন খালেদা জিয়া সাজা সেই শিক্ষার্থীর পরিবার জানতে চাইলে শিক্ষার্থীর মা হালিমা আক্তার বলেন, ২০২৩ সালে ২৬ মার্চ লোহাগড়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে আমার মেয়ে মনের ভালো লাগা থেকে বেগম খালেদা জিয়ার প্রতীকী সাজে। এজন্য অনুষ্ঠানের মাঠ থেকেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমাদের বিভিন্নভাবে অপমান, হুমকি-ধামকি ও হেনস্তা করে।
তিনি বলেন, যে ম্যাডাম আমার মেয়েকে সাজিয়েছিল তাকে নানা ধরনের ভয়-ভীতি হুমকি দেয় ওই মাঠে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আমার মেয়ে যে স্কুলে পড়ত ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে শোকজ করে উপজেলা প্রশাসন। আমার স্বামী লোহাগড়া পৌরসভার কর্মরত সেখান থেকে তাকে বরখাস্ত করা হয়।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে পুলিশ, ডিবি পুলিশ নানাভাবে আমাদেরকে ওই ম্যাডামকে হয়রানি করছে। এমনকি রাত বিরাতেও পুলিশ, ডিবি পুলিশ বাড়ি চলে আসত, অনেক চাপ দিত। আমাদের মোবাইল ফোনও ট্রাকিং করা হত। আমার মেয়ে ভয়ে স্কুলে যেতে পারত না। তখন আমাদের পরিবারের নেমে আসে ভয়াবহ দুর্দশা। যা বলো বোঝানোর মত না। ভেবেই কুল পাই না কোথায় যাব? কি করব চরম বিভীষিকায় দিন কাটত আমাদের।
তিনি জানান, বিএনপি নেতারা আমাদের পাশে ছিল। সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের স্ত্রী, ওনার ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ও নড়াইলের বিএনপির নেতারা আমাদের বাসায় আসছিল। জাইমা রহমান পাঠাগার থেকে আমার মেয়ের জন্য উপহার ও পাঠিয়েছিল। এখন ছাত্র ভাইদের মাধ্যমে দেশ নতুন করে স্বাধীন হয়েছে। আমি চাই এখন যেন কোনো শিশু কোনো পরিবার যেন রাজনৈতিক চাপে, প্রশাসনিক চাপে না পড়ে সবাই যেন স্বাধীনভাবে বাঁচতে পারে।
শিক্ষার্থী আন নূর জাহান তাহা বলেন, আমি খালেদা জিয়া সাজায় অনেক ভয় দেওয়া হয়। আমি সব সময় ভয়ে থাকতাম, বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে যেতে পারতাম না, আনন্দ-ফুর্তি করতে পারতাম না। সরকার পদত্যাগ করায় আমি অনেক খুশি। এখন আর আমার কোনো ভয় নেই। আমি যখন খুশি আবার খালেদা জিয়া সাজতে পারব।
প্রতিবেশী কাজলী বেগম জানান, তখন এই পরিবারকে অনেকভাবে ভয়-ভীতি ও চাপ দেওয়া হয়েছে। ওনাদের লিজ নেওয়া ৫ একর জমির ওপরে ঘেরের পাড়ের সব সবজি রাতের আঁধারে কেটে দেয়।
দি লিটল সেইন্ট ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. তসলিম উদ্দিন বলেন, তখন আমাকে নানাধরনের হুমকি দেওয়া হয়েছে। শোকজ করা হয়েছে। লোহাগড়া উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান কামাল ভূইয়া শিক্ষকদের লাঞ্চিত করে। আমার স্কুল এখন সুন্দরভাবে চলছে।