বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১১:১৭:০৫

শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের কোনো ক্ষমা নাই : মির্জা ফখরুল

শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের কোনো ক্ষমা নাই : মির্জা ফখরুল

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : গণ-আন্দোলনের মুখে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে জনগণ ক্ষমা করবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

তিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ একচ্ছত্রভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করে গেল, পিষল, মারল, মিথ্যা মামলা দিয়ে আসামি করে দিল আমরা কোনো কথাই বললাম না। আমাদের কথা বলতে হবে। আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার বিচার করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলা বিএনপি আয়োজিত ডিগ্রি কলেজ মাঠে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এই দেশের আওয়ামী লীগকে পরাজিত করেছি, ওদের ক্ষমতা থেকে ছেড়ে যেতে বাধ্য করেছি। ওরা গেছে তো গেছে দেশে আর নাই। পালিয়ে ভারত চলে গেছে।

আমরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি, অনেক মূল্য দিয়েছি। আমাদের অনেক ছাত্রের জীবন শেষ হয়ে গেছে। চাকরির বয়স শেষ হয়ে গিয়েছে, চাকরি পায় নাই। দরখাস্ত করতে পারে নাই, পদে পদে বাধা দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

এ দেশের মানুষের যে মৌলিক অধিকার, সেটা তারা বঞ্চিত করেছে।’ তরুণ নেতৃত্ব চেয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমার অনেক বয়স হয়ে গেছে এর মধ্যে আমি অনেক কষ্ট করেছি, জেল-জুলুম খেটেছি। আমার কাছে মনে হয়েছে আমি যখন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারব, আমি যখন হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারব, যখন নতুন একটা সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে তখন নিশ্চয়ই আমার এই কষ্টটাকে সফল বলে মনে করব। আজকে সেই জায়গায় আমরা এসেছি। এখন তোমাদের দায়িত্ব দেশটাকে গড়ে তোলা।

আমি তোমাদের বিরুদ্ধে কেউ খারাপ কথা বলুক, শুনতে চাই না। কেউ বলুক যে তোমরা চাঁদাবাজি করছ শুনতে চাই না। আমি তোমাদের কাছে একটি সুন্দর রঙিন বাংলাদেশ দেখতে চাই।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আল্লাহ আমাদের একটা সুযোগ দিয়েছেন। নতুন করে এ দেশটাকে তৈরি করতে হবে। আমরা আমাদের যে সংবিধানের অধীনে চলি সেই সংবিধানকে এমনভাবে করব, যাতে করে কোনো মানুষ সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয়। দেশের সাধারণ মানুষ যাতে তার পাওনা ঠিকমতো বুঝে পায়।’

 তিনি বলেন, ‘মানুষে মানুষে বৈষম্য দূর করতে হবে। শুধু চাকরির ক্ষেত্রে নয়, সব কিছুতেই। আর ঘুষ বন্ধ করতে হবে। এটাই এমন একটা ব্যাধি হয়ে গেছে, অসুখ হয়ে গেছে, যেখানে সেখানে ঘুষ দিতে হয়, আমরা ঘুষ দেব না।’

হিন্দু সম্প্রদায় সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ অনেক চেষ্টা করছে। এমনকি ভারতের পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হচ্ছে এ দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। এ দেশে এখন হিন্দু ভাইয়েরা অনেক নিরাপদে আছেন।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিচার বিভাগে যেন মানুষ বিচার পায় সে ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের এই আন্দোলনে হাজারো ছেলেমেয়েকে রাজপথে গুলি করে মেরেছে। আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশকে একেবারে শেষ করে দিয়েছে। রিজার্ভের টাকা চুরি করেছে, ব্যাংকের টাকা চুরি করেছে, প্রত্যেকটা জায়গা থেকে চুরি করেছে তারা।’

তিনি বলেন, ‘এত দিন আপনারা কথা বলার সুযোগ পান নাই। যারা কথা বলেছেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তাদের ধরে নিয়ে জেলে পুড়ে দিয়েছে। তবে রানীশংকৈলে একটু কম, পীরগঞ্জে আর একটু কম, বালিয়াডাঙ্গীতেও কম, হরিপুরে কম কিন্তু ঠাকুরগাঁও সদরে ভয়ংকর অত্যাচার হয়েছে। গত ১৫ থেকে ১৬ বছরে ঠাকুরগাঁও সদরে প্রায় সাত হাজার লোকের ওপর মামলা হামলা করা হয়েছে। সারা দেশে প্রায় ৬০ লাখ মামলা দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। হাজার হাজার লোককে গুলি করে হত্যা করেছে।’

সভায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য জেড মতুর্জা চৌধুরী তুলা, ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন, জেলা বিএনপির সহসভাপতি ওবায়দুল মাসুদ প্রমুখ।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে