শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ০৯:৪৩:৪১

শুল্ক-কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের পর যত হলো পেঁয়াজের কেজি

শুল্ক-কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের পর যত হলো পেঁয়াজের কেজি

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : আলু ও পেঁয়াজের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় আরো বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর খুচরা বাজারে আলু কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। 

চড়া দামে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজের দাম নতুন করে আরো ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এ পণ্যটির দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে গত বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) পেঁয়াজ আমদানির ওপর থেকে শুল্ক-কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করেছে।

এর আগে গত সেপ্টেম্বর মাসে এনবিআর পেঁয়াজ আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহার করে নেয়। শুল্ক ছাড়ে ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ দেশে আসছে, এর পরও দাম না কমে উল্টো বাড়ছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, হিমাগার গেটে আলুর দর বেড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। আর বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ সংকটে দেশি ও আমদানি দুই ধরনের পেঁয়াজের দাম বাড়তি।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর রামপুরা, বাড্ডা ও মহাখালী কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। সরবরাহ সংকটে বাজারে দেশি রসুনের দামও কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায় উঠেছে।

আমদানি রসুন কেজি ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরায় প্রতি ডজন ডিম ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগের বাড়তি দরেই বিক্রি হচ্ছে মুরগি। প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায় এবং সোনালি কেজি মানভেদে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শীতের আগাম সবজি বাজারে চলে আসায় সরবরাহ বেড়ে সবজির দাম কিছুটা কমেছে।

কাঁচা মরিচের দাম কমে কেজি মানভেদে খুচরায় ১৬০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সব ধরনের পণ্যের উচ্চমূল্যের মধ্যে নতুন করে পেঁয়াজ, রসুন ও আলুর বাজারের অস্থিরতার কারণে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। ক্রেতারা বলছেন, বাজারে আলু ও পেঁয়াজের কোনো সংকট দেখছি না। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে কোনো ধরনের তদারকি না থাকার সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ীরা আলু ও পেঁয়াজের বাজার নতুন করে অস্থির করে তুলছেন। 

রাজধানীর মধ্য বাড্ডা বাজারের আলু-পেঁয়াজ বিক্রেতা কবির উদ্দিন বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহে আলুর দাম বস্তায় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। এ কারণে আমরা এখন কেজি ৭০ টাকা বিক্রি করলেও আমাদের লাভ হচ্ছে না।’

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তথ্যে দেখা গেছে, এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম কেজিতে ২৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ২৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত বছরের মতো এবারও আলুর বাজারে অস্থিরতার কারণ হিমাগার মালিকদের কারসাজিই। তাঁরা মৌসুমের শুরুতে কম দামে আলু কিনে মজুদ করেন এবং পরে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়িয়ে দেন। একই প্রক্রিয়া চলছে সারা দেশে। শুধু আলু ও পেঁয়াজ নয়, বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ এই মজুদদারি ও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে খুচরায় গতকাল ঢেঁড়স, ধুন্দল কেজি ৬০ টাকায়, পটোল কেজি ৫০ টাকায়, টমেটো কেজি ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায়, শিম কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকায়, লম্বা বেগুন কেজি ৭০ টাকায়, করলা কেজি ৬০ থকে ৭০ টাকায়, শসা কেজি ৭০ টাকায়, কচুমুখি কেজি ৭০ টাকায় বিক্রি হয়।

এদিকে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৩টি স্থানে উৎপাদক থেকে ডিলারের মাধ্যমে সরাসরি ভোক্তা পর্যায়ে ডিম সরবরাহ করবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। দুই সপ্তাহের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

এ কার্যক্রমের বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিকাশ চন্দ্র দাস বলেন, ‘এই কার্যক্রমটি শুরু হতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। কারণ ১৩টি স্পটের জায়গাগুলো এখনো নির্ধারণ করা যায়নি। স্থান নির্ধারণ করা হলেই কার্যক্রম শুরু করা হবে।’

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে