এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপির যে-সব নেতা-কর্মী সামনে নির্বাচনের ফাঁকা মাঠ ভেবে খুশি হচ্ছেন। তারা সাবধান হন। সামনে ভয়ংকর অন্ধকার দেয়াল আছে।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেল পাঁচ টায় অনুষ্ঠানটি রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক রাজশাহী বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মামলার বিষয়ে আইনজীবীর প্রশ্নের উত্তরে তারেক রহমান বলেন, সৈরাচার পড়ে গিয়েছে, পালিয়ে গিয়েছে। তারা তো বসে নাই, তারা তো ষড়যন্ত্র করছে। যদি তাদের ষড়যন্ত্র সফল হয়- কেস (মামলা) তো উঠবেই না বরং নেতাকর্মীদের নামে দ্বিগুণ হয়ে জ্যামিতিক হারে ২০টা মামলা হয়ে যাবে। সেই সম্ভাবনাও কিন্তু আছে। সেই সম্ভাবনাকে যদি নস্যাৎ করে দিতে হয়, তাহলে আজকে থেকে আপনাদের প্রত্যেকেই সতর্ক হতে হবে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, আপনাদের একটাই টার্গেট হতে হবে। জনগণ, জনগণ অ্যান্ড জনগণ। এর বাইরে যদি আপনি কিছু চিন্তা করেন। তাহলে পতিত যে স্বৈরাচার তারা সফল হবে। তারা সফল হলে আইনজীবী সহকর্মীর বক্তব্য অনুযায়ী কেস আপনাদের মিটবে না। বরং মাথার উপরে আরও ১০টি, ২০টি কেস চেপে বসবে। আপনাদের নিজেকে যদি বাঁচাতে হয় তাহলে উপায় একটায় জনগণের আস্থা অর্জন করেন। আপনার পরিবার-পরিজনকে রক্ষা করতে হলে উপায় একটায় জনগণের আস্থা আর্জন করেন। আপনি যখন রাজনৈতিক কর্মী হয়ে গিয়েছেন এর বাইরে কোনো উপায় নাই।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া ৩১ দফা বাস্তবায়ন করা সম্ভাব না। আপনারা বিভিন্ন সভা ও দলীয় মিটিংয়ে বলেন- জনগণ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। একটি উদাহরণ দেয়- সহকর্মীবৃন্দ আপনার পরিবারের কোন সদস্যের প্রতি আস্থা রাখবেন। পরিবারে তো অনেক সদস্য থাকে। সবাই তো একরকম না। কার উপর আস্থা রাখেন। যে আপনার পাশে এসে দাঁড়াবে তার উপরে আপনি আস্থা রাখেন। এখানে বিশাল বড় একটা কিন্তু আছে। সেই মর্যাদা, বিশ্বাস, আস্থা আপনি অর্জন করেছেন একটি পর্যায়ে। আজকের পর থেকে সামনের দিনগুলো জনগণের আস্থা আপনাদের ধরে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, ফারাক্কা বাঁধের বিষয়ে আমাদের একটি ধারণা আছে। এটি একটি আন্তর্জাতিক বিষয়। বিএনপির বাইরে অন্য সরকার যখন ক্ষমতায় এসেছে, তারা যথাযথভাবে এটা দেখেনি। পতিত স্বৈরাচার সরকার ইচ্ছা করেই করেনি প্রতিবেশী দেশকে খুশি করার জন্য। এটা আন্তর্জাতিক লবি, আমরা সময়মতো অবশ্যই বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কাজ করব। প্রয়োজনে দেশের স্বার্থে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের নিয়েই কাজ করব আমাদের ন্যায্য হিস্যা আদায়ের জন্য।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে পাঁচ বছরে পাঁচ কোটি বৃক্ষরোপণের ইচ্ছে আছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের পানি বাড়ছে। গবেষণায় উঠে আসছে বাংলাদেশের অনেকাংশ, অর্ধেক বা তার কম অংশ ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। এই দেশের মানুষকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। খালেদা জিয়া সরকারের সময় আমরা বৃক্ষমেলা করতাম। আমাদের যেভাবেই হোক, এই কর্মসূচি আবার শুরু করতে হবে। সবাইকে উৎসাহ দিতে হবে বৃক্ষরোপণের জন্য। গাছ প্রকৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ব্যক্তিগতভাবে আমার একটা পরিকল্পনা আছে। আগামী দিনে আমরা সুযোগ পেলে পাঁচ বছরে আমরা পাঁচ কোটি বৃক্ষরোপণ করব।
এর আগে সকাল ১০টায় প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু হয়। এসময় বক্তব্য দেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ, চেয়ারপারসনের বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ড. মাহাদী আমিন প্রমুখ।
কর্মশালায় আলোচনা করেন, বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাশিদা বেগম হীরা ও কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা হাবিব। সভাপতিত্ব করেন, বিএনপির রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত।
বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটির সদস্য সচিব এবিএম মোশাররফ হোসেনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় নেতা ওবায়দুর রহমান চন্দন, আমিরুল ইসলাম আলীম প্রমুখ।