রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ১২:১৫:২৪

মারা গেছেন জোর করে পদত্যাগ করানো সেই উপাধ্যক্ষ

মারা গেছেন জোর করে পদত্যাগ করানো সেই উপাধ্যক্ষ

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক: আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ‘জোর করে পদত্যাগ করানো’ চট্টগ্রাম নগরের হাজেরা তজু ডিগ্রি কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ এস এম আইয়ুব (৫৯) মারা গেছেন।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মারা যান। শিক্ষকের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে শোক আর ক্ষোভে ভাসছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। এমন নির্মম মৃত্যুর জন্য ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন অনেকে।

শাহরিয়ার হাসান নামে হাজেরা তজু ডিগ্রি কলেজের প্রাক্তন এক শিক্ষার্থী ফেসবুক লিখেছেন, ‘ছাত্র হিসেবে আমরা লজ্জিত। আপনার এভাবে পরিণতি হবে চিন্তাও করতে পারলাম না। অপমান মেনে নিতে পারলেন না স্যার। শেষ পর্যন্ত না–ফেরার দেশে চলে গেলেন।’

সেলিম রানা নামের আরেক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘জটিল রসায়নকে স্যার অত্যন্ত সহজ করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপস্থাপন করতেন। এ কারণে স্যারের কাছে পড়েছি। স্যারের মৃত্যুতে শোকাহত।’

এরই মধ্যে শনিবার দুপুরের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, সাবেক উপাধ্যক্ষ এস এম আইয়ুবের মরদেহ স্ট্রেচারে করে হাসপাতাল থেকে বের করা হচ্ছে। চারপাশে আহাজারি করছেন স্বজন, সহকর্মী ও শিক্ষার্থীরা। কেউ কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।

তার মৃত্যুর পর জোর করে পদত্যাগ করানোর বিষয়টি নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয়। অনেক শিক্ষার্থী তার মৃত্যুর পেছনে জোর করে পদত্যাগ করানোর ঘটনাকে দায়ী করছেন। তাদের দাবি পদত্যাগের পর থেকে তিনি ‘মানসিক চাপে ছিলেন’।

জানা গেছে, বেতন কমানো, আইডি কার্ড প্রদান করাসহ চার দফা দাবিতে গত ২৩ ও ২৪ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ করেন কলেজের একদল শিক্ষার্থী। ২৪ সেপ্টেম্বর পদত্যাগপত্র লিখে জোর করে তাকে সই করানো হয়।

ঢাকা দক্ষিণের সাবেক মেয়র তাপসসহ ৩০ জনের নামে মামলাঢাকা দক্ষিণের সাবেক মেয়র তাপসসহ ৩০ জনের নামে মামলা
একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে বেঞ্চে শুয়ে পড়েন উপাধ্যক্ষ এস এম আইয়ুব। সেদিন কলেজটির অধ্যক্ষ চয়ন দাশকেও অবরুদ্ধ ও মারধর করা হলে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তাকে দিয়ে অন্য তিনজন শিক্ষকের বরখাস্ত আদেশেও জোর করে স্বাক্ষর নেওয়ার বিষয়টি খবরে আসে।

শিক্ষক আইয়ুবের ভাগনে টিপু সাংবাদিকদের বলেন, জোর করে পদত্যাগে বাধ্য করার ঘটনার পর থেকে মামা আর কলেজে যাননি। সেদিনের ঘটনার পর থেকে তিনি মানসিক চাপে ছিলেন।

শনিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে হঠাৎ তার মামা অসুস্থ বোধ করেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরে তাকে নগরের বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে সাড়ে ১১টার দিকে মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে উপাধাক্ষের মৃত্যুর খবর শুনে কলেজের সাবেক ও বর্তমান অনেক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিযোগ, জোর করে পদত্যাগপত্রে সই নেওয়ার পর থেকে তিনি ‘মানসিক চাপে ছিলেন’।

কলেজের অধ্যক্ষ চয়ন দাশ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, গত ১৮ নভেম্বর ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ডাকযোগে কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি বরাবর পদত্যাগপত্র পাঠান উপাধ্যক্ষ এস এম আইয়ুব। তার কোনো রোগব্যাধি ছিল না।

জোরপূর্বক পদত্যাগের ঘটনার পর আর কলেজের শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নেননি বলেও জানান অধ্যক্ষ।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে