এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক: ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ডধারী এক কোটির বাইরে আরো ১০ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
টিসিবির আগামী পণ্য বিক্রির কার্যক্রমে গার্মেন্টস শ্রমিকরাও যুক্ত হবেন বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। গতকাল বুধবার অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ১০ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির অনুমোদন দিয়েছি।
টিসিবি ওটা করবে। টিসিবির রেগুলার যে প্রগ্রাম আছে এক কোটি পরিবারের জন্য, ওরা বোধ হয় ওখান থেকে সংস্থান করতে পারবে।’
কবে নাগাদ গার্মেন্টস শ্রমিকরা এই পণ্য পাবেন এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘টিসিবি যখনই বিক্রি কার্যক্রম শুরু করবে তখনই এটা করব। টিসিবির পরবর্তী বিক্রি কার্যক্রমের মধ্যে গার্মেন্টম শ্রমিকরা সংযুক্ত থাকবেন। এটা ঢাকার আশপাশের বিশেষ এলাকার জন্য।’
জানা যায়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিবের ডিওর ভিত্তিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টঙ্গী, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, আশুলিয়া, সাভারসহ ঢাকার কাছাকাছি শিল্পগুলোর গার্মেন্ট শ্রমিকদের মধ্যে টিসিবির নির্ধারিত পণ্য ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১০ লাখ গার্মেন্ট শ্রমিকের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে চিনি, ভোজ্য তেল ও মসুর ডাল বিক্রি বাবদ মাসিক সম্ভাব্য ব্যয় হবে ৩১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। আর প্রতি মাসে খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রায় পাঁচ হাজার টন চালের প্রয়োজন হবে।
চলতি অর্থবছরে সুইজারল্যান্ড থেকে আরো ৫০ হাজার টন গম কেনার অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এতে ব্যয় হবে ১৭১ কোটি ৬৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকের নির্ধারিত প্রস্তাবের বাইরে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে ৫০ হাজার টন গম আমদানির একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়। উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি প্রস্তাবটি আলোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিঙ্গাপুরের মেসার্স অ্যাগ্রোক্রপ ইন্টারন্যাশনাল থেকে ১৭১ কোটি ৬৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে ৫০ হাজার টন গম কেনা হবে।
চলতি অর্থবছরে (২০২৪-২৫) ইংল্যান্ড থেকে ১৫ লাখ পাসপোর্ট বুকলেট এবং ১৫ লাখ লেমিনেশন ফয়েল নিয়ে আসবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। পাসপোর্টের এই সামগ্রী আনতে ব্যয় হবে ৬১ কোটি ২০ লাখ টাকা। এই অর্থ ব্যয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
এ ছাড়া সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) অষ্টম শ্রেণি, দাখিল অষ্টম শ্রেণি ও কারিগরি অষ্টম শ্রেণির বিনা মূল্যের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ৬০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ জন্য ব্যয় হবে ২৪৫ কোটি ৬৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। দেশীয় প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের সাবিক অ্যাগ্রো-নিউট্রিয়েন্টস কম্পানি থেকে এই সার কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এতে ব্যয় হবে ১২০ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার টাকা।