এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর ঘণ্টাখানেক পর লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করলেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যেতে তিনি কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ উড়োজাহাজ ‘রয়েল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে’ যাত্রা করছেন।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা ছাড়ে খালেদা জিয়াকে বহনকারী বিশেষ বিমান। লন্ডন পৌঁছানোর আগে প্রায় দীর্ঘ আট ঘণ্টার ভ্রমণে দোহায় যাত্রাবিরতি করবেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
এর আগে খালেদার লন্ডন যাত্রা ঘিরে বিকেল থেকেই দলে দলে নেতাকর্মীরা গুলশানে জড়ো হতে থাকেন। সন্ধ্যার পর খালেদা জিয়ার বাসভবনে প্রবেশ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
খালেদা জিয়াকে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানাতে গুলশানসহ বিমানবন্দরের পথে রাস্তার দুপাশে বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষকে জড়ো হন।
চোখ ও পায়ের ফলোআপ চিকিৎসার জন্য সবশেষ ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির এক মামলায় কারাবন্দি হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাকে রাখা হয় ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত ও নির্জন কারাগারে। কারাগারে থাকাকালে নানা রোগে আক্রান্ত হন বিএনপি নেত্রী। বারবার যেতে হয় হাসপাতালে।
আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরে জামিন ও মুক্তি না মেলায়, প্রাণঘাতী করোনার প্রকোপে পরিবারের আবেদনে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার কারাবাসের ২ বছর একমাস ১৩ দিন পর শর্তসাপেক্ষে ৬ মাসের অস্থায়ী মুক্তি দেন তাকে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ছয়মাস করে বাড়ানো হয় বেগম জিয়ার মুক্তির মেয়াদ।
এতদিন বাসা-হাসপাতাল, হাসপাতাল-বাসা এভাবেই কাটছিল বেগম জিয়ার জীবন। কয়েকদফা দীর্ঘদিন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকতে হয় তাকে। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা বিএনপি নেত্রীকে বিদেশ থেকে চিকিৎসক এনে দেয়া হয় চিকিৎসা। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর কয়েকদফা তারিখ পরিবর্তন হলেও শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকায় কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডনে যাচ্ছেন বিএনপি নেত্রী। এই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে আইসিইউ সুবিধা ছাড়াও রয়েছে তাৎক্ষণিক জীবন রক্ষার সব ধরনের সুবিধা।
লন্ডনে যাওয়ার আগে দেশবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া।