মো. আব্দুল আজিজ, হিলি প্রতিনিধি : দিনাজপুরের বিরামপুরে ইটের দেওয়ালের এক পিঠে সনাতনী মন্দির ও অপর পিঠে ইসলামী মাদরাসা। দুই ধর্মের মতবিরোধ ছাড়াই সম্প্রীতির বিরল মেলবন্ধন হিসাবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। হিন্দু ধর্মের পুরোহিত ও মুসলিম ধর্মের মাদরাসা প্রধানের সমন্বয়ে চলে পূজা-অর্চনা এবং কুরআন তিলাওয়াত।
দিনাজপুরের বিরামপুর পৌর শহরের শালবাগান কালীবাড়িতে রয়েছে সর্বজনীন কালী মন্দির। সেই চত্বরে দুর্গাপূজাও উৎযাপন করা হয়। ইটের প্রাচীর দিয়ে ঘেরা এই মন্দিরটির উত্তর দেওয়ালের অপর দিকে ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় ছালেহিয়া দারুস সুন্নাহ এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিং হাফেজিয়া মাদরাসা।
এ মাদরাসায় ৪৩ জন ছাত্র ইসলামী শিক্ষায় নিয়োজিত রয়েছে। সূচনালগ্ন ১৩৩৭ সাল থেকে মন্দিরে পূজা অর্চনা এবং হাফেজিয়া মাদরাসায় কুরআন শিক্ষার কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘ তিন যুগ সহাবস্থানে থেকে ধর্মীয় কার্যক্রম চললেও সেখানে কখনও কোনো মতবিরোধের সৃষ্টি হয়নি। বরং হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পূজা-পার্বণে মুসলিমদের সহযোগিতা স্থানীয় হিন্দুদের উজ্জীবিত করে রাখে।
বিরামপুর ছালেহিয়া দারুস সুন্নাহ এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিং হাফেজিয়া মাদরাসার প্রধান শিক্ষক ওয়াজেদুল ইসলাম বলেন, মাদরাসা প্রতিষ্ঠার পর থেকে কোনো দিন তাদের লেখাপড়া ও কুরআন শিক্ষার কাজে কেউ ব্যাঘাত সৃষ্টি করেনি। দেয়ালের অপর পিঠে অবস্থিত মন্দিরের পুরোহিত ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কমিটির লোকজনের সঙ্গে সুমধুর সম্পর্ক বিরাজ করছে।
বিরামপুর সার্বজনীন কালী মন্দিরের পুরোহিত জগদীশ সাধু বলেন, ৫০ বছর ধরে এই মন্দিরে পূজা অর্চনার কাজ করে আসছেন। কোনো দিন কেউ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেনি। বরং এলাকার মুসলিমরা তাদের সহযোগিতা করে থাকেন। মন্দিরের পুরোহিত ও মাদরাসার শিক্ষকের সমন্বয়ের মাধ্যমে চলে হিন্দুদের পূজা-পার্বণ এবং মুসলিমদের ধর্মীয় কাজ।-ঢাকা পোস্ট