বুধবার, ২২ জানুয়ারী, ২০২৫, ১১:৫৮:৩০

এবার ধাপে ধাপে বাংলাদেশ থেকে ১৮ হাজার কর্মী নেবে যে দেশ

এবার ধাপে ধাপে বাংলাদেশ থেকে  ১৮ হাজার কর্মী নেবে যে দেশ

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : মালয়েশিয়া যেতে না পারা কর্মীদের দেশটিতে পাঠাতে ইতিবাচক অগ্রগতি আছে বলে দাবি করেছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব মো. রুহুল আমিন। তিনি বলেন, যাঁরা যেতে পারেননি, তাঁদের মালয়েশিয়ায় পাঠানো এবং রিক্রুটিং এজেন্সির কাছ থেকে তাঁদের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করা নিয়ে কাজ করছে মন্ত্রণালয়। খুব শিগগির কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হতে পারে। ধাপে ধাপে মালয়েশিয়া যাবেন ১৮ হাজার কর্মী।

মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বুধবার মন্ত্রণালয়ের নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ কথা বলেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব। এর আগে সকাল ৯টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার মোড়ে সার্ক ফোয়ারা চত্বরের এক পাশ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন মালয়েশিয়া যেতে ইচ্ছুক কর্মীরা। বেলা সোয়া ১১টার দিকে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। এরপর তাঁরা মিছিল নিয়ে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সামনে অবস্থান নেন।

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব বলেন, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের কারিগরি কমিটি ও মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কারিগরি কমিটি দুই দফা বৈঠক করেছে ইতিমধ্যে। বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে এবং এতে অগ্রগতিও আছে। ফেব্রুয়ারিতে আরেকটা বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে মালয়েশিয়া একমত হয়েছে। আগামী এপ্রিলের মধ্যে এটি চূড়ান্ত হবে বলে আশা করছেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, মালয়েশিয়ার কাছে কর্মীদের তালিকা পাঠানো হয়েছে। আলোচনা শুরু হয়েছে, চলছে। পদ্ধতি এখনো ঠিক হয়নি। মালয়েশিয়ার মন্ত্রী পর্যায়ে প্রস্তাবগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। তারা সিদ্ধান্ত দিলে ১৫ দিনের মধ্যেই কর্মী পাঠানো শুরু হবে। প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হলে প্রবাসীদের জানানো হবে এবং তাঁদের পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। তবে চেষ্টা করা হচ্ছে, কর্মীদের যেতে নতুন করে যাতে খরচের বোঝা তৈরি না হয়।

সবশেষ ২০২২ সালে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার চালুর পর থেকে একটি সিন্ডিকেটের (চক্র) বিরুদ্ধে বাজার নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার একপর্যায়ে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চাপে বিদেশি কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেয় মালয়েশিয়া। এর আগে কর্মীদের প্রবেশে ২০২৪ সালের ৩১ মে পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। সব প্রক্রিয়া শেষে চূড়ান্ত ছাড়পত্র নিয়েও ওই সময়ের মধ্যে মালয়েশিয়া যেতে পারেনি ১৬ হাজার ৯৭০ জন কর্মী। যদিও আন্দোলনরত কর্মীরা সংখ্যাটি ১৮ হাজার বলে দাবি করছেন। এসব কর্মীদের টাকা রিক্রুটিং এজেন্সির কাছ থেকে আদায়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সরকার।

এ–সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রবাসীকল্যাণ সচিব বলেন, ২ দিন আগপর্যন্ত ৮১ শতাংশ কর্মীর টাকা ফেরত দিয়েছে রিক্রুটিং এজেন্সি। মন্ত্রণালয়ে তারা কর্মীর স্বাক্ষরসহ তালিকা জমা দিয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে টাকা পরিশোধের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া আছে। যারা টাকা ফেরত দেবে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রবাসীকল্যাণ ভবনের সামনে অবস্থানরত আন্দোলনকারী ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রবাসীকল্যাণ সচিব বলেন, ‘গণমাধ্যমের মাধ্যমে অগ্রগতি জানানো হলো কর্মীদের। তাঁরা এলে তাঁদেরও জানানো হবে। আর কর্মীরা সিন্ডিকেট চান না, আপনিও চান না, আমরাও চাই না।’

প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সামনে বেলা তিনটার সময়ও রাস্তায় অবস্থান করে স্লোগান দিতে দেখা গেছে আন্দোলনকারীদের। ‘সিন্ডিকেটের কালো হাত, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’; ‘মোদের দাবি একটাই, মালয়েশিয়া যেতে চাই’; ‘প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ চাই, মালয়েশিয়া যেতে চাই’ ও ‘এক দফা, এক দাবি, মালয়েশিয়া কবে নিবি।’—এমন স্লোগানেই সকালে কারওয়ান বাজারে জড়ো হন মালয়েশিয়া যেতে না পারা শ খানেক কর্মী। কারওয়ান বাজার মোড়ের সার্ক ফোয়ারা চত্বরে অবস্থান নেন তাঁরা।

আজ সকাল ৯টা থেকে সার্ক ফোয়ারার রাস্তায় অবস্থান নিয়ে স্লোগান দেন মালয়েশিয়া যেতে না পারা এসব কর্মীরা। কেউ কেউ আসেন কাফনের কাপড় পরে। এভাবে রাস্তা আটকে দেওয়ার জন্য যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। যানজট শুরু হয়ে যায়। বেলা ১১টার দিকে পুলিশ এসে এসব কর্মীদের এক পাশে সরিয়ে দেয়। তারপর যান চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কর্মীরা প্রবাসীকল্যাণ ভবনের সামনের সড়কে এসে অবস্থান নেন। পরে পুলিশের অনুরোধে বেলা দেড়টার দিকে চারজনের একটি প্রতিনিধিদল আলোচনার জন্য প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে যান। বেলা আড়াইটার দিকে তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে