রবিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৩:০৪:৩৩

কমলো ব্রয়লার মুরগির দাম, গরুর মাংস কত জানেন?

কমলো ব্রয়লার মুরগির দাম, গরুর মাংস কত জানেন?

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : শীতকালীন শাকসবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় রাজধানীতে এখন অনেকটাই স্থিতিশীল সবজির বাজার। তবে উল্টো চিত্র দেখা গেছে মাছ-মাংসসহ নিত্যপণ্যের বাজারে। শবেবরাতের আগে মাংসের দাম আরও বাড়তে পারে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

বর্তমানে বাজারে সব সবজির দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন ক্রেতারা।

আজ বাজারে প্রতি কেজি টমেটো ৪০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, শিম ৩০-৪০ টাকা, লম্বা বেগুন ৪০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৫০ টাকা, কালো গোল বেগুন ৫০-৬০ টাকা, শসা ৩০-৪০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, মুলা ২০ টাকা, লাল মুলা ৩০ টাকা, শালগম ২০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, পটোল ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, বরবটি ৬০-৭০ টাকা, পেঁয়াজকলি ২০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৫০-৬০ টাকা, ধনেপাতা ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে প্রতিটি লাউ ৬০-৭০ টাকা, চাল কুমড়া ৪০-৫০ টাকা, ফুলকপি ২০ টাকা, বাঁধাকপি ২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি কাঁচা কলা ২৫ টাকা, লেবু ২৫-৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

গত সপ্তাহের তুলনায় বেশির ভাগ সবজির দামই প্রতি কেজিতে কমেছে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া কয়েকটি সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। 

এ সময় বাজার করতে আসা শাহেদ আহমেদ বলেন, ‘সবজির দাম এখন অনেক কমেছে। এরকম থাকা উচিত সবসময়। এই দাম থাকলে সবাই খেয়ে-পরে বাঁচতে পারবে।’

বিক্রেতা মো. শাহ আলম বলেন, ‘এখন সবজির মান ভালো, দামও কম। আমরা আগে যেসব সবজি বেশি দামে কিনে আনতাম সেগুলো দেখতে এখনকার মতো এত টাটকা ছিল না। কিন্তু কিনে আনতে হতো বেশি দামেই।’

আজ বাজারে সব ধরনের আলুর দাম কমেছে। একইসঙ্গে কমেছে চায়না আদার দামও। আজ মান ও আকারভেদে প্রতি কেজি নতুন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকায়। এর মধ্যে ছোট আকারের পেঁয়াজ ৫০ টাকা এবং বড় আকারের পেঁয়াজ ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি নতুন সাদা আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা, নতুন লাল আলু ২৫ টাকায়। নতুন বগুড়ার আলু ৩০-৩৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আজ দেশি রসুন ২৪০ টাকা, চায়না রসুন ২২০-২৩০ টাকা, চায়না আদা ২০০-২২০ টাকা, নতুন ভারতীয় আদা ১২০ দরে বিক্রি হচ্ছে।

এ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় আজ মানভেদে প্রতি কেজিতে নতুন দেশি সাদা আলুর দাম ৫-১০ টাকা, নতুন দেশি লাল আলুর দাম ৫-১০ টাকা এবং নতুন বগুড়ার আলুর দাম ১৫-২০ টাকা কমেছে। এছাড়া প্রতি কেজিতে চায়না আদার দাম কমেছে ২০-৪০ টাকা।

আজ ব্রয়লার ও কক মুরগির দাম কিছুটা কমলেও তা স্বস্তিদায়ক নয়। তাছাড়া গরু ও খাসির মাংসের দাম কমেনি। একইসঙ্গে অপরিবর্তিত রয়েছে লেয়ার ও দেশি মুরগির দাম।

আজ প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ টাকায়। খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ওজন অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি ১৯৩-২০০ টাকা, কক মুরগি ৩০৫-৩১৫ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৮৮-২৯০ টাকা, দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা কেজি দরে। ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন লাল ডিম ১৩০ টাকা, সাদা ডিম ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গত সপ্তাহের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, আজ প্রতি কেজিতে ব্রয়লার মুরগি দাম ৩-১০ টাকা, কক মুরগির দাম ১৫-৩৫ টাকা কমেছে। এছাড়া গরু ও খাসির মাংস, দেশি ও লেয়ার মুরগি দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। একইসঙ্গে আজ ফার্মের মুরগির লাল ও সাদা ডিমের দামও অপরিবর্তিত রয়েছে। 

মুরগির দাম কেন সহনীয় পর্যায়ে আসছে না জানতে চাইলে বিক্রেতা শাহজাহান বলেন, ‘দাম কমেছে। তবে এটা ওঠানামার মধ্যেই থাকবে। তাছাড়া আমাদের কিছু করার নাই। আমরা যেমন দামে কিনি তার থেকে কিছুটা লাভ রেখে বিক্রি করি।’
এদিকে গরু ও খাসির মাংসের বিক্রেতারা দাম না কমার কারণ হিসেবে বরাবরের মতো জানান, চাহিদা বেশি সাপ্লাই কম, তাই দাম বেড়েছে। শবেবরাতের আগে এই দাম আরও বলেও জানান এই বিক্রেতারা।

আজ আকার ও ওজন অনুযায়ী ইলিশ মাছ ৭০০-২ হাজার ২০০ টাকা, রুই ৩৫০-৫৫০ টাকা, কাতল ৪০০-৬০০ টাকা, কালিবাউশ ৪৫০-৬০০ টাকা, চিংড়ি ৮০০-১ হাজার ৫০০ টাকা, কাঁচকি ৪০০ টাকা, কৈ ২২০-১ হাজার ২০০ টাকা, পাবদা ৪০০-৬০০ টাকা, শিং ৪০০-১০০০ টাকা, টেংরা ৫০০-৮০০ টাকা, বোয়াল ৬০০-১ হাজার ২০০ টাকা, শোল ৮০০-১ হাজার ১০০ টাকা, মেনি ৬০০-৭০০ টাকা, চিতল ৬০০-৯০০ টাকা, সরপুঁটি ২৫০-৪০০ টাকা, রূপচাঁদা ৮০০-১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আজ বাজারে মুদিপণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। কেবল ছোলার দাম কমেছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা করে।

আজ ছোট মসুর ডাল ১৩৫ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেসারি ১১০ টাকা, বুটের ডাল ১৩৫ টাকা, মাষকলাই ডাল ১৯০ টাকা, ডাবলি ৭০ টাকা, ছোলা ১২০ টাকা, প্যাকেট পোলাও চাল ১৫০ টাকা, খোলা পোলাও চাল মানভেদে ১১০-১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৫৭ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১২৫ টাকা, খোলা চিনি ১২৫ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১১৫ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায়।

এদিকে এখনও সয়াবিন তেলের সাপ্লাই স্বাভাবিক হয়নি বলে জানান বিক্রেতারা। অন্য পণ্য না কিনলে কোম্পানিগুলো সয়াবিন তেল দেয় না বলেও অভিযোগ করেন তারা।

সেলিম জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা মো. সেলিম বলেন, ‘আমরা এখনও ঠিকমতো তেল বিক্রি করতে পারছি না। আমাদের আগের মতো তেল দিচ্ছে না কোম্পানিগুলো। আবার তেলের সঙ্গে অন্য পণ্য না কিনলে তেল দেয় না। এভাবেই চলছে।’

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে