এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগি এবং আলুর দাম কিছুটা কমেছে। তবে আগের মতোই চড়া রয়েছে চালের দাম। আর পেঁয়াজের দামও পাইকারিতে ২-৩ টাকা করে বেড়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও তালতলা ও মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
বিক্রেতারা জানান, দুই সপ্তাহ ধরে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কমতির দিকে। সপ্তাহ দুই আগে এক কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ২০০-২১০ টাকা। এরপর সাত-আট দিন আগে দাম কেজিতে ১০ টাকা করে কমেছিল। আর গতকাল তা আরও ১০ টাকা কমে প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হয়েছে ১৮০-১৯০ টাকায়। অর্থাৎ দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির কেজিতে দাম কমেছে ২০ টাকা।
অন্যদিকে, গত সপ্তাহে প্রতি কেজি সোনালির দাম ছিল ৩০০-৩৩০ টাকা। গতকাল এই প্রজাতির মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৮০-৩১০ টাকা দরে। সোনালি মুরগির দামও কেজিতে ২০ টাকা করে কমেছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। বাজারভেদে এক ডজন ডিমের দাম রাখা হয় ১২৫-১৩০ টাকা। পাড়া-মহল্লার দোকানে অবশ্য আরও ৫-১০ টাকা বেশি দাম রাখা হয়।
বাজারে এখন মূলত নতুন দেশি পেঁয়াজই বিক্রি হচ্ছে। হাতে গোনা কিছু দোকানে আমদানি করা পেঁয়াজ পাওয়া যায়। আর সরবরাহ বেশি থাকায় পেঁয়াজের দাম তুলনামূলক কম। খুচরা পর্যায়ে গতকাল এক কেজি পেঁয়াজ ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা গত সপ্তাহেও একই ছিল। অবশ্য কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত দুই দিনে পাইকারি পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম দুই-তিন টাকা করে বেড়েছে। যদিও এর প্রভাব এখনো খুচরায় দেখা যায়নি। অন্যান্য মসলা পণ্যের মধ্যে প্রতি কেজি রসুন ২৩০-২৪০ টাকা, আমদানি করা আদা ২৩০-২৪০ টাকা ও দেশি আদা ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে এখন মূলত নতুন দেশি পেঁয়াজই বিক্রি হচ্ছে। হাতে গোনা কিছু দোকানে আমদানি করা পেঁয়াজ পাওয়া যায়। আর সরবরাহ বেশি থাকায় পেঁয়াজের দাম তুলনামূলক কম।
বাজারে আলুর দাম এখন বেশ কম। গতকাল বাজারভেদে এক কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ২০-২৫ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৫-৩০ টাকা। অর্থাৎ, কেজিতে পাঁচ টাকা দাম কমেছে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুসারে, গত এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম কমে প্রায় অর্ধেক হয়েছে। গত বছরের তুলনায়ও আলুর দাম এখন কম। টিসিবির হিসাবে, গত বছরের এই সময়ে এক কেজি আলুর দাম ছিল ৪০-৫০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে নতুন আলুর সরবরাহ অনেক বেড়েছে। এ কারণে আলুর দামও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
মাসখানেক আগে বাজারে চালের দাম কেজিতে পাঁচ থেকে আট টাকা পর্যন্ত বেড়েছিল। পরে সরকার চালের শুল্ক কমায় ও আমদানি করার অনুমতি দেয়। তবে এসব উদ্যোগেও চালের দাম কমেনি।
বিক্রেতারা জানান, ধানের দাম বাড়ার কারণে চালকলমালিকেরা চালের দাম বাড়িয়েছেন। গতকাল ঢাকার তিন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক কেজি মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মতো সরু চাল ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি মোটা চাল ৫৪ থেকে ৫৮ টাকা ও মাঝারি ধরনের ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ চাল ৬০-৬৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুসারে, গত এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম কমে প্রায় অর্ধেক হয়েছে। গত বছরের তুলনায়ও আলুর দাম এখন কম।
ভোক্তাদের স্বস্তির জায়গা এখন সবজির বাজার। কারণ, শীতের মৌসুম থাকায় বাজারে সবজির সরবরাহ ভালো; দামও কম। অবশ্য তিন-চার সপ্তাহ ধরেই বাজারে কম দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে। শীতের সবজির মধ্যে বর্তমানে টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকলি, শালগম, মুলা প্রভৃতি পণ্যের চাহিদা বেশি।
গতকাল বাজারভেদে প্রতিটি ফুলকপি ১৫-২০ টাকা, বাঁধাকপি ও ব্রকলি ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিকেজি মুলা ২০ টাকা; মিষ্টিকুমড়া, শালগম ও পেঁয়াজ কলি ৩০-৩৫ টাকা; শিম ২০-৪০ টাকা; শসা, বেগুন, টমেটো ও লাউ ৩০-৬০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা এবং কাঁচামরিচ ৪০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য বাজারে মাছ-মাংসের দামে তেমন পরিবর্তন নেই। গতকাল প্রতি কেজি কই (চাষের) ২৮০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, পাঙাশ ২২০ টাকা, রুই ৩৫০-৩৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া এক কেজি আকারের ইলিশের দাম রাখা হচ্ছে ২৭০০-২৮০০ টাকা।
রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা ও একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী হুমায়ূন কবির বলেন, ‘আমাদের মতো সীমিত আয়ের মানুষের জন্য এক শ টাকা ব্যয় বাড়লেও তা অনেক। প্রায় এক মাসের বেশি সময় ধরে চালের দাম বাড়তি। এই দাম কমানোর উদ্যোগ প্রয়োজন।’