এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের দাফন করে গেছেন ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট। ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে। দাফন হয়েছে দিল্লিতে। মুর্দা শেখ হাসিনা কাফন ফুড়ে মাঝেমধ্যে কথা বলে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছেন। সেই চেষ্টা কখনও সফল হবে না।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজার শহরের গোলচত্বর মাঠে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা কথা দিয়েছেন ডিসেম্বরেরই আগেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে' এমনটি উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, 'নিয়ত যদি সাফ থাকে তাহলে অনতিবিলম্ব নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। মানুষ রক্ত দিয়েছে এই দেশে হারানো গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য। তারা জীবন দিয়েছে একটি গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য।'
‘কিছু উপদেষ্টা জনগণের পালস্ বুঝেন না' মন্তব্য করে তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খা ছিল দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ। মানুষ স্বস্তিতে থাকতে চায়। তাই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং দেশের অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ জরুরি।
সোমবার বিএনপির এই সমাবেশ ঘিরে দুপুর ১টার পর বিভিন্ন স্থান থেকে গাড়ি বহর ও মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে জড়ো হতে থাকেন নেতাকর্মীরা। এ সময় রং-বেরঙের ব্যানার, ফেস্টুন হাতে নিয়ে শ্লোগানে শ্লোগানে মুখর হয়ে উঠে সমাবেশস্থল। দুপুর ২ টায় শুরু হয় সমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা।
মাথার ওপরে কড়া রোদ। তবুও সমাবেশ শুরুর আগেই নেতাকর্মীদের ঢল কক্সবাজার শহরের গোলচত্বর মাঠে। খোলা মাঠে অধীর আগ্রহে লক্ষাধিক মানুষ। মাঠ ছাড়িয়ে জনসমুদ্রের ঢেউ পৌঁছে যায় প্রবেশপথের ওপরে, এমনকি সীমানা দেয়ালের বাইরেও।
গত ১৬ বছরে রাজনীতির মাঠে এত বড় পরিসরে কক্সবাজারে সমাবেশ করার সুযোগ পায়নি বিএনপি। তাই নেতাকর্মীদের উৎসাহ-উদ্দীপনা অন্তহীন। জেলার ৯ উপজেলার ১৪টি সাংগঠনিক ইউনিটের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ জনগণও যোগ দিয়েছেন সমাবেশে।
নেতাকর্মীরা জানিয়েছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সহনীয় পর্যায়ে রাখা, অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে এবং রাষ্ট্রে পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবিলাসহ বিভিন্ন জন দাবি সামনে রেখে এই সমাবেশ।
বিকেল সাড়ে ৩ টা ৩৫ মিনিটের দিকে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দীন আহমেদ।
জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক লুৎফুর রহমান কাজল, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক হারুন-অর-রশীদ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল, কেন্দ্রীয় সদস্য আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজউল্লাহ ফরিদসহ জেলা, উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা।
পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রায় ১৬ বছর পর গত ৮ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারে সরকারি করেজ মাঠে বড় সমাবেশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। যেখানে দলটির আমির ডা: শফিকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এমন প্রেক্ষাপটে জেলা বিএনপির আজকের সমাবেশ আলাদা গুরুত্ব এবং আগ্রহ তৈরি করেছে রাজনৈতিক মহলে।