বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ১১:৫৯:৫১

২৭তম বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিত ১১৩৭ জনের চাকরি ফেরতের নির্দেশ

২৭তম বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিত ১১৩৭ জনের চাকরি ফেরতের নির্দেশ

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : প্রায় ১৭ বছর আগে ২৭তম বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিত ১১৩৭ জনের চাকরি ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। 

বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে আপিল শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক।

আইনজীবীরা বলেন, দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর আপিল মঞ্জুর করে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন সর্বোচ্চ আদালত। রায় অনুযায়ী ২৭তম বিসিএসে নিয়োগ বঞ্চিত ১১৩৭ জনকে ৯০ দিনের মধ্যে নিয়োগ দিতে হবে।

এর আগে, গতকাল বুধবার ২৭তম বিসিএসে নিয়োগ বঞ্চিত ১১৩৭ জনের চাকরি ফেরত চেয়ে আপিল শুনানি শেষ হয়। এ বিষয়ে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়। 

গত বছরের ৭ নভেম্বর ২৭তম বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিত ১১৩৭ জনের পক্ষে করা আপিল শুনবেন বলে আদেশে বলা হয়।

এ সংক্রান্ত রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আলাদা আবেদনের শুনানি নিয়ে লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ।

ওই বিসিএসে প্রথমবারের মৌখিক পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত বৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখে ২০১০ সালের ১১ জুলাই আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ১১৩৭ জনের পক্ষে ১৪০ জন আলাদাভাবে আবেদন করেন।

সেদিন আদেশের পর আবেদনকারীদের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন বলেন, এক-এগারোর সরকারের সময় ২৭তম বিসিএসে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১১৩৭ জন চূড়ান্ত সুপারিশের পর চাকরিতে প্রবেশ করবেন- এ পর্যায়ে ওই সিদ্ধান্ত হয়। পরে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়ে মামলা হয়। দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। 

দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া বৈধ বলেন অন্য একটি বেঞ্চ। দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আলাদা লিভ টু আপিল করে সরকারপক্ষ। লিভ টু আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে ২০১০ সালে রায় দেন আপিল বিভাগ। এই রায়ে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া সঠিক বলা হয়।

আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে নিয়োগবঞ্চিত ১১৩৭ জনের পক্ষে ১৪০ জন আলাদা তিনটি আবেদন করেন বলে জানান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন। তিনি বলেন, দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ছিল না। এমনকি দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি পিএসসি আইন ও বিধিতে নেই।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৮ সালের ৩ জুলাই ২৭তম বিসিএস পরীক্ষার প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিলের সিদ্ধান্ত বৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। ২০০৯ সালের ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্টের অন্য একটি বেঞ্চ। 

প্রথম রায়ের বিরুদ্ধে নিয়োগবঞ্চিত ২৫ জন আপিল বিভাগে দুটি লিভ টু আপিল করেন। দ্বিতীয় রায়ের বিরুদ্ধে তিনটি লিভ টু আপিল করে সরকার। এক্ষেত্রে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন ২০৫ জন। কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে সরকারের লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে ২০১০ সালের ১১ জুলাই রায় দেন আপিল বিভাগ।

২০০৭ সালের ২১ জানুয়ারি ২৭তম বিসিএসের প্রথম মৌখিক পরীক্ষায় ৩৫৬৭ জন উত্তীর্ণ হন। ওই বছরের ৩০ মে প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ১ জুলাই প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিল করে পিএসসি। ওই বছরের ২৯ জুলাই দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২০০৮ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষায় ৩২২৯ জন উত্তীর্ণ হন। পরে তাদের চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে