শুক্রবার, ২১ মার্চ, ২০২৫, ০৩:৪৮:০৩

রাজধানীর বাজারে হঠাৎ ইলিশের দাম কত হলো জানেন?

রাজধানীর বাজারে হঠাৎ ইলিশের দাম কত হলো জানেন?

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : চালের বাজারের অস্থিরতা কাটছেই না। মাঝে বেশকিছুদিন স্থিতিশীল থাকলেও ফের বাড়ছে দাম। এদিকে অন্যান্য মাছের দাম তুলনামূলক স্থিতিশীল থাকলেও চড়েছে ইলিশের বাজার।

প্রবাদ আছে ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’। তবে চাল ও মাছের চড়া দামে সেই প্রবাদ যেন অনেকটাই ফিকে হয়ে যাচ্ছে। কেননা অস্থির চালের বাজারে স্বস্তি ফেরেনি, বরং আরও বেড়েছে কোনো কোনো চালের দাম।

শুক্রবার (২১ মার্চ) রাজধানীর নয়াবাজার ও কারওয়ানবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে আরেক দফা বেড়েছে মধ্যম আয়ের ক্রেতাদের মধ্যে জনপ্রিয় সরু মিনিকেট চালের দাম। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে এ চালের দাম বেড়েছে ৫-৬ টাকা পর্যন্ত।

চালের এই চড়া দামে নাজেহাল ক্রেতারা। তারা জানান, রোজার সময় চালের চাহিদা কম থাকে। এ সময় দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। এটি ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের অংশ। রমিজ নামে এক ক্রেতা বলেন, রমজানেও ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বাজার লুট করছে। আর পকেট কাটছে ভোক্তার।

চালের বাজারের এই অস্থিরতা অকপটে স্বীকার করেন খুচরা ব্যবসায়ীরাও। তারা বলছেন, মিনিকেট চালের মজুত শেষের দিকে হওয়ায় ফের দাম বাড়ছে। তবে স্থিতিশীল রয়েছে মাঝারি ও মোটা চালের দাম। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের চাল ব্যবসায়ী রাকিব বলেন, মিনিকেট চালের দাম অনেক বেড়েছে। কেজিতে অন্তত ৫ টাকা। সেইসঙ্গে নাজিরশাইলের দামও কেজিতে এক–দুই টাকা বাড়তি।

আর রাজধানীর কারওয়ানবাজারের বরিশাল রাইছ এজেন্সির বিক্রেতা জানান, বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট ৮২-৮৬ টাকা, আটাইশ ৫৮-৬০ টাকা, মোটা স্বর্ণা ৫২-৫৬ টাকা, নাজিরশাইল ৭৬-৮৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১১৬-১১৮ টাকায়।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া বলেন, এই মুহূর্তে চালের বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। দাম বাড়াচ্ছেন মিল মালিকরা। সরকার বিদেশ থেকে চাল আমদানি করছে ঠিকই। তবে চালের বাজারে ও মিলগুলোতে পর্যাপ্ত মনিটরিং করছে না। মনিটরিং না বাড়ালে দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।

দেশের চালের বাজারের যখন এই হাল তখন মাছে-ভাতে বাঙালির কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলছে মাছের দামও। কেননা সপ্তাহ ব্যবধানে আরও অস্থির হয়েছে ইলিশের বাজার। কেজিপ্রতি ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সুস্বাদু এ রুপালি মাছের দাম।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ইলিশ বিক্রেতা মো. শুকুর আলী বলেন, বাজারে ইলিশের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বাড়ছে। দিন দিন ইলিশের দাম ভোক্তার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এতে কমছে বেচাবিক্রিও।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২২০০ টাকায়। এছাড়া দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ৩০০০ টাকা, ১ কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২৬০০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৮০০-২০০০ টাকা হারে বিক্রি হচ্ছে, আর ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জন্য গুনতে হচ্ছে ১৪০০-১৫০০ টাকা পর্যন্ত।

এদিকে হাতেগোনা কয়েকটির দাম ওঠানামা করলেও স্থিতিশীল রয়েছে অন্যান্য মাছের দাম। তবে সেগুলো আগে থেকেই চড়া বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। বাজারে প্রতি কেজি রুই ৩৫০ থেকে ৪২০ টাকা, কাতল ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের শিং ৫০০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২২০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া প্রতি কেজি বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, পোয়া ৪৫০ টাকা, আইড় ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, টেংরা ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা,  দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা ও শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েরই। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পান।

আর বিক্রেতারা বলছেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে