সোমবার, ০৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:৩৫:২০

আমি আন্তরিকভাবে আশা করি, আপনি এই অনুরোধটি মঞ্জুর করবেন: ড. ইউনূস

আমি আন্তরিকভাবে আশা করি, আপনি এই অনুরোধটি মঞ্জুর করবেন: ড. ইউনূস

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বাংলাদেশি পণ্যে শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি পাঠিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।  

সোমবার (৭ এপ্রিল) পাঠানো এই চিঠিতে বাংলাদেশি পণ্যে শুল্ক পুনর্বিবেচনার জন্য আলোচনা করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে উদ্দেশ্য করে চিঠিতে ড. ইউনূস লিখেছেন, আমি আপনাকে আশ্বস্ত করার জন্য লিখছি যে বাংলাদেশে আমরা আপনার বাণিজ্য অ্যাজেন্ডাকে সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেব।

আপনার শপথ গ্রহণের পরপরই আমি আমার উচ্চ প্রতিনিধিকে ওয়াশিংটন ডিসিতে পাঠিয়েছিলাম, যাতে ১৭ কোটি জনসংখ্যার দ্রুত বর্ধনশীল বাংলাদেশের বাজারে আমেরিকান পণ্য রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে আমাদের ইচ্ছা প্রকাশ করা যায়। আমরাই প্রথম দেশ যারা এই ধরনের সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আমরাই প্রথম দেশ যারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির জন্য বহু বছর মেয়াদি চুক্তিতে প্রবেশ করেছি। এলএনজি রপ্তানির অনুমতির ওপর স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার পর থেকে আমরা আরও সহযোগিতার সন্ধান করছি। তখন থেকেই আমাদের কর্মকর্তারা মার্কিন প্রতিপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশে আমেরিকান পণ্য রপ্তানি দ্রুত বাড়ানোর জন্য সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ চিহ্নিত করার জন্য কাজ করছেন।

চিঠিতে ড. ইউনূস লিখেছেন, আমাদের বাণিজ্য উপদেষ্টা পদক্ষেপের বিশদ বিবরণ সম্পর্কে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। আমাদের পদক্ষেপের একটি মূল লক্ষ্য হলো- তুলা, গম, ভুট্টা ও সয়াবিনসহ মার্কিন কৃষি পণ্যের আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো, যা মার্কিন কৃষকদের আয় ও জীবিকা নির্বাহে অবদান রাখবে। মার্কিন তুলার বাজারে গতি বাড়ানোর জন্য আমরা বাংলাদেশে গুদামজাতকরণ সুবিধা চূড়ান্ত করছি, যেখানে তাদের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার থাকবে।

আপনি জেনে খুশি হবেন যে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে বেশিরভাগ মার্কিন পণ্য রপ্তানির ওপর বাংলাদেশে সর্বনিম্ন শুল্ক রয়েছে। আমরা আমেরিকান কৃষি পণ্যের পাশাপাশি স্ক্র্যাপ ধাতুর ওপর শূন্য শুল্ক অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা গ্যাস টারবাইন, সেমিকন্ডাক্টর ও চিকিৎসা সরঞ্জামের মতো শীর্ষস্থানীয় মার্কিন রপ্তানি পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক হ্রাসের জন্য কাজ করছি। আমরা মার্কিন রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্ক বহির্ভূত বাধাগুলোর একটি সারিও অপসারণ করছি। আমরা কিছু পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা দূর করছি। প্যাকেজিং, লেবেলিং ও সার্টিফিকেশন প্রয়োজনীয়তাগুলোকে যুক্তিসংগত করছি। কাস্টমস পদ্ধতি ও মান সহজীকরণের মতো বাণিজ্য সুবিধামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। আমরা বাংলাদেশে স্টারলিংক চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করেছি। এই গতিবেগ বেসামরিক বিমান চলাচল এবং প্রতিরক্ষাসহ বেশ কয়েকটি উন্নত প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশে মার্কিন ব্যবসার জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা করে। আমরা আগামী তিন মাসের মধ্যে চলমান ও পরিকল্পিত পদক্ষেপগুলো সম্পন্ন করবো। মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় সময় দিন। তাই আমি আপনাকে অনুরোধ করছি যে আপনি অনুগ্রহ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির ওপর পারস্পরিক শুল্ক ব্যবস্থার প্রয়োগ তিন মাসের জন্য স্থগিত করুন।

আমি আন্তরিকভাবে আশা করি, আপনি এই অনুরোধটি মঞ্জুর করবেন। আমার সর্বোচ্চ বিবেচনার আশ্বাস গ্রহণ করুন। আপনাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সোমবার জানিয়েছেন, বাংলাদেশি পণ্যে শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি পাঠিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন দেশের আমদানি পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এ ঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশি পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশ করা হয়েছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে