শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫, ০৩:০৪:৪৪

সোহাগের স্ত্রী কবরের পাশে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন, বলছিলেন,আমার সন্তানদের কী হবে এখন?’

সোহাগের স্ত্রী কবরের পাশে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন, বলছিলেন,আমার সন্তানদের কী হবে এখন?’

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ঢাকার মিডফোর্ড এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন বরগুনার লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৪২)। চাঁদা না দেওয়ার জেরে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। শুক্রবার সকালে তার মরদেহ বরগুনায় পৌঁছালে এলাকাজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। বিকেলে সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে মা’র কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।

সোহাগের স্ত্রী লাকী আক্তার কবরের পাশে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীকে কেন এমন নির্মমভাবে হত্যা করা হলো? আমার সন্তানদের কী হবে এখন?’

সন্তান সোহানা (১৪) ও সোহান (১১) এখনও বুঝে উঠতে পারছে না কেন তাদের বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। কাঁদতে কাঁদতে সোহানা বলে, ‘আমার বাবা বলেছিলেন, ‘আমি কষ্ট করে রোজগার করি সন্তানদের জন্য, তোদের কেন টাকা দেব?’ আর এজন্যই ওরা বাবাকে মেরে ফেলেছে। আমরা চাই এই হত্যার বিচার, চাই ফাঁসি।’

নিহতের ভাগনি বিথী আক্তার জানান, প্রায় ১৫ বছর ধরে সোহাগ মিডফোর্ডে ‘মেসার্স সোহানা মেটাল” নামে একটি ব্যবসা পরিচালনা করতেন। দীর্ঘদিন ধরেই একটি চক্র তার কাছে মাসিক দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় গত বুধবার বাসা থেকে ডেকে নিয়ে তাকে আটকে রাখা হয় এবং শেষ পর্যন্ত পাথর দিয়ে হত্যা করা হয়।

ঘটনার প্রতিবাদে বরগুনা প্রেসক্লাবের সামনে শুক্রবার সকাল ১১টায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। বক্তারা বলেন, ‘সোহাগ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’

মাত্র সাত মাস বয়সে বজ্রপাতে বাবাকে হারান সোহাগ। মা আলেয়া বেগম তাকে নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। বহু কষ্টে সোহাগ বড় হয়ে ব্যবসা গড়ে তোলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চাঁদাবাজদের হাতে প্রাণ গেল তার।

এ হত্যাকাণ্ড ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও। বক্তারা বলেন, ‘একজন মানুষকে পরিবারের সামনে পাথর দিয়ে হত্যার মতো দুঃসাহস কীভাবে তৈরি হয়? কোথায় ছিল নিরাপত্তা ব্যবস্থা?’

পরিবার ও এলাকাবাসীর একটাই দাবি—এই নির্মম হত্যার দ্রুত বিচার।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে