এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) থাকা সত্ত্বেও যারা আয়কর রিটার্ন জমা দেন না বা রিটার্ন জমা দিয়েও কর পরিশোধ করছেন না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আয়কর কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
সোমবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর রাজস্ব ভবনে আয়োজিত রাজস্ব পর্যালোচনাসভায় তিনি এ নির্দেশ দেন। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, দেশে বর্তমানে প্রায় ৭২ লাখ টিআইএনধারী করদাতা রিটার্ন জমা দেন না এবং আরো ৩০ লাখ করদাতা রিটার্ন জমা দিলেও কর পরিশোধ করেন না।
তিনি বলেন, ‘আয়কর আদায় বাড়াতে এই ১ কোটি করদাতার কাছ থেকে তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী কর আদায় করতে হবে।
২০২৫-২৬ অর্থবছরে এই এক কোটি করদাতাকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে বলে আয়কর কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।
সভায় ঢাকার আয়কর বিভাগের সদস্য, কমিশনার/মহাপরিচালক, প্রথম ও দ্বিতীয় সচিব (আয়কর বিভাগ) উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া ঢাকার বাইরের কর্মকর্তারা জুম প্ল্যাটফরমের মাধ্যমে যুক্ত হন।
সভায় অংশগ্রহণকারী কমিশনারদের বকেয়া রাজস্ব আদায় বাড়ানোর নির্দেশ দেন আবদুর রহমান খান।
এ সময় তিনি অঞ্চলভিত্তিক কর আদায়ের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন এবং বকেয়া আদায়ে কী কী চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তা জানতে চান। পাশাপাশি রাজস্ব আদায় বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনাও দেন।
তিনি আরো বলেন, আয়কর নথিপত্র নির্ধারিত কর অঞ্চলে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে এনবিআরের নির্দেশনা অনুসারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে এবং চলতি জুলাই মাসের মধ্যেই সব নথি স্থানান্তর সম্পন্ন করতে হবে যাতে করদাতারা হয়রানিমুক্ত সেবা পান।
আবদুর রহমান খান বলেন, ‘নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কোনো মানবিক প্রভাব ছাড়া সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিরীক্ষা নির্বাচন করতে হবে।
কর আদায় নয়, বরং কর ফাঁকি রোধ করে কর সংস্কৃতি গড়ে তোলাই নিরীক্ষার মূল উদ্দেশ্য।’
টিআইএন থাকলেও যারা রিটার্ন দাখিল করছেন না, তাদের উৎসাহিত করতে এবং রিটার্ন দাখিল নিশ্চিত করতে জনবলের সর্বোচ্চ ব্যবহারেরও নির্দেশ দেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, ‘আয় ও সম্পদের বৈষম্য কমানো, ন্যায্য সমাজ প্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্র পরিচালনার প্রয়োজনীয় অর্থ জোগানে আয়কর আদায়ের হার বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। অথচ আয়কর বিভাগ এ লক্ষ্য পূরণে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে।’
সভায় তিনি উল্লেখ করেন, সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে এনবিআরের মোট রাজস্ব আদায়ের তুলনায় আয়কর সংগ্রহের হার বাড়েনি, বরং সামান্য কমেছে।
নতুন করদাতা চিহ্নিত করতে জরিপ ও সরেজমিন মূল্যায়ন কার্যক্রম আরো জোরদারের নির্দেশও দেন তিনি।
সভায় আয়কর বিভাগের সদস্য, সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের (সিআইসি) মহাপরিচালক, আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।