এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় সুস্পষ্ট অপরাধ করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে তার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই বলে দুর্নীতি দমন কমিশনকে জানিয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) নির্বাচন কমিশনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুস্পষ্টভাবে অপরাধ করেছেন। তার বিরুদ্ধে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মামলা করার সুযোগ আছে। তবে সময় অতিক্রান্ত হওয়ায় এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সচিবকে এক চিঠিতে এ বিষয় অবহিত করেছে নির্বাচন কমিশন।
দুদককে চিঠিতে আরও জানানো হয়, ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জমা দেওয়া হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুস্পষ্টভাবে অপরাধ করেছেন। হলফনামায় মিথ্যা তথ্যের বিষয়টি মনোনয়নপত্র গ্রহণ বা বাতিলসহ হলফনামা যাচাই-বাছাইয়ের সময় বা পর্যায় অতিক্রান্তে উত্থাপিত হওয়ায় এই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ নেই ইসির।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা সম্পদের মিথ্যা বর্ণনা দিয়েছেন মর্মে অভিযোগে তিনি দণ্ডবিধির ১৮১ ধারার অপরাধ সংঘটন করেছেন। ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ধারা ১৯৫(১) অনুযায়ী যে ম্যাজিস্ট্রেট বা নোটারি পাবলিকের নিকট সাবেক প্রধানমন্ত্রী মিথ্যা হলফনামা প্রদান করেছেন, সেই ম্যাজিস্ট্রেট বা তার ঊর্ধ্বতন কোনো সরকারি কর্মচারী কর্তৃক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়েরের মাধ্যমে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার সুযোগ আছে।
এর আগে ২২ মে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাখিলকৃত হলফনামায় সম্পদের ঘোষণায় অসত্য তথ্য প্রদান করায় গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর আওতায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চিঠি দিয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশন।
গত ১৮ মে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নতুন করে অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। সংস্থাটির উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমানকে প্রধান করে গঠিত টিম অনুসন্ধানের দায়িত্ব পালন করেন।
এর আগে, প্লট জালিয়াতি, বিদেশে অর্থ পাচার, প্রকল্পের অর্থ লুটপাটের একাধিক অনুসন্ধান দুদকে চলমান রয়েছে। এরইমধ্যে পূর্বাচলে প্লট জালিয়াতির মামলায় চার্জশিট দাখিল করলে আদালত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
গত ১০ মার্চ পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার প্রমাণ পাওয়ায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার পরিবারের সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন এবং জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক ৬টি অভিযোগপত্র বা চার্জশিট দিয়েছে সংস্থাটি। যা আমলে নিয়েই আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
অন্যদিকে বিগত ১৫ বছরে দেশের বিভিন্ন বিমান বন্দরের উন্নয়ন কাজের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ অনুসন্ধানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী এবং একই মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মোকাম্মেল হককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছিল দুদক।