শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০২৫, ১১:৫৬:৩৫

রাজধানীতে হঠাৎ ইলিশের কেজি কত হলো জানেন?

রাজধানীতে হঠাৎ ইলিশের কেজি কত হলো জানেন?

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : রাজধানীর বাজারে বেড়েছে বেশিরভাগ শাকসবজির দাম। ইলিশসহ অন্যান্য মাছের দামও চড়া। আগের বাড়তি দাম স্থিতিশীল রয়েছে চালের বাজারে। তবে কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর নয়াবাজার ও কারওয়ানবাজারসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।

 প্রবাদ আছে ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’। তবে চাল ও মাছের চড়া দামে সেই প্রবাদ যেন অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে। কেননা মাসখানেকের বেশি সময় ধরে অস্থির রাজধানীর চালের বাজার। এদিকে বাজারে বেড়েছে মাছের রাজা ইলিশের দামও।

বাজারে ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫০০-২৬০০ টাকায়; যা আগে ছিল ২২০০ টাকা। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ২০০-৩০০ টাকার মতো। এছাড়া ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৭০০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২২০০ টাকা ও দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩০০০-৩২০০ টাকায়।
 
মাছ কিনতে আসা ক্রেতা আজিজুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ইলিশ তো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরেই চলে গেছে। কেজিতে অন্তত তিনশো টাকা বেড়েছে সপ্তাহ ব্যবধানে। অন্যান্য মাছের দামও চড়া।’

বিক্রেতারা বলছেন, ‘সরবরাহ কম থাকায় চড়া ইলিশের বাজার। এর প্রভাব পড়েছে অন্যান্য মাছের দামেও। রাজধানীর কারওয়ানবাজারের ইলিশ বিক্রেতা মো. শুকুর আলী বলেন, সাগরে এবার ইলিশ কম ধরা পড়ছে। যা ধরা পড়েছ তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। এতে বেড়ে গেছে দাম।’

বাজারে শুধু ইলিশ নয়, অন্যান্য মাছের দামও ক্রেতাদের ভোগাচ্ছে। প্রতিকেজি বোয়াল ৭৫০-৯০০ টাকা, কোরাল ৮৫০ টাকা, আইড় ৭০০-৮০০ টাকা, চাষের রুই ৩৮০-৪৫০ টাকায়, তেলাপিয়া ১৮০-২২০, পাঙাশ ১৮০-২৩০, কৈ ২০০-২২০ এবং পাবদা ও শিং বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকায়। আর চাষের ট্যাংরা প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা, কাঁচকি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা ও মলা ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চালের বাজারে নতুন করে দাম না বাড়লেও আগের উচ্চমূল্যই ভোগাচ্ছে ক্রেতাদের। রাজধানীর কারওয়ানবাজারের চাল ব্যবসায়ী রাকিব বলেন, নতুন করে দাম বাড়েনি। তবে কমারও কোনো সুখবর নেই। বর্তমানে মিনিকেট চালের কেজি ৮২-৮৫ টাকা, নাজিরশাইল ৮৫-৯২ টাকা এবং মোটা চাল ৫৬-৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে বৃষ্টির অজুহাতে বেড়েছে সবজির দাম। বাজারে প্রতিকেজি কচুরমুখী ৫০-৬০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৪০ টাকা, পেঁপে ২০-২৫ টাকা, পটোল ৪০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা, কচুর লতি ৬০-৭০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা ও কহি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া করলা ৫০-৬০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, শসা ৭০ টাকা ও ধনেপাতা ৮০ টাকা কেজি দরে বেচাকেনা হচ্ছে।

আর লাউ প্রতি পিস ৬০-৭০ টাকা ও চালকুমড়া প্রতি পিস ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৫৫-৬৫ টাকা, আলু ২৫ টাকা, দেশি রসুন ১০০-১৩০ টাকা এবং আদা ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা বলছেন, কেজিতে সবজির দাম বেড়েছে ৫-১০ টাকা পর্যন্ত। বৃষ্টিতে সরবরাহ কমায় দাম বাড়ছে। রাজধানীর সবজি বিক্রেতা আনিস বলেন, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় তলিয়ে গেছে সবজির ক্ষেত। কৃষকরা সবজি তুলতে পারছেন না। এতে সরবরাহ কমায় দাম বেড়েছে।
 
সবজি কিনতে আসা গৃহিণী কণা বলেন, ‘প্রতিদিন বাজারে এলেই শুধু আফসোস। সব জিনিসের দামই বেড়েছে, সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’

তবে কিছুটা দাম কমেছে কাঁচা মরিচের বাজারে। বর্তমানে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ২০০ টাকার ওপরে। বিক্রেতারা জানান, বৃষ্টি হওয়ায় দাম বেড়েছিল। তবে আমদানি শুরু হওয়ায় মরিচের দাম কমেছে।

বাজারে কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। তবে দাম বেড়েছে সোনালি মুরগির। বাজারে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়, যা আগে ছিল ১৭০ টাকা। আর প্রতিকেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকায়; যা আগে ছিল ৩০০ টাকা।
 
এছাড়া প্রতিকেজি দেশি মুরগি ৬৫০-৭০০ টাকা, সাদা লেয়ার ৩০০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়। বিক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টির কারণে পর্যাপ্ত মুরগি আসতে পারছে না। তাই দাম কিছুটা বেড়েছে।

ডিমের বাজারে কিছু স্বস্তি বিরাজ করছে। প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়, আর প্রতি ডজন সাদা ডিমের জন্য গুনতে হচ্ছে ১১০ টাকা। তবে পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে ডজনে ৫-১০ টাকা বাড়তি দামে ডিম বিক্রি হতে দেখা গেছে।

অন্যদিকে গরু ও খাসির মাংসের দামে তেমন পরিবর্তন নেই। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়, খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস ১ হাজার ১০০ টাকায়।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে