এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ফুটবলের জাদুকর ছোট্ট শিশু সোহানের দায়িত্ব নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার পড়াশোনা, প্রশিক্ষণ এবং পরিবারের পাশে থাকতে চান তিনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাতে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার সাড়ে পাঁচআনি গ্রামে সোহানের বাড়িতে যান জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম। তিনি সোহানের হাতে জার্সি, বুট, ফুটবল এবং আরো কিছু উপহার তুলে দেন।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন- বিশিষ্ট চিকিৎসক ও রাজনীতিবিদ ডা. শামীম সরকার, ক্রীড়া সংগঠক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার।
চাঁদপুরের খুদে ফুটবলার সোহানের বয়স মাত্র ৫ বছর। এরই মধ্যে ফুটবলের নানা কৌশল রপ্ত করেছে সে। এই বয়সে ফুটবলের ওপর তার নিয়ন্ত্রণ দেখে এলাকাবাসী অবাক এবং আশাবাদী।
ইতিমধ্যে তার ফুটবলের জাদুরকর সেই দৃশ্য গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি নজরে আসে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। তার নির্দেশে শিশুটির খোঁজ-খবর নিতে তাদে বাড়িতে যান জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মতলব উত্তর উপজেলার ক্রীড়া সংগঠক সামছুজ্জামান ডলার বলেন, ‘খুদে ফুটবলার সোহানকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সবধরনের সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
তার জন্য কি কি সুবিধা নিশ্চিত করা যায় তা নিয়েও শিশুটির বাবা ও মায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।’ আর এতে প্রশংসায় ভাসছেন তারেক রহমান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মতলব উত্তর উপজেলার সাড়ে পাঁচআনি গ্রামের সাইকেল মেকার সোহেল প্রধানিয়া ও গৃহবধূ রেহানা বেগমের দুই সন্তানের মধ্যে ছোট সন্তান সোহান। এলাকার হাজী ইয়াসিন আলী কিন্ডারগার্টেন নামে একটি কেজি স্কুলের শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী সে।
সোহানের মা রেহানা বেগম জানান, ফুটবলে বাবাই সোহানের প্রশিক্ষক। শত কষ্টের মধ্যেও ছেলেকে ফুটবলের নায়ক বানাতে চান তার স্বামী।
তাই প্রতিদিন ভোর হলেই বাড়ির উঠান কিংবা পাশের সড়কে ছেলেকে নিয়ে ছোটেন সোহেল প্রধানিয়া। তার লক্ষ্য- আর্জেন্টিনার মেসির মতো ফুটবলার হিসেবে গড়ে তুলবেন ছেলেকে।
তিনি বলেন, ‘আমার নিজের কাছে জনপ্রিয় হচ্ছে ফুটবল খেলা। অথচ আমি নিজেও এই খেলার কিছুই জানি না। তবে টেলিভিশন আর ইউটিউব দেখে ছেলেকে ফুটবল শেখাচ্ছি।’ এরইমধ্যে অনেকটা সফল বলেও দাবি করেন সোহেল প্রধানিয়া।
শিশু ফুটবলার সোহান বলে, ‘এলাকার সবাই আমাকে খুদে মেসি নামে ডাকে। এতে খুব ভালো লাগে।’ এ সময় একগাল হাসি ফুটে ওঠে তার মুখে।
প্রতিবেশী আলমগীর সরকার বলেন, ‘গ্রামে আমাদের ছোট্ট সোহান ফুটবলের ইতিহাস তৈরি করে একদিন বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়বে।’
ছোট বয়সে ফুটবলার সোহানের প্রতিভা সম্পর্কে মতলব উত্তর উপজেলার ক্রীড়া সংগঠক সামছুজ্জামান ডলার বলেন, ‘খুদে ফুটবলার সোহানের ফুটবলের প্রতিভা ধরে রাখতে হলে বিকেএসপির মতো প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে। না হয়, পরিচর্যার অভাবে তার এই প্রতিভা হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।’
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ছোট্ট শিশু সোহানের ফুটবল নিয়ন্ত্রণ, ড্রিবলিং, প্রতিপক্ষ খেলোয়ারকে কাবু করে কি করে গোলপোস্টের দিকে এগিয়ে যেতে হয়, এসব ক্রীড়া শৈলী অসাধারণ।
স্থানিয়রা জানান, দরিদ্রতা যেন সোহানদের নিত্য সঙ্গী। তবে এসব কিছু ফেলে ফুটবল খেলে শুধু পরিবার নয়, বাংলাদেশকে নতুনভাবে তুলে ধরতে এখনই প্রস্তুত করতে হবে শিশু সোহানকে।