সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫, ১২:০৬:৫৫

অনেকেই জানেন না মোটরসাইকেলের গিয়ার পরিবর্তনের সঠিক পদ্ধতি

অনেকেই জানেন না মোটরসাইকেলের গিয়ার পরিবর্তনের সঠিক পদ্ধতি

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : গাড়ির জগতে যেখানে স্বয়ংক্রিয় গিয়ারবক্স (অটোমেটিক ট্রান্সমিশন) সাধারণ বিষয়। সেখানে মোটরসাইকেলের জগতে গিয়ার পরিবর্তন সাধারণত চালকের হাতেই থাকে। স্কুটার, ইলেকট্রিক বাইক বা কিছু হোন্ডা মডেলের ডিসিটি বাদে প্রায় সব মোটরসাইকেলেই আপনাকে নিজে হাতে গিয়ার বদলাতে হয়।

প্রথমদিকে গিয়ার বদলানো নতুন রাইডারদের জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে। তবে সঠিকভাবে শিখে নিলে এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পরিণত হয়। মূলত বাম হাতে ক্লাচ ও বাম পায়ের শিফটার, আর ডান হাতে থ্রটল— এই তিনটির সঠিক সমন্বয়ই গিয়ার পরিবর্তনের মূল কৌশল।

নতুন রাইডারদের জন্য মৌলিক গিয়ার বদলের নিয়ম

স্টপ থেকে গতি তোলা
ইঞ্জিন চালু অবস্থায় এবং থ্রটল বন্ধ রেখে বাম হাতে ক্লাচ পুরোপুরি টেনে ধরুন।

বাম পা দিয়ে নিচের দিকে চাপ দিয়ে প্রথম গিয়ারে নিন। গিয়ার ঢোকার শব্দ ও অনুভূতি পাবেন।

ধীরে ধীরে ক্লাচ ছাড়তে থাকুন এবং একসাথে ডান হাতে হালকা থ্রটল ছাড়ুন, যতক্ষণ না বাইক সামনে এগোতে শুরু করে।

বাইকের গতি বাড়তে থাকলে পুরোপুরি ক্লাচ ছেড়ে দিন এবং থ্রটল ছাড়তে থাকুন।

চলন্ত অবস্থায় আপশিফট (উচ্চ গিয়ারে ওঠা)
ডান হাতে থ্রটল কমিয়ে দিন।

বাম হাতে ক্লাচ টানুন।

বাম পা দিয়ে গিয়ার শিফটার উপরের দিকে চাপ দিন।

ক্লাচ ধীরে ছাড়তে থাকুন এবং থ্রটল পুনরায় ছাড়ুন।

চলন্ত অবস্থায় ডাউনশিফট (নিচের গিয়ারে নামা)
ডান হাতে থ্রটল কমিয়ে দিন।

বাম হাতে ক্লাচ টানুন।

বাম পা দিয়ে নিচের দিকে চাপ দিয়ে গিয়ার নামান।

ক্লাচ ছাড়ার সময় হালকা থ্রটল ছেড়ে ইঞ্জিনের আরপিএম (RPM) ও গতির সমন্বয় করুন, যাতে বাইক ঝাঁকুনি না খায়।

গিয়ারের কার্যপ্রণালী বুঝে চালানো
মোটরসাইকেলে পাওয়ার ক্র্যাঙ্কশ্যাফ্ট থেকে ট্রান্সমিশন হয়ে চেইন/বেল্ট/শাফটের মাধ্যমে পিছনের চাকা পর্যন্ত যায়। ক্লাচ মূলত ক্র্যাঙ্কশ্যাফ্ট ও ট্রান্সমিশনের মধ্যে সংযোগ নিয়ন্ত্রণ করে।

গিয়ার বদলানোর সময় ক্লাচ টেনে এই সংযোগ আলাদা করলে ট্রান্সমিশনের চাপ কমে যায় এবং গিয়ার সহজে পরিবর্তন করা যায়। চলন্ত অবস্থায় পুরো ক্লাচ টানার দরকার হয় না—“ফ্যানিং দ্য ক্লাচ” কৌশলে হালকা টান দিয়েই গিয়ার বদলানো যায়, যা দ্রুত ও মসৃণ শিফটিং নিশ্চিত করে।

ক্লাচ ছাড়া গিয়ার বদলানো 
থ্রটল হঠাৎ টেনে ও ছেড়ে দিয়ে গিয়ারবক্সের চাপ কমিয়ে ক্লাচ ছাড়াই গিয়ার পরিবর্তন সম্ভব।

ক্লাচলেস আপশিফট: থ্রটল সামান্য বন্ধ করার সাথে সাথে বাম পা দিয়ে শিফটার উপরে চাপ দিন।

ক্লাচলেস ডাউনশিফট: ব্রেক করার সময় থ্রটল সামান্য “ব্লিপ” করে নিচের গিয়ারে নামান। তবে এটি নিখুঁত নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন এবং অভ্যাস না থাকলে এড়িয়ে চলা ভালো।

গিয়ার পরিবর্তনের দক্ষতা অনুশীলনের মাধ্যমে আসে। সঠিক সময়ে থ্রটল, ক্লাচ ও গিয়ার শিফটার ব্যবহারের অভ্যাস হলে গিয়ার বদলানো একেবারেই স্বাভাবিক হয়ে যাবে। ধীরে ধীরে এই কৌশলগুলো রপ্ত করে নিলে বাইক চালানো হবে আরও মসৃণ, নিরাপদ ও উপভোগ্য।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে