শনিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৫, ১১:০৮:৫৬

কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম, একদিনের ব্যবধানে কত কমলো জানেন?

কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম, একদিনের ব্যবধানে কত কমলো জানেন?

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : দেশের বাজারে প্রায় ৮ মাস পর প্রবেশ করেছে ভারতীয় পেঁয়াজ। ফলে দেশি পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। একদিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণে বাণিজ্য উপদেষ্টা পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি (আইপি) দেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। 

গত বৃহস্পতিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনা মসজিদ সীমান্ত দিয়ে ১০০ টন ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। ফলে বাজারে প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হতে পারে, এই আশঙ্কায় গত কয়েকদিন ধরে পেঁয়াজের বেচাবিক্রিও কমে যায়। এখন সরকার তড়িঘড়ি করে আইপি দেয়ায় দেশি পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়তে পারেন।

গতকাল চাক্তাই খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে পাবনা ও ফরিদপুরের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। গত একদিন আগে সেই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৫ টাকা পর্যন্ত। এদিকে খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়।

জানা গেছে, বর্তমানে দেশে তাহেরপুরী, বারি–১ (তাহেরপুরী), বারি–২ (রবি মৌসুম), বারি–৩ (খরিপ মৌসুম), স্থানীয় জাত ও ফরিদপুরী পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। ফলে বছরজুড়েই কোনো না কোনো জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২২ লাখ টন। এর মধ্যে ১৮ লাখ টন স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয়। আর আমদানি করা হয় বাকি চার লাখ টন। মূলত এই আমদানিকৃত চার লাখ টন পেঁয়াজ বাজারের ওপর খুব বড় প্রভাব ফেলে।

পেঁয়াজের আড়তদাররা বলছেন, পেঁয়াজের বাজার চাহিদা ও যোগানের ওপর নির্ভর। চাক্তাই খাতুনগঞ্জের প্রায় আড়তদার কমিশনের ভিত্তিতে পেঁয়াজ বিক্রি করেন। অর্থাৎ পেঁয়াজ আমদানিকারক যে দাম নির্ধারণ করে দেন, সেই দামে বিক্রি করেন। 

এর বিনিময়ে কেজিপ্রতি তারা নির্ধারিত একটি কমিশন পেয়ে থাকেন। তাই আড়তদারদের পক্ষে দাম উঠানামা করার কেনো সুযোগ নেই। আড়তদারদের পক্ষে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট তৈরি করাও সম্ভব নয়। কিন্তু আমাদের দেশে পেঁয়াজের দরবৃদ্ধির সাথে সাথে প্রশাসনের লোকজন আড়তে অভিযান পরিচালনা করে। এতে আতঙ্ক তৈরি হয়। অথচ আড়তদাররা পেঁয়াজ আমদানি করেন না।

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, সরকার এখন তড়িঘড়ি করে আইপি দেয়ার কারণে ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়ছেন। কারণ ক্রেতারা মনে করছেন, যেহেতু ভারতীয় পেঁয়াজ আসা শুরু হয়েছে, দাম আরো কমতে পারে। কারণ অনেক ব্যবসায়ী বেশি দামে দেশি পেঁয়াজ কিনে রেখেছেন। এছাড়া কৃষকদের হাতেও প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ রয়েছে। এখন কৃষক যদি লোকসান দেয়, তবে আগামীতে তারা পেঁয়াজ চাষে উৎসাহিত হবেন না। দেশে পেঁয়াজ চাষ কমে গেলে আমদানির উপর নির্ভরশীলতা বাড়বে।

আবুল হোসেন নামের একজন ভোক্তা জানান, আমাদের দেশে পেঁয়াজের বাজার কয়েকবার ডাবল সেঞ্চুরিও হয়েছে। কাজেই পেঁয়াজ নিয়ে আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের কারসাজির ঘটনা নতুন কিছু নয়। দেশে পেঁয়াজের উচ্চ ফলনের পরেও দাম বেড়েছে। কৃষকের কথা চিন্তা করে সরকার বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখলেও প্রকৃতপক্ষে কৃষকরা এর সুফল পাচ্ছেন না। মুনাফার বেশিরভাগই পাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। তারা পেঁয়াজ কিনে কৃত্রিম সংকট তৈরি দাম বৃদ্ধি করে। তাই প্রশাসনকে বিষয়গুলোর দিকে সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে