সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫, ০৪:৪১:৫৭

‘মাতৃত্বকালীন ছুটির পাশাপাশি পিতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া যেতে পারে’

‘মাতৃত্বকালীন ছুটির পাশাপাশি পিতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া যেতে পারে’

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : দেশে মাতৃত্বকালীন ছুটি পাশাপাশি পিতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম।

সোমবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম বলেন, মাতৃত্বকালীন ছুটির সাথে পিতৃত্বকালীন ছুটির কথা বলা হচ্ছে। জানি না, পিতৃত্বকালীন ছুটির দরকার আছে কিনা, যদি দিতে হয়, তাহলে বাবারও শিশুকে সময় দিতে হবে। বাবারা শিশুদেরকে ঠিকমতো সময় প্রদান করলে পিতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া যায়।

তিনি আরও বলেন, মায়ের স্বাস্থ্য ভালো থাকলে বাচ্চা দুধ পাবে। দেশে দারিদ্র্য হার বেশি, সরকারি হিসেবে কোথাও ২০, আবার কোথাও ২৫ শতাংশ। বেসরকারি হিসেবে আরও বেশি। অনেক মা ঠিকমতো পুষ্টিকর খাবার খেতে পারেন না।

নুরজাহান বেগম বলেন, করোনার পর থেকে শিশুরা স্কুল থেকে ঝড়ে পড়ছে এবং বাল্যবিবাহের হারও বেড়ে গেছে। আগে যাও নিয়ন্ত্রণে ছিল, এখন তাও নাই। মায়ের বয়সই কম এবং মা নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না, শিশুর খোঁজখবর ভালোভাবে কীভাবে নিবেন।

তিনি আরও বলেন, শালদুধ শিশুর জন্য উপকারি, শিশুকে শালদুধ খাওয়াতে হবে। আশির দশকে ক্যাম্পেইন হতো। একটা মা যখন মা হতে চায়, তখন থেকে পরিচর্যা শুরু হয়। মাকে কাঠখড় পোহাতে হয়।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, আমাদের (সরকার) সব থেকে বড় দুর্বলতা হলো দেশে অনেক আইন আছে, প্রয়োগ নাই। সিগারেটের আইন আছে, কঠিনভাবে আছে। নাকের ডগায় সিগারেট খাচ্ছে, বাসায় খাচ্ছে, পাশে বসে খাচ্ছে। আইন আছে, প্রয়োগ নাই। অদ্ভুতভাবে চলছে দেশটা, কবে উত্তরণ হবে জানি না।

তিনি আরও বলেন, পরিবারে সবাই সবার খোঁজ নিতে হবে। বউয়ের খোঁজ নিতে হবে শ্বাশুড়িকে, আবার শ্বাশুড়ির খোঁজ নিতে হবে বউকে। আমরা সেবা নিতে জানি, সেবা দিতে জানি কম।

কর্মশালায় স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন বলেন, মায়ের সঙ্গে মাতৃদুগ্ধের সম্পর্ক নিবিড়। বাংলাদেশে দিনে দিনে শিশুকে মাতৃদুগ্ধ খাওয়ানোর হার কমে যাচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শিশুকে কৃত্রিম খাবার খাওয়ানোর হার বাড়ছে।

মেডিকেলে ডে কেয়ারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, প্রত্যেক মেডিকেলে একটি করে ডে কেয়ার স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে চিকিৎসা ও গবেষণা যুগোপযোগী করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

এসময় স্বাস্থ্য শিক্ষার সচিব ডা. সারোয়ার বারী বলেন, আমরা চাই, মেধাসম্পন্ন সুস্থ জাতি তৈরি হোক। শিশুরা সুস্থভাবে বেড়ে উঠুক। মায়ের দুধ শিশুর জন্য সবচেয়ে বেশি উপকারি। কর্মজীবী মায়েদের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ নিতে হয়। শিশুকে দুগ্ধপান করাতে অনেক কষ্ট করতে হয়।

তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণেও ঘাটতি তৈরি হয়েছে। মায়ের দুধ খাওয়ানোতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। ব্রেস্টফিডিং নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে।

ডা. সারোয়ার বারী বলেন, অনেক দেশেই পিতৃত্বকালীন ছুটি আছে। আমরাও চিন্তা ভাবনা করছি, প্রস্তাবনা কেবিনেটে পাঠানো হয়েছে। অন্তত চার সপ্তাহের পিতৃত্বকালীন ছুটির ব্যবস্থা করা যায়।

সভায় বিশেষজ্ঞরা বলেন, মাতৃদুগ্ধপান শুধুমাত্র শিশুর পুষ্টি নয়, বরং তার রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গঠনের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। সেইসঙ্গে মাতৃদুগ্ধদান মায়ের স্তন ক্যান্সার, ডিম্বাশয়, ক্যান্সার ও টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।

এসময় বাংলাদেশ ব্রেস্টফিডিং ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ডা. এস কে রায় ও জেনারেল সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. সারিয়া তাসনিম উপস্থিত ছিলেন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে