এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দায়ের করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
রোববার (২৪ আগস্ট) ইসি সচিব বরাবর এই অভিযোগ করেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোহাম্মদ আতাউল্লাহ। ইসিতে রুমিন ফারহানার নেতৃত্বে এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন তিনি।
আতাউল্লাহ অভিযোগপত্রে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আমার নির্বাচনী এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেখানে বিজয়নগর উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে সংযুক্ত করলে এলাকাবাসী সংক্ষুব্ধ হয়। তাদের অনুরোধে এবং তাদের পক্ষে আমি নির্বাচন কমিশনে সীমানা নির্ধারণের বিরুদ্ধে আপত্তি দাখিল করি। এরপর থেকেই বিএনপি নেতা রুমিন ফারহানার ক্যাডাররা আমাকে আপত্তি সংক্রান্ত শুনানিতে অংশ না নেওয়ার জন্য হুমকি-ধমকি দেয়।’
তিনি বলেন, ‘আমি ও আমার এলাকার প্রতিনিধিরা আজ নির্ধারিত শুনানিতে অংশ নিতে নির্বাচন কমিশনে এলে আপনার (ইসি সচিব) দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা আমাকে শুনানিস্থলে প্রবেশে বাধা দেন। পরে আমি শুনানি শুরু হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে প্রবেশ করতে সক্ষম হই। এমতাবস্থায় আপনার এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনারদের উপস্থিতিতে রুমিন ফারহানার সন্ত্রাসী বাহিনী আমিসহ আমার নির্বাচনী এলাকার নেতাদের মারধর করে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কিত অধ্যায় হয়ে থাকলো।’
এনসিপির এই যুগ্ম মুখ্য সংগঠক বলেন, ‘স্বৈরাচারী হাসিনার শাসনামলেও নির্বাচন কমিশনে কমিশনারদের সামনে কেউ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে এমন নজির নেই। এর মাধ্যমে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতাও প্রমাণিত হলো এবং একটি জাতীয় নির্বাচনে আপনারা কী ভূমিকা পালন করতে পারবেন তার একটি পরীক্ষা হয়ে গেলো। উল্লেখ্য, ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, রুমিন ফারহানার সন্ত্রাসী ক্যাডাররা যখন আমিসহ এনসিপি নেতাদের ওপর হামলা চালাচ্ছিল, তখন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনার নিবৃত্তচিত্তে গালে হাত দিয়ে মঞ্চে বসা ছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘প্রায় দুই হাজার শহীদ ও ৩০ হাজার আহত যোদ্ধার অপরিসীম ত্যাগের বিনিময়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ পেয়েছি, যে বাংলাদেশ হবে ন্যায়ভিত্তিক, বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত। সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে আপনি সচিব হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন এবং কমিশনাররা তাদের দায়িত্ব নিয়েছেন। অথচ আজ বিএনপি নেতা রুমিন ফারহানার কর্মকাণ্ড এবং আপনাদের অবস্থান হাসিনার শাসনামলকেও হার মানিয়েছে। এটা শহীদদের রক্তের সঙ্গে প্রতারণা।’
আতাউল্লাহ আরও বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী কালো আইনের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা এই নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমাদের আহ্বান- রুমিন ফারহানাসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য যথাযথ ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহণ, নির্বাচন কমিশনকে সত্যিকারের জনগণের একটি কমিশন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আপনারা যদি নিরপেক্ষ থাকতে না পারেন তাহলে প্রয়োজনে পদত্যাগ করে যোগ্য ব্যক্তিদের দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেবেন।’
এদিকে এনসিপির কর্মীদের সঙ্গে নিজের সমর্থকদের হাতাহাতি প্রসঙ্গে রুমিন ফারহানা বলেছেন, ‘উনি যেহেতু পরিচিত মুখ নয়, সুতরাং উনি জামায়াত না এনসিপি আমার জানা নেই। তবে উনার লোকজন প্রথম আমাকে ধাক্কা দিয়েছে। আর আমাকে ধাক্কা দিলে আমার লোকজন তো বসে থাকবে না, কারণ আমি একজন নারী। আমার লোকজনকে যখন মারধর করেছে, তখন আমার লোকজনও জবাব দিয়েছে।
এ ঘটনার বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি ইসি।