বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:৪৪:৩৯

ডাকসু-জাকসু’র ভরাডুবি! তারেক রহমানের নির্দেশেই কী এই কঠিন সিদ্ধান্ত আসছে?

ডাকসু-জাকসু’র ভরাডুবি! তারেক রহমানের নির্দেশেই কী এই কঠিন সিদ্ধান্ত আসছে?

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ডাকসু-জাকসু’র ভরাডুবি! তারেক রহমানের নির্দেশেই কী এই কঠিন সিদ্ধান্ত বিএনপির? ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে চরম ভরাডুবির পর ছাত্রদলের সাংগঠনিক কাঠামোয় বড় পরিবর্তন আসছে। ভোটের মাঠে অস্তিত্ব সংকটে পড়া এবং অভ্যন্তরীণ সমন্বয়হীনতাসহ নানা কারণে সংগঠনটিতে নতুন নেতৃত্ব আনতে চায় বিএনপি। 

এরই অংশ হিসেবে বর্তমান কমিটি ভেঙে দ্রুতই সংগঠনের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি করার কথা শোনা যাচ্ছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় সহসাই নতুন কমিটি হতে পারে এমন আভাস পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সময় ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা গত বছরের ৫ আগস্টের পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যাওয়ার সুযোগ পায়। অনেকটা নির্বিঘ্নে সংগঠন গোছানোরও পথ তৈরি হয়। কিন্তু এক বছরের মাথায় এসে সেভাবে সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করতে না পারা, ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে বিএনপির দায়িত্বশীলদের সমন্বয় এবং সহযোগিতার ঘাটতি, ছাত্র সংসদ নির্বাচনে প্রস্তুতির ঘাটতির কারণে ছাত্রদলের তৎপরতা মুখ থুবড়ে পড়েছে। যা নিয়ে খোদ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যেও ক্ষোভ আছে। এমন পরিস্থিতিতে কমিটি ভেঙে দিয়ে একটি নতুন নেতৃত্ব গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড।

২০২৪ সালের ১ মার্চ রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে সভাপতি ও নাসির উদ্দীন নাসিরকে সাধারণ সম্পাদক করে  ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই বছরের ১৫ জুন ছাত্রদলের ২৬০ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি অনুমোদন করা হয়।

দীর্ঘদিন পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত ৯ সেপ্টেম্বর। আর ৩৩ বছর অনুষ্ঠিত হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন। দুই ক্যাম্পাসের আলোচিত এই নির্বাচনে ভূমিধস বিজয় পেয়েছে ছাত্রশিবির। বিপরীতে ছাত্রদলের হয়েছে চরম ভরাডুবি। কেন্দ্রীয় সংসদ থেকে শুরু করে হল কমিটি কোথাও পাত্তা পায়নি ছাত্রদলের প্রার্থীরা।

জাকসুতে ভোটের শেষদিকে ভোটগ্রহণে অনিয়ম, প্রশাসনের পক্ষপাত এবং একটি মহলের প্রত্যক্ষ সহায়তায় নির্বাচনী প্রক্রিয়া প্রভাবিত হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করে ছাত্রদল। আর ডাকসুতেও এমন ছোটখাটো কিছু অভিযোগ তুললেও ভোট বর্জন করেনি সংগঠনটির প্রার্থীরা। এরমধ্যেও বড় পদের পাশাপাশি হল সংসদের কিছু পদে ছাত্রদলের প্রার্থীরা বিজয়ী হতে পারেন এমন প্রত্যাশা থাকলেও ফলাফল দেখে চরম হতাশ হয়েছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

বিএনপি নেতা ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ভাষ্য, ছাত্রদল ডাকসু নির্বাচনে অংশ নেবে কি না শুরু থেকেই এ নিয়ে একধরনের দ্বিধা ছিল। প্রতিদ্বন্দ্বী সংগঠনগুলো যখন ক্যাম্পাসে নানাভাবে তৎপরতা চালিয়েছে তখন ছাত্রদল প্যানেলও ঘোষণা করতে পারেনি। ভোটের মাত্র ২০ দিন আগে প্যানেল ঘোষণা করে ছাত্রদল।

এছাড়াও পর্যাপ্ত প্রস্তুতি না থাকা, সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাব এবং প্রচারণা কৌশল কী হবে, তা নির্ধারণের ক্ষেত্রেও ছাত্রদলের মধ্যে সঠিক সমন্বয় ছিল না।

ভরাডুবিতে চাপে আছেন দায়িত্বশীল নেতারাও
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ডাকসুর পর জাকসুতেও ছাত্রদলের চরম ভরাডুবি বিএনপিকে ভাবিয়ে তুলছে। বিশেষ করে ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রথমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন ও বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল দায়িত্বে ছিলেন। পরবর্তীতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হন।

অভিযোগ আছে, ছাত্রদলের প্যানেলের শীর্ষ তিন পদের প্রার্থীদের নিয়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে পছন্দ-অপছন্দের বিষয় ছিল। বিএনপির দায়িত্বশীলদের মধ্যেও এ নিয়ে টানাপোড়েন ছিল। যার প্রভাব পড়েছে নির্বাচন পূর্ববর্তী সার্বিক কার্যক্রমে। এমন কি নির্বাচনী তহবিল যথাযথ বণ্টন হয়নি এমন অভিযোগও আছে। অবশ্য এ নিয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না।

তবে বিএনপির একজন যুগ্ম মহাসচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পর ছাত্রদলের বিষয় নিয়ে দলে জোরালো আলোচনা হয়েছে। কমিটি ভেঙে দেওয়ার বিষয়েও কথা এসেছে। হয়তো দ্রুতই পরিষ্কার হবে।’

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে