শুক্রবার, ০৪ মার্চ, ২০১৬, ০৯:৪৫:০২

দাম মাত্র ২২০ টাকা, হাজার বছরেও নষ্ট হবে না সাইকেলটি!

দাম মাত্র ২২০ টাকা, হাজার বছরেও নষ্ট হবে না সাইকেলটি!

নিউজ ডেস্ক : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ব্যবহার করেছিলেন সাইকেলটি।  প্রায় ৬২ বছর পর সম্প্রতি সাইকেলটি জাতীয় জাদুঘর কর্তৃপক্ষের হাতে এসেছে।  এখন চলছে মেরামত ও সংরক্ষণ উপযোগী করার কাজ।

এ বিষয়ে জাতীয় জাদুঘরের ইতিহাস ও ধ্রুপদী শিল্পকলা বিভাগের কিপার ড. স্বপন কুমার বিশ্বাস জানিয়েছেন, আমরা অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে সাইকেলটি মেরামত করছি, যাতে হাজার বছরেও আর নষ্ট না হয়, মরিচাও না ধরে। বঙ্গবন্ধু এই সাইকেল চালিয়েছেন, এটা আমাদের কাছে মহামূল্যবান।

সাইকেলটি ইংল্যান্ডের ডানলপ কোম্পানির তৈরি।  মডেল বিএসএ। ঐতিহাসিক সাইকেলটির সামনের চাকায় ব্রেক সু নেই।  পেছনের চাকার ব্রেক সু ক্ষয়ে গিয়ে পাতলা হয়ে গেছে।  চামড়ার সিটটি স্যাঁৎস্যাঁতে।  

সিটের মধ্যভাগের ছেঁড়া অংশ নাইলনের সুতা দিয়ে সেলাই করা।  কলিংবেলটা কোনোমতে হাতলের সঙ্গে লেগে আছে।  উপরের ঢাকনাটা নেই, নেই ভেতরের কোনো অংশও।  সামনের চাকার মাডগার্ড নেই।  দুই চাকার মধ্যস্থলে দুটি মালা বিবর্ণ হয়ে গেছে।

জাতীয় জাদুঘরের চতুর্থ তলার অজৈব রাসায়নিক ল্যাবরেটরি কক্ষে তিনজন বিশেষজ্ঞ সাইকেলটি মেরামত করছেন।  বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, খুব সূক্ষ্মভাবে সাইকেলটির মেরামতের কাজ করতে হচ্ছে।  প্রয়োজনীয় রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হচ্ছে।

লক্ষ্য রাখতে হচ্ছে, কোনো অবস্থাতেই যাতে সাইকেলটির বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন না হয়।  যেভাবে আছে সেভাবে রেখেই মেরামত কাজ করতে হচ্ছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে মেরামত কাজ শেষ হবে।  এরপর বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত এই সাইকেলটি সর্বসাধারণের দেখার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট প্রার্থী আবদুল ওয়াজেদ চৌধুরীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য বঙ্গবন্ধু তৎকালীন গোয়ালন্দ মহকুমার জৌকুড়া গ্রামের মনাক্কা চেয়ারম্যান বাড়িতে যান।  এ সময় বঙ্গবন্ধু নির্বাচনী প্রচারে এ সাইকেলটি ব্যবহার করেন।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত সাইকেলটি দীর্ঘ ৬২ বছর সংরক্ষিত ছিল বর্তমান রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামে আবদুল ওয়াজেদ মণ্ডলের বাড়িতে।  

জাতীয় জাদুঘরের কিপার ড. স্বপন কুমার বিশ্বাস জানান, ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে স্থানীয় প্রশাসন ও প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সাইকেলটি গ্রহণ করা হয়।  

ওই সময় সাইকেলটির মালিক আবদুল ওয়াজেদ মণ্ডল জানান, তিনি অনেক খুশি, প্রায় ৬২ বছর পর পিতার (বঙ্গবন্ধু) ব্যবহৃত সাইকেলটি জাদুঘরে হস্তান্তর করতে পেরে।  ১৯৪৮ সালে ২২০ টাকায় সাইকেলটি কিনেছিলেন বলেও জানান তিনি।

ড. স্বপন কুমার বিশ্বাস বলেন, প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা সাইকেলটির কথা বলছেন।  সাইকেলটি কোথায় রাখা হয়েছে জানতে চাচ্ছেন দর্শনাথীরা।  তাদের আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুতগতিতে সাইকেলটির মেরামতের কাজ করা হচ্ছে।
৪ মার্চ,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে