এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : জোবায়েদের ছাত্রী বর্ষার সঙ্গে মাহির নামে একটি ছেলের ৯ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি বর্ষা মাহিরকে জানায় সে তার শিক্ষক জোবায়েদকে পছন্দ করে। এটা জেনে মাহির ও তার বন্ধু মিলে খুন করেছে জোবায়েদকে।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষা এ তথ্য জানিয়েছেন বলে সোমবার সকালে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন।
রফিকুল ইসলাম বলেন, ছাত্রী বর্ষার সঙ্গে মাহির রহমানের ৯ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মাহির রহমান বোরহান উদ্দীন কলেজে প্রথম বর্ষে পড়ে। আর বর্ষা পড়ে ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে। ছোট থেকে পাশাপাশি বাড়িতে তাদের বেড়ে উঠা।
তাদের মধ্যে ছিল দীর্ঘ প্রেমের সম্পর্ক। চতুর্থ শ্রেণি থেকে একে অপরকে পছন্দ করতো। কিন্তু সম্প্রতি তাদের সম্পর্কে টানা পোড়েন ঘটে। কিছুদিন আগে তাদের সম্পর্কের ভাঙন হয়।
ওসি বলেন, সম্প্রতি বর্ষা মাহিরকে জানায় সে জোবায়েদকে পছন্দ করে। কিন্তু জোবায়েদকে সে তার পছন্দের কথা এখনও জানায়নি। জোবায়েদের সঙ্গে বর্ষার কোনো প্রেমের সম্পর্ক নেই। তাদের মধ্যে এ ধরনের কোনো মেসেজও পাওয়া যায়নি। কিন্তু বর্ষার কথার ওপর ভিত্তি করে রাগে ক্ষোভে বর্ষার বয়ফ্রেন্ড তার বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে জোবায়েদকে খুন করে।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, বর্ষার সঙ্গে জোবায়েদের বন্ধু সৈকতের পরিচয় হয় ফেসবুকে। এ ছাড়া অন্য কোনো মাধ্যমে তাদের কথা হতো না। বা অন্য কোনো সম্পর্কও ছিল না। যেহেতু সৈকত জোবায়েদের বন্ধু ছিল এ জন্য জোবায়েদের মৃত্যুর খবর দিয়ে সৈকতকে মেসেজ করে বর্ষা।
ওসি বলেন, বর্ষার মধ্যে কোনো হতাশা বা কান্নার ছাপ পাওয়া যায়নি। তার মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদে কোনো নার্ভাসনেসও পাওয়া যায়নি। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বর্ষাকে চিন্তামুক্ত দেখা গেছে। আমরা আরো বিস্তর তদন্ত করব। পরবর্তীতে আরো বিস্তারিত জানানো হবে আনুষ্ঠানিকভাবে।
জোবায়েদ হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণের সভাপতি ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন। গত এক বছর ধরে জোবায়েদ হোসাইন পুরান ঢাকার আরমানীটোলায় ১৫, নুরবক্স লেনে রৌশান ভিলা নামের বাসায় বর্ষা নামের এক ছাত্রীকে পদার্থ, রসায়ন ও বায়োলজি পড়াতেন। ওই ছাত্রী বর্ষার বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন।
গতকাল রবিবার বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে ছাত্রীর বাসার তিন তলায় জোবায়েদ খুন হন। বাসার নিচ তলার সিঁড়ি থেকে তিন তলা পর্যন্ত রক্ত পড়েছিল। তিন তলার সিঁড়িতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে তাকে দেখা যায়।
এখনো হয়নি মামলা
এ ঘটনায় রবিবার রাত ১টা থেকে নিহতের পরিবার মামলা করার চেষ্টা করলেও সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত জোবায়েদ খুনের মামলা হয়নি। গ্রেপ্তার হয়নি মাহির রহমান ও তার বন্ধু। তবে পুলিশ বলছে অভিযান চলছে।
মামলায় বিলম্বের বিষয়ে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, যে কয়েকজনের নামে মামলা দিতে চায় নেব, তবে তাদের বলেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে তারপর সিদ্ধান্ত নিতে।