এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : মেট্রো রেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত পথচারী আবুল কালামের স্ত্রী আইরিন আক্তার (পিয়া) মেট্রো রেলে চাকরি পেতে যাচ্ছেন। কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষে এ মাসেই তাকে নিয়োগ দেওয়ার চিন্তা করছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। তার জন্য সম্ভাব্য তিনটি পদ বিবেচনা করা হচ্ছে। এসব পদ ১৬তম গ্রেডের।
ডিএমটিসিএল সূত্র জানিয়েছে, আইরিন আক্তারের স্নাতক এখনো সম্পন্ন হয়নি। তাই উচ্চমাধ্যমিক পাসের সনদ দিয়ে তিনটি পদের চাকরি দেওয়া যেতে পারে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে টিকিট মেশিন অপারেটর (টিএমও)। এর কাজ হচ্ছে স্টেশনগুলোয় কাচঘরের ভেতর টিকিট বিক্রি করা।
স্থায়ী কার্ডে টাকা ভরা (রিচার্জ)। আরেকটি হচ্ছে কম্পিউটার অপারেটর। এটির কাজ মূলত ডিএমটিসিএলের প্রধান কার্যালয়ে। স্টেশনেও কিছু কাজ আছে।
আরেকটি পদ হচ্ছে কাস্টমার রিলেশন সহকারী। এটির কাজও স্টেশনেই। সব কটি পদই ১৬তম গ্রেডের। এই পদের মাসিক বেতন সব মিলিয়ে ৪০ হাজার টাকার বেশি।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্র বলছে, গত রবিবার আইরিন আক্তার ও আবুল কালামের পরিবারের সদস্যরা উত্তরার দিয়াবাড়ীতে ডিএমটিসিএলের প্রধান কার্যালয়ে এসেছিলেন।
আইরিন আক্তারকে চাকরি দেওয়ার বিষয়টি সেসময় নিশ্চিত করা হয়েছে। তাঁকে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। সে অনুসারে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ও অন্যান্য কিছু কাগজ ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, উপদেষ্টার ঘোষণা দেওয়া পাঁচ লাখ টাকার সহায়তা এরই মধ্যে দেওয়া হয়েছে। এখন চাকরি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এ ছাড়া ফাওজুল কবির খান আরো কিছু আর্থিক সহায়তা দেওয়া যায় কি না, সেই চেষ্টা করছেন। এ ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ব্যাংকে রেখে মাসে মাসে যাতে নিহত ব্যক্তির পরিবার পেতে পারে, সেই চিন্তা চলছে। এ ছাড়া একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ নিহত আবুল কালামের পরিবারকে পর্যাপ্ত ও অবিলম্বে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছেন।
ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ বলেন, নিহত আবুল কালামের পরিবারকে যতভাবে সহায়তা করা যায়, সেটা তারা করবেন। আবুল কালামের স্ত্রী আইরিন আক্তারকে চাকরি দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হচ্ছে। মহামান্য আদালতের নির্দেশনাও তারা মেনে চলবেন। তিনি আরো বলেন, কোনো মানুষের প্রাণের বিনিময় হতে পারে না। তারা যা করছেন, সেটা সহায়তা। এ ছাড়া আর যাতে এ ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে, সেটা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা জানান, আনুষ্ঠানিকতার জন্য আইরিন আক্তারের কাছ থেকে একটি আবেদনপত্র নেওয়া হবে। সেটির ওপর ভিত্তি করে শিগগিরই একটি নিয়োগপত্র দেওয়া হবে। ডিএমটিসিএল শতভাগ রাষ্ট্রায়ত্ত কম্পানি। এটি ১২ সদস্যের একটি বোর্ডের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এই বোর্ডের চেয়ারম্যান পদাধিকারবলে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব। আইরিনের নিয়োগের বিষয়টি পরে বোর্ডেও অনুমোদন করিয়ে নেওয়া হবে।
ডিএমটিসিএলের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, রবিবার আইরিন আক্তার ডিএমটিসিএলের কার্যালয়ে আসার পর তাকে দুটি বিষয় জানানো হয়। এখন তার যোগ্যতা অনুযায়ী ১৬তম গ্রেডে চাকরি দেওয়া হবে। ভবিষ্যতে স্নাতক পাসের সনদ জমা দিলে উচ্চতর পদে চাকরি দেওয়া হবে। তখন মাসিক বেতন ৮০ হাজার টাকার বেশি হবে বলে ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
আইরিন আক্তার জানিয়েছেন, তিনি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ মহিলা কলেজে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পড়াশোনা করেন। স্নাতক পরীক্ষা তিনি সম্পন্ন করতে পারেননি।