এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় নির্বাচন করতে ১০-২০ কোটি টাকা লাগে মন্তব্য করে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, আমাদেরও বারবার চিন্তা করতে হয় নির্বাচন করব, নাকি করব না।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
আসিফ মাহমুদ বলেন, আমরা দেখেছি—যারা সংস্কারের কথা সবচেয়ে বেশি বলত, ৫ আগস্টের পরে তারা কেন জানি সংস্কারবিরোধী রাজনীতিতে ঢুকে গেল। আমরা আসলে জানি না এই সংস্কারবিরোধী রাজনীতির আউটকামটা তাদের জন্য কী? আমাদের দেশের জন্য তো অবশ্যই ক্ষতি, কিন্তু তাদের জন্য কোন দিক দিয়ে সফলতা বয়ে আনছে, এটা আমি আসলে বুঝতে পারি না।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের আউটকামের বিষয় নিয়ে আলাপ আসে তাহলে আমরা তো গণঅভ্যুত্থানের পরপর তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছিল যে, সংস্কার, বিচার এবং গণতান্ত্রিক রূপান্তর। বিচারের বিষয়ে আমি যতটুকু অবগত আছি, বিচারের অগ্রগতি হচ্ছে। আগামী ১৩ নভেম্বর একটা রায়ও হওয়ার কথা। এর প্রেক্ষিতে ফ্যাসিবাদী শক্তি ঢাকায় আবার লকডাউন ডেকেছে।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক রূপান্তরের ক্ষেত্রে আসলে ঘুরেফিরে একই জায়গায় আমরা চলে যাই কি না, এই যে আমরা গণতান্ত্রিক রূপান্তরের কথা বলি... সংসদে ৩০০ জন যাবেন। ৩০০ জনের মধ্যে একটা প্রশ্ন, এইখানে কয়জনের ২০ কোটি টাকা আছে, ২০ কোটি টাকা না থাকলে কেউ নির্বাচন করতে পারবে না। মানে বাংলাদেশের যে বর্তমান বাস্তবতা এই বাস্তবতায় অন্তত ১০-২০ কোটি টাকা না হলে কারো নির্বাচন করার মানে নেই। করতে পারবে, নমিনেশন কিনতে পারবে কিন্তু জামানত বাজেয়াপ্ত হবে আর কি।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, এই বাস্তবতায় আসলেই যাদের কাছে ওই কালো টাকা আছে তাদেরই সুযোগ আছে আজকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অথবা কাউকে যদি কেউ দেয়। আপনি আবার কারো থেকে টাকা নিয়ে নির্বাচন করবেন, নির্বাচিত হয়ে আসার পর আপনাকে তার স্বার্থ বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি বলেন, যদি আজকে কোনো ব্যবসায়ী থেকে বা যদি অন্য যে কারো থেকে আপনি টাকা নিয়ে ইলেকশন করেন তাহলে আপনাকে... সেজন্য আমাদেরও বারবার চিন্তা করতে হয় ইলেকশন করব নাকি করব না। করলে কিভাবে করব? মানুষ কি টাকা ছাড়া ভোট দেবে কি না বা যেই বিদ্যমান কাঠামো এই কাঠামোতে ইলেকশন করা আমাদের জন্য আসলে কতটুকু বাস্তবসম্মত।
আসিফ মাহমুদ আরো বলেন, অনেকে জোহরান মামদানির কথা বলেন, এটা এক্সেপশনাল কেস, এক্সেপশনাল কেস ৩০০ আসনে ঘটা সম্ভব না, এটা হয়তো এই ইলেকশনে দেখবেন দুই একজনের জন্য ঘটে যাচ্ছে। কিন্তু ৩০০ জনের জন্য আর ঘটবে না বা এই এক্সেপশনাল কেস দিয়ে আপনি সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিতে পারবেন না, সরকার গঠন করতে পারবেন না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশিদের সঞ্চালনায় এই গোলটেবিল বৈঠকে কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল লতিফ মাসুম, কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন, পুসাবের স্থায়ী কমিটির সদস্য ফাহমিদুর রহমান, অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট মোহাম্মদ সজল বক্তব্য দেন।