এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেছেন, বাংলাদেশে বিএনপির হাত ধরে বারবার গণতন্ত্র এসেছে। আর স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়ার দাবিদার দল আওয়ামী লীগের হাতে গণতন্ত্র হত্যা হয়েছে।
শনিবার রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্ম আয়োজিত ‘একটি কার্যকর বৈষম্যবিরোধী আইন প্রবর্তন’ নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ৭১ এর হাত ধরে দেশ যখন হাঁটি হাঁটি পা পা করে এগিয়ে যাচ্ছিলো। গণতন্ত্রের পথে হেঁটেছে। তখন স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী দলের দাবিদার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাতে গণতন্ত্র হত্যা হয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল ঘটনা সামরিক শাসনের হাত ধরে গণতন্ত্র উদ্ধার হয়েছে, বহুদলীয় গণতন্ত্র এসেছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এসেছে এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এসেছে।
তিনি বলেন, কেউ যদি একাত্তর বড়, না চব্বিশ বড়-এই প্রশ্ন তুলেন তাহলে সে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের অসম্মান করবে। যারা বলবে একাত্তর সব, চব্বিশ কিছু না তাহলে আবু সাঈদ, মুগ্ধ, আনাসের মতো ১৪০০ মানুষ ৩৬দিনে পাখির মতো গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন তাদের প্রতি অসম্মান করা হবে।
তিনি বলেন, ন্যায়ের আকাঙ্ক্ষা থেকে বৈষম্যবিরোধী আইন প্রবর্তনে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এটা একটি ভালো উদ্যোগ। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন দেশে ন্যায়ভিত্তিক সমতার আকাঙ্ক্ষা পূরণে সংবিধান প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। সেই সংবিধানের চোখে সবাই সমান। সংবিধানের আলোকে এই আইন প্রণয়নে কোনো বাধা নেই। বর্তমান সময়েই এটা সম্ভব।
মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আইনি সুরক্ষার অভাবে বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে দলিত, হরিজন, বেদে, চা শ্রমিক, প্রতিবন্ধী, আদিবাসী, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, হিজড়া ও রোহিঙ্গরা বঞ্চিত হন।
শিক্ষা লাভ, সরকারি পরিসেবা, স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপদ আবাসনের ক্ষেত্রে দলিত হরিজন, বেদে চা শ্রমিক,প্রতিবন্ধী, আদিবাসী পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও হিজড়ারা বঞ্চিত হয়। চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে দলিত, হরিজন, বেদে ও হিজড়ারা বৈষম্যের শিকার হন। কার্যকর বৈষম্যবিরোধী আইন প্রবর্তন হলে পিছিয়ে পড়া এসব জনগোষ্ঠীর এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সুরক্ষা প্রতিষ্ঠা হবে।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, প্রত্যেক অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সংগ্রামে ত্যাগ ও অর্থ ব্যয় করে তার দাবি আদায় করা হয়। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। গত সরকারের সময়ে সংসদে গেলেও শেষ পর্যায়ে এসে থেমে যায়। এরপর আর অগ্রসর হয়নি।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনষ্ঠানে বার কাউন্সিলের সভাপতি ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক কাফি রতন ও এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ বক্তব্য রাখেন।