সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৫, ০৮:৫৮:০০

কী করতে হবে জমির খতিয়ানে ভুল হলে? তাহলে জানুন

কী করতে হবে জমির খতিয়ানে ভুল হলে? তাহলে জানুন

জমির খতিয়ানে ভুল পাওয়া অনেকটাই স্বাভাবিক। কখনও নামের বানানে ভুল, কখনও দাগ নম্বর বা অংশ লেখার ভুল, আবার কখনও দেখা যায় জমির খতিয়ান অন্য কেউ নিজের নামে করে নিয়েছে। এমনকি অনেক সময় খতিয়ানের মূল কপিও হারিয়ে যায়। এসব সমস্যার আইনি সমাধান থাকলেও, তা অনেকের কাছে জটিল ও সময়সাপেক্ষ মনে হয়।

২০২১ সালের ২৯ জুলাই ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত গেজেট (রেকর্ড সংশোধন পরিপত্র নং ৩৪৩)-এ বলা হয়, খতিয়ানে ভুল থাকলে সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর কাছে ‘মিস কেস’ আবেদন করে সংশোধন করা যাবে। এজন্য সাধারণ সাদা কাগজে আবেদন লিখে ২০ টাকার কোর্ট ফি দিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হয়।

যদি কেউ প্রতারণা করে অন্যের নামে থাকা জমি নিজের নামে করে নেয়, সেক্ষেত্রেও এসিল্যান্ড বরাবর ‘মিস কেস’ দিয়ে বাতিলের আবেদন করা যায়। শুনানি ও যাচাই শেষে আগের মালিকের নামে খতিয়ান ফিরিয়ে দেওয়ার আইনি সুযোগ রয়েছে।

যদি খারিজ খতিয়ানের মূল কপি হারিয়ে যায়, থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে তার কপি ও ২০ টাকার কোর্ট ফি দিয়ে এসিল্যান্ড অফিসে আবেদন করলে, প্রমাণ পাওয়া গেলে নতুন খতিয়ানের আদেশ দেওয়া হয়। এরপর মাত্র ১০০ টাকা ফি দিয়ে নতুন খতিয়ান সংগ্রহ করা যায়, যার রশিদ দেওয়া হয় ডিসিআর নামে।

নামজারি ছাড়া অন্য জরিপের খতিয়ান যেমন S.A., C.S., R.S., B.S. ইত্যাদি হারিয়ে গেলে, মৌজা নম্বর ও খতিয়ান নম্বর উল্লেখ করে জেলা প্রশাসকের রেকর্ড রুমে আবেদন করলেই তা সংগ্রহ করা সম্ভব।

নামজারি সংশোধনের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ায় সাধারণত ৩০-৪৫ দিন সময় লাগে। আবেদন পাওয়ার পর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে প্রতিবেদন চাওয়া হয়, পরে প্রতিবেদন এলে সংশ্লিষ্ট পক্ষকে শুনানিতে ডাকা হয়। কোনো আপত্তি না থাকলে সংশোধিত খতিয়ান হস্তান্তর করা হয়।

আইনি দিক থেকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ১৯৫০ সালের State Acquisition and Tenancy Act-এর ১৪৩ ধারা এবং ১৯৫৫ সালের প্রজাস্বত্ব বিধিমালা-এর ২৩(৩) ধারা অনুযায়ী করণিক ভুল (যেমন নাম, অংশ, দাগ) সংশোধন করতে পারেন। তবে জালিয়াতির মাধ্যমে ঘটলে ২৩(৪) ধারা অনুযায়ী তদন্ত ও শুনানির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বাস্তবে যদিও অনেক সময় সংশ্লিষ্ট অফিসে অনীহা দেখা যায়, অনেককে আদালতের দ্বারস্থ হতে বলা হয়, ফলে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হন।

ভুক্তভোগীদের দাবি, যেহেতু সরকার একটি সহজ পদ্ধতির গেজেট প্রকাশ করেছে, তা যেন মাঠ পর্যায়ে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হয়। যাতে জনগণ আর ভূমি অফিসে গিয়ে বারবার হয়রানির শিকার না হন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে