এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বাংলাদেশে আজ বৃহস্পতিবারও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে এ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৬। বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডে অনুভূত হওয়া এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর ঘোড়াশালে।
এদিকে, ভূমিকম্পের বড় কম্পন থেমে গেলেও ঝুঁকি পুরোপুরি কাটে না। ভূ-পৃষ্ঠের নিচে জমে থাকা চাপ তৎক্ষণাৎ স্থিতিশীল না হওয়ায় মূল ভূমিকম্পের পর যে ছোট ছোট কম্পন অনুভূত হয়, সেগোকেই ‘আফটারশক’ বলা হয়। ভূতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি মূল ভূমিকম্পেরই ধারাবাহিক ক্ষুদ্র প্রতিক্রিয়া।
বিশেষজ্ঞরা জানান, মূল ভূমিকম্পে ভূগর্ভে সৃষ্ট ফাটল একবারে পুরোপুরি স্থির হয় না। ফাটলের ধার দিয়ে আরও ছোট শক্তির নির্গমন ঘটে, যার ফলেই রিখটার স্কেলে কম মাত্রার এসব কম্পন ধরা পড়ে। অনেক সময় আফটারশক কয়েক মিনিট পরেই দেখা দেয়, আবার কখনো কয়েক ঘণ্টা বা কয়েক দিন পরও হতে পারে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে আফটারশক কয়েক সপ্তাহ, এমনকি কয়েক মাস বা বছর ধরেও চলতে পারে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এদের মাত্রা ও ঘনত্ব কমে আসে। আফটারশকের সংখ্যা নির্দিষ্ট নয়—একবার থেকে শুরু করে শতবার কিংবা হাজারবারও হতে পারে।
ভূমিকম্পের মাত্রা, ভূগর্ভের চাপ ও স্থলভাগের গঠন—এসবের ওপর নির্ভর করে আফটারশকের তীব্রতা ও স্থায়িত্ব। বড় ভূমিকম্পের পর অধিক সংখ্যক ও দীর্ঘস্থায়ী আফটারশক হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেন, ভূমিকম্পের পর সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সময় হলো প্রথম ৭২ ঘণ্টা। এ সময়ই অধিকাংশ আফটারশক ঘটে। তাই এই সময়ে খোলা জায়গায় থাকার পরামর্শ দেওয়া হয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ না করতে বলা হয়। দুর্বল ভবনগুলো ছোট আফটারশকেও ধসে পড়তে পারে, যা বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
অতএব, বড় কম্পন থেমে গেলেও সতর্কতা শেষ হয় না। বরং আফটারশকই তৈরি করে পরবর্তী ঝুঁকির প্রধান অংশ। বিশেষজ্ঞদের মতে, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভূমিকম্প-পরবর্তী সময়েই সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
ভূমিকম্প আগাম নির্ভুলভাবে পূর্বাভাস দেওয়া এখনো বিজ্ঞানীদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। অদূর ভবিষ্যতেও এটি সম্ভব হবে—এমন আশা খুব কমই রয়েছে। দীর্ঘ গবেষণা ও নানা পদ্ধতির প্রয়োগ সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত কোনও নির্ভুল ভূমিকম্প পূর্বাভাস পদ্ধতি উদ্ভাবিত হয়নি।