এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : যশোরে অতি ফর্সা রঙের জন্য জন্মের পর থেকেই অস্বীকার করে শিশু আফিয়াকে ফেলে যান বাবা মোজাফফর হোসেন। সংবাদমাধ্যমে শিশুটির দুর্গতির সংবাদ প্রকাশ হলে পাশে দাঁড়ান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। শিশু আফিয়ার জন্য তার দেওয়া বিশেষ উপহার নতুন ঘরের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে ঘর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জারুল হক খোকন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অন্যান্য নেতারা।
তারা জানান, তারেক রহমান আফিয়ার দুর্দশার খবর জানতে পেরে তাকে একটি স্থায়ী আশ্রয় দেওয়ার জন্য স্থানীয় নেতাদের নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আজ থেকে ঘরের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। নির্মিত ঘরে একটি শয়নকক্ষ, একটি রান্নাঘর এবং একটি বাথরুম থাকবে, যা আফিয়াকে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে সহায়তা করবে।
আফিয়ার মা মনিরা খাতুন বলেন, মেয়ের থাকার স্থান ছিল না। গণমাধ্যমে আমাদের দুর্দশার খবর প্রকাশিত হয়। এরপর অমিত ভাই আমাদের বাসায় এসে দেখেছেন এবং প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঘরের ব্যবস্থা শুরু করেছেন। আমি খুব খুশি, এখন আমরা নিরাপদভাবে ঘরে থাকতে পারব।
সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জারুল হক খোকন বলেন, জমিসংক্রান্ত কিছু জটিলতা থাকার কারণে কাজ শুরু হতে কিছুটা সময় লেগেছে, তবে আজ থেকে ঘরের কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া আফিয়ার লেখাপড়ার দায়িত্বও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, যশোরের তিন বছরের শিশু আফিয়া—সাদা-চন্দনের মতো অতি ফর্সা রঙের জন্যই যাকে জন্মের পর থেকেই অস্বীকার করে এসেছেন তার বাবা মোজাফফর হোসেন। উঠোনজুড়ে দৌড়ে বেড়ানো এই নিষ্পাপ শিশুটি জানেও না যে তার জন্মদাতা তাকে গ্রহণ না-করে চলে গিয়েছেন নিরুদ্দেশে। আর একমাত্র সন্তানকে বুকে আগলে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন মা মনিরা খাতুন। ২০২০ সালে যশোর সদর উপজেলার বাউলিয়া চাঁদপাড়া গ্রামের মোজাফফর হোসেনের সঙ্গে মনিরা খাতুনের বিয়ে হয় পারিবারিকভাবে। দুই বছর পর, ২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর জন্ম নেয় তাদের কন্যা আফিয়া। কিন্তু সন্তান জন্মের পরই শুরু হয় বিপত্তি। শিশুটির গায়ের রং অস্বাভাবিকভাবে ফর্সা হওয়ায় মোজাফফর দাবি করতে থাকেন— এ সন্তান তার নয়। মায়ের ভাষ্যমতে, জন্মের পর প্রথম দেখাতে শিশুটিকে একবারও কোলে নেননি তিনি। কিছুদিনের মধ্যেই স্ত্রী-সন্তানকে ফেলে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র বসবাস শুরু করেন এবং পরে বিদেশে চলে যান। আট মাস পর তালাক দিয়ে দেন মনিরাকে; প্রতিমাসে ১,৫০০ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও রাখেননি কখনও।