এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : গণঅভ্যুত্থান–পরবর্তী আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ‘নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ’ হিসেবে বর্ণনা করে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এই নির্বাচনকে সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের মাধ্যমে স্মরণীয় করে রাখতে হবে।
বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা থেকে সারাদেশের উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের (ইউএনও) সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে নির্বাচন প্রস্তুতি বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা অনলাইনে যুক্ত ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ইতিহাস আমাদের নতুন করে একটি সুযোগ দিয়েছে। অন্য জেনারেশন (প্রজন্ম) এই সুযোগ পাবে না। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে পারলে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারব, আর যদি না পারি তাহলে জাতি মুখ থুবড়ে পড়বে।
অতীতে হওয়া নির্বাচনগুলোর উদাহরণ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর আগেও আমরা নির্বাচন দেখেছি। বিগত আমলে যে নির্বাচনগুলো হয়েছে, যেকোনো সুস্থ মানুষ বলবে—এটা নির্বাচন নয়, প্রতারণা হয়েছে।
ইউএনওদের তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে আগামী নির্বাচন কেবল একটি প্রশাসনিক দায়িত্ব নয়, বরং একটি ঐতিহাসিক দায়িত্ব। তিনি বলেন, আমরা যদি ভালোভাবে এই দায়িত্বটি পালন করতে পারি, তাহলে আগামী নির্বাচনের দিনটি জনগণের জন্যও ঐতিহাসিক হবে।
তিনি আরও বলেন, আপনারা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন তাহলেই সরকার তার দায়িত্বটি সফলভাবে পালন করতে সক্ষম হবে।
আগামী নির্বাচন ও গণভোট দুটিকেই দেশের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচন আগামী পাঁচ বছরের জন্য, আর গণভোট শত বছরের জন্য।
গণভোটের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে রাষ্ট্র ব্যবস্থার রূপরেখা পাল্টে দেওয়ার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে তিনি ভোটারদের সচেতন করার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ভোটারদের বোঝাতে হবে যে আপনারা মন ঠিক করে আসুন—হ্যাঁ-তে দেবেন নাকি না-তে ভোট দেবেন—মন ঠিক করে আসুন।
নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউএনওদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনাদের প্রধান দায়িত্ব হলো একটি শান্তিপূর্ণ ও আনন্দমুখর নির্বাচন আয়োজন করা। তাদের প্রধান কাজ হলো একটি শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজন করা।
তিনি সবাইকে নির্বাচনের আগেই প্রতিটি পোলিং স্টেশন পরিদর্শন, সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় এবং সব ধরনের প্রস্তুতি মূল্যায়নের নির্দেশ দেন।
অপতথ্য ও গুজব প্রতিরোধ, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সৃজনশীলতা এবং নারী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা কর্মকর্তাদের ধাত্রীর সঙ্গে তুলনা করে বলেন, ধাত্রী ভালো হলে জন্ম নেওয়া শিশুও ভালো হয়।
শিগগিরই নির্বাচন তফসিল ঘোষণা হবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস বলেন, নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত কখন, কীভাবে, কোন কাজটি করবেন—তার পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি এখন থেকেই নিন।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ, প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম এবং জনপ্রশাসন সচিব মো. এহছানুল হকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।